পরিবার ও আমি (বিয়ে ,দাম্পত্য,শিশু লালন পালন )

আমার ডিভাইস ভাবনা

আমার ডিভাইস ভাবনা

                     আমার ডিভাইস ভাবনা

 

বাচ্চাদের আর কত এটা কোরো না ওটা কোরো না বলবো!! আর নিজেদের উপরই বা আর কত দায়ীত্বের বোঝা নিবো আর পদে পদে নালায়েক প্রমান করবো যে আমি ভালো বাবা মা না!
৯০' এর দশকে আমরা গল্পের বই পুরা নিষিদ্ধ বইয়ের মতো পড়তাম।বইয়ের ভিতর লুকায় বা মা বাইরে গেলে।পাগলের মতো টিফিনের পয়সা জমিয়ে তিন গোয়েন্দা কিনতাম আর বড়লোকি বই মাঝে মাঝে কিনতে পারতাম যেটা রিডার্স ডাইজেস্ট নাম ছিলো তা।সেখানেও মায়ের চোখ রাঙানী।গল্পের বই পচা খারাপ মেয়েরা পড়ে।যারা উড়নচণ্ডী লেখাপড়ায় ভালো না তারা। আর এখন এই গল্পের বই পড়ানোর জন্য রীতিমতো যুদ্ধ করা লাগে অথচ আমরা যখন বই পড়ার জন্য যুদ্ধ করতাম তখন সেটা ভালো কাজ ছিলোনা।বাবা মায়েরা তখন খবরের কাগজ ম্যাগাজিন বিচিত্রা টাইপ পড়া পড়তেন অথচ আমরা পড়তে পারবো না।আমার মনে পড়ে আমি লিগ্যালি প্রকাশ্যে বই পড়ার পার্মিশন পাই আমার এস এস সি এর পরে।আমি ওপেনলি বই পড়তাম তখন।।

এরপর এলো ডিস এন্টেনার যুগ।কোনো ভাবেই এই জিনিস ঘরে আনা যাবে না জাত যাবে।ঘরের ছেলে মেয়েরা নষ্ট হয়ে যাবে।আমাদের বাসায় আমার বাবা আর আমরা একরকম যুদ্ধ করে আম্মাকে ভুগিচুগি বুঝায় যে নিউজ চ্যানেল দেখা যাবে খেলা গুলো আরামে দেখা যাবে এই বলে কানেকশন নেই।নষ্ট যারা হওয়ার হয়েছে আর যারা বেচে যাওয়ার তারা বেচে গেছে আলহামদুলিল্লাহ। বাবা মায়েরা কিন্তু টিভি তে তখন নির্দিষ্ট কিছু প্রোগ্রাম দেখতেনই।এখন আমাদের টিভি কেউ দেখে না দিনের পর দিন ঘরে টিভি অন হয়না।অথচ এখন কিছু ডাক্তার বলেন বাচ্চা কে কিছু সময় টিভি দেখানোই ভালো মোবাইল বা অন্যান্য ডিভাইস থেকে কারন টিভির উপর কন্ট্রোল আছে যা অইগুলোর উপরে নেই।

এখন আমরা বাবা মায়েরা সারাদিন কাজে অকাজে মোবাইলে থাকি অথচ বাচ্চাদের অনলাইন থেকে দূরে রাখতে হবে বই পড়াতে হবে টিভি দেখাতে হবে!! আমরা অফিস করি অনলাইনে ডিভাইসে,খবর দেখি তাতে, আত্মীয়তা রক্ষা করি ফোনে, লেনদেন করি ফোনে বিভিন্ন কোর্স করি ফোনে ভোরে নামাজের এলার্ম দেই ফোনে।তাহলে ফোন থেকে কিভাবে দুরে থাকবো!! ঘড়িতে এলার্ম দেয়ার পর সেটা বন্ধ করে আর কিছু করার নাই কিন্তু ফোনের এলার্ম বন্ধ করে নোটিফিকেশন গুলো একটু চেক করে নেই।

