
কাঁচের গ্লাস ঘেরা শো রুমে যেমন জামা কাপড় প্রদর্শন হয়, ঠিক তেমনই কিছু দেহ পসারনি তাদের দেহ প্রদর্শন করছে, বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করছে, আর রাস্তার পুরুষরা কাঁচের দেওয়ালের সামনে এবং আশেপাশে ভিড় জমাচ্ছে। কথা বলছে, বার বনিতাদের দিকে মুগ্ধ হয়ে চেয়ে আছে। কারো ইচ্ছা হলেই পাবে যেয়ে দৈহিক চাহিদাও মিটিয়ে আসছে। ফ্রান্সে চিত্রায়িত হওয়া একটি মুভির একটি দৃশ্যের কথা বলছিলাম।
দোকানে যখন কাঁচের জানালায় নারী পোশাকের বদলে খোদ নারীই প্রদর্শিত করা যায়, প্রকাশ্য দিবালোকে, কিংবা গোধূলির আঁধারে, তখন এটা বলাই বাহুল্য যে নারী পণ্য হয়ে গেছে।
এতো গেলো পশ্চিমা অতি সভ্য দেশে নারীর মূল্যায়ন। সেখানে নৈতিকতার জন্য বিভিন্ন আন্দোলন ও গড়ে তোলা হয়েছে- যেমন chastity movement .এর মানে হল একজন পার্টনারের সাথেই দৈহিক সম্পর্ক করা।
খাওয়া যেমন মানুষের মৌলিক চাহিদা, ঠিক তেমনি দৈহিক চাহিদাও মানুষের এমনই একটি চাহিদা। কিন্তু খাবারের পরিমাণ কিংবা ধরণ যেমন আমরা বুদ্ধি দিয়ে ঠিক করে নিতে পারি, ঠিক তেমনি এই চাহিদাকেও নৈতিকতা আর মানসিক বিপ্লব দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। তার জন্য নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি জীবন সঙ্গী বেছে নেওয়ার সময় সীমা ও সহনশীল করা উচিৎ।
কারণ, আমরা জানি বিয়ে করলেই অর্ধেক দ্বীন পূর্ণ হয়ে যায়। যদিও ছেলেরা বহুগামি মানসিকতার, তথাপি নৈতিকতা রক্ষার নিমিত্তে বিয়ে করলে তখন সমাজ বাস্তবতা কিংবা মনবৃত্তিক আবেগের কারণে স্ত্রীকেই ভালোবাসে। এবং সংসারের দ্বায় দায়িত্বে আর জীবনের সত্যিকার ধারায় চলে আসার পর অনেক রমণীকে নিয়ে ভাবার খুব একটা সুযোগ থাকে ও না। সুতরাং, বিয়ে নৈতিকতার একটি সেইফ গার্ড।
আমাদের দেশে খুব সম্প্রতি ধ... প্রকাশ্য রাস্তায় নারীর বস্ত্রহরণের মতো ঘটনা ঘটেছে। এখানে এটা একটা বড় কারণ অবশ্যই হতে পারে যে- এই সমাজে বিয়ে অনেক কঠিন, যা মানুষের মৌলিক চাহিদাকে বাঁধা গ্রস্থ করে। আবার ফ্রান্সের মতো কাঁচের জানালায় প্রদর্শন করা বার বনিতারাও তো নেই, যে মানুষ খুব সহজেই চাহিদা মিটিয়ে আসবে! কিংবা সেই রুচিও অনেকেরই হবে না। এর মানে এই না যে , আমি এমন করে দিতে বলছি! শুধু বাস্তবতা তুলে ধরছি। আবার বৈধভাবে চাহিদা নিবারণ করার জন্য বিয়ে করতে করতেও সেই ৩২ বছর। এর আগে কী ছেলে বখে গেলো কিনা তা জানাটা পরিবারের জন্য নিতান্তই অযৌক্তিক কাজ।
তাহলে বলবেন- সারাদিন বিয়ে বিয়ে করলেই সমাধান হয়ে যাবে নাকি? ক্যারিয়ার গড়তে হবে না?
জী! আপনাদের ক্যারিয়ার কী নবী (সা.) এর চেয়েও মহান কিংবা বর্ণাঢ্য হবে? আর একটা মানুষ নৈতিকতা আর বাদ বাকি সামাজিক ব্যক্তিগত কাজ নিয়ে ২৫ বছর পর্যন্ত একা একা আছে, শুদ্ধতা বজায় রেখে তাই তো অনেক বেশী এই সমাজে! এরপরেও আরও ধৈর্যের পরীক্ষা নিতে চাইলে সেই ছেলেটাই যদি কোন মেয়ের শাড়ির আঁচল ধরে টান দেয়, দ্বায় কি সমাজের একটুও থাকে না?
রীতিমতো প্রেম করা এক পরিচিত কাপলকে বুঝাচ্ছিলাম, বিয়ে করে ফেলতে। দুজনই দুজনের পারিবারিক সামাজিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলছিল- আমরা এটা মানি, কিন্তু আমরা একা তো আর সমাজ বদলাতে পারবো না! তবে মানুষকে বোঝানো যায়। আর আমার বাবা যদি বলে তাহলে এমন ১০ টা প্রেমিক ছাড়তে পারবো!
তাহলে কেন এই অযথা মনের দেওয়া নেওয়া? শুধুই সময় অতিক্রম করা, আর ফুর্তি করাই তাহলে আজকালকের প্রেম ভালোবাসার গন্তব্য?
অগনিত ধ...ের ঘটনা আর বস্ত্রহরণের বীভৎস উল্লাসের পরেও যারা প্রকৃত কারণ বুঝতে পারছেন না, পারছেন না সমাজের কথিত ধারার বাহিরে আসতে , তাদের দিয়ে আর যাই হোক নৈতিক সমাজ গঠন অসম্ভব।
আর এমন সমাজে পথে ঘাটে আপনি আমি কিংবা আপনার মা বোন লাঞ্ছিত হলে ও কিছুই করার থাকবে না। কারণ আমরাই এমন সমাজকে ওয়েলকাম জানিয়েছি। ক্যারিয়ার আর বস্তুবাদিতা আমাদের কাছে নৈতিকতার চেয়েও অনেক বড় কিনা
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)