সাহিত্য

প্রিয় অমৃত

প্রিয় অমৃত
  প্রিয় অমৃত , তোমাকে কেমন ভালবাসতাম তা তুমি কখনো বুঝলেনা। তুমি স্মার্ট , অনেক বড় বড় ডিগ্রীধারী বলেই যে তোমাকে ভালবাসতাম তা কিন্তু নয়। তোমাকে ভালবেসেছিলাম আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা দেখে। ডিগ্রী তো আমার ও খারাপ ছিলোনা, ঢাবির বি বি এ ডিগ্রী কদিন পড়েই আমার নামের পাশে ঝুলবে। কিন্তু ওসব বৈষয়িক জিনিষের বাহিরেও একটা জিনিষ আছে। যার নাম হৃদয়। কিন্তু, তুমি যে আমাকে পুতুল ভেবেছিলে তা বুঝতে পেরেছিলাম সেদিন যেদিন তুমি আমাকে হিজাব খুলে বারে যেয়ে নাচতে বাধ্য করেছিলে। পুতুলের মতো যখন যেভাবে খুশি আমাকে নিয়ে খেলছ। আমি কিছু বলিনি। ভালোবাসার মোহে ছিলাম অন্ধ। কিন্তু সেই ভালোবাসার কি দাম দিলে তুমি? আমাকে বিয়ে তুমি করতে চাওনি। আমি এক প্রকার জোর করেই তোমাকে রাজি করালাম। এরপর বিয়ের পর আমাকে বাবার বাড়ি ফিরানি দিতেও জাওনি। তাও মানলাম। পরীক্ষা ছিল বলে হানিমুনে গেলাম না আমরা। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর তুমি আমার সামনে বসে কল করলে বন্ধুদের। কক্সবাজার যাবে। আমার মন খুশিতে নেচে উঠলো। কিন্তু, একি! তুমি আমাকে রেখে তোমার বন্ধু বান্ধুবি কে নিয়ে কক্সবাজার গেলে। এরপর অনেকদিন পড়ে ফিরে এসে যখন দেখলে আমার মন খারাপ, উল্টা নিজে রাগ করে বসে রইলে। আমি রাগ ভাঙ্গালাম। ফ্যান্টাসি নিয়ে যেতে বললাম। সারাদিন আমার সাথে ঘুরার পর তুমি বললে- তোমাকে না নিয়ে এসে ভাগ্না ভাগ্নিদের আনলেও মজা হতো, আমার দিনটাই মাটি। অমৃত, আমি তো তোমার সহধর্মিণী। আমাকে দেখলেই তোমার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। আমি অসুস্থ, ডেঙ্গু জ্বরে কাতরাচ্ছি মায়ের বাড়ি। শুধু তোমাকেই দেখতে ইচ্ছে করছে। একবার আসবে?প্লিয? নাহ! তোমাকে আর কল দিবনা। তুমি তোমার বন্ধু বান্ধুবিদের নিয়ে ব্যস্ত। এ কথা ডাইরিতেই থাক পড়ে, গোপনে। সকাল ৭ টার ভার্সিটির