আসলে শুধু প্যারেন্টিং কোর্স আর লেকচার শুনে নিজের বাচ্চাদের উপর বুল্ড্রোজার আর নিজের উপর ব্যার্থতার তকমা লাগানোর আগে আমরা যদি একটু ব্যালেন্স করি আর প্রত্যেকটা সময় কে পজিটিভলি মেনে নেই তাতে আমার মনে হয় ব্যাপার গুলি অনেক সহজ হয়ে যায়।যারা নষ্ট হওয়ার তারা চিঠি লিখার যুগেও নষ্ট হয়ে গেছে আর ভালো কিছু এ যুগেও হয় আলহামদুলিল্লাহ। সময়কে গালি দিতে হয় না।সময় ব্লেসিংস।

আমি এই অনলাইনে আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় কাটিয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। এখানে আমি এমন মানুষ খুজে পেয়েছি যাদের ধারে কাছে আমি অফলাইনে হয়তো যেতে পারতাম না।এমন ডিভাইন সোল পেয়েছি যা আমি এতগুলো বছরে পাইনি।আমাকে নতুন দিশা দেখিয়েছে অনলাইন আলহামদুলিল্লাহ। অনেক বোন, টিচার, মেন্টর আর বন্ধু পেয়েছি।আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ আমার জন্য সহজ করেছেন এই পথ।কিন্তু অনেক নেগেটিভ ইস্যুও আছে।

বাচ্চাদের ভিতরে আসলে একটু কনফিডেন্স, আস্থা আর ভরসা ঢুকিয়ে দিতে পারলে আমার মনে হয় ব্যাপার গুলি সহজ হয় তাদের জন্য চুজ করতে।প্রায়োরিটি সেট করতে।আমাদের একটা সাধারণ জিনিস আমাদের মা আমাদের সব ভাই বোন দের মধ্যে দিয়ে দিছিলেন যে মায়ের কাছে কিচ্ছু লুকাতে হয় না।সব বলতে হয় যা কিছু হয় সব।আমি তাই করতাম প্রয়োজনীয় অপ্রয়োজনীয় সব আম্মাকে বলতাম।নয়তো মনে হতো আমি বলার আগে আম্মা জানলে হয়তো রাগ করবেন বা আমাকে আর আদর করবেন না।এই বোধ থেকে অই কাজ করতাম না যা আম্মাকে বলা যাবে না।
এই টুক আমাকে অনেক কিছু থেকে রক্ষা করেছিলো আলহামদুলিল্লাহ।

তাই অন্য সবার মতো আমি ঢালাও ভাবে অনলাইন ডিভাইস সময় এগুলোকে তেমন ভাবে দোষারোপ না করে বরং ব্যালেন্স করতে শিখি।ব্যালেন্স করে ব্যাবহার করতে শিখি।শিখানোর চেস্টা করি।এই বাচ্চারাও হয়তো একদিন এগুলো দিয়েই ভালো কিছু করে ফেলবে স্বপ্ন দেখি।আমি স্বপ্ন দেখা মানুষ। সবকিছুতেই আশাবাদী। জোড়াজুড়ি তে শুধু তিতাই হয় সবকিছু।

 

ফারজানা হোসেন রুপা

২২.১.২৪

 

 


আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ
আমার ডিভাইস ভাবনা

আমার ডিভাইস ভাবনা

২২ জানুয়ারী ২০২৪

হৃদয়ে রক্তক্ষরণ

হৃদয়ে রক্তক্ষরণ

২৮ ডিসেম্বার ২০২৩

আমার বাচ্চা খায় না!!????

আমার বাচ্চা খায় না!!????

২৪ ডিসেম্বার ২০২৩

আক্রমনাত্মক দাওয়াহ!!!

আক্রমনাত্মক দাওয়াহ!!!

১৩ ডিসেম্বার ২০২৩

লেখকের অন্যান্য ব্লগ সবগুলো দেখুন
হৃদয়ে রক্তক্ষরণ

হৃদয়ে রক্তক্ষরণ

২৮ ডিসেম্বার ২০২৩

আমার বাচ্চা খায় না!!????

আমার বাচ্চা খায় না!!????

২৪ ডিসেম্বার ২০২৩

আক্রমনাত্মক দাওয়াহ!!!

আক্রমনাত্মক দাওয়াহ!!!

১৩ ডিসেম্বার ২০২৩

সরল স্বীকারোক্তি

সরল স্বীকারোক্তি

৬ ডিসেম্বার ২০২৩