সাহিত্য

কৃষকের বৈশাখ!

কৃষকের বৈশাখ!

মাঘ, ফাল্গুন, চৈত্র গেল,

এলো রে বৈশাখ,

ছেলে আমার নিখোঁজ ক’মাস

বুকটা পুড়ে খাঁক।

বোশেখ এলে খুশীর জোয়ার

শহর নগরীতে,

আঁধার কুটীর রইলো আঁধার

কার কি করার তাতে!

আমার কৃষক পান্তা খাবে

ইলিশখানা কই !

ইলিশ গেল নাইয়র নিয়ে

শহরে হইচই ।

ছেলের খোঁজে কৃষক দবির

এলো সাধের ঢাকা,

বোশেখ মেলায় মানুষের ঢল

নেই তো কোথাও ফাঁকা।

বিশাল মেলায় বিশাল মানুষ

গা ছমছম করে,

ছেলের খোঁজে দবির মিয়ার

দুচোখে অস্রু ঝরে।

রঙ বে রঙের মানুষ গুলান

রাস্তার ধারে ধারে,

পান্তা-ইলিস খাচ্ছে দেখ

আনন্দ, আবদারে।

ক্ষুধার জ্বালায় দবির মিয়া

হাত বাড়িয়ে ঠায়,

বলে, “এক সানকি পান্তা দিবা

ক্ষুধায় যে প্রাণ যায়”।

কেউ দেখেনা কেউ শুনেনা

দবির মিয়ার কথা,

গাছ তলাতে বসে থাকে

বক্ষে নিয়ে ব্যাথা ।

মনে পড়ে যায় বোশেখ মেলা

পূর্ব দীঘির ঘাট,

মুড়ি , মুড়কি , বাতাসা, মিঠাই

কদম তলার হাট ।

খই, নাড়ু, আর পিঠার ঘ্রাণে

ঘর বাড়ী মৌ মৌ,

পালকি চড়ে নাইয়র যেত

টুকটুকে লাল বউ।

পান্তা খেয়েও শান্তি ছিল

ছোট্ট মাটির ঘরে,

বুকের ধন হারিয়ে পাগল

কেউনা চাহে ফিরে।

যুবক ছেলে হারিয়ে বাবার

বুকটা পুড়ে খাঁক,

দুঃখ, তাপে, কষ্টে কাটে

কৃষকের বৈশাখ!


আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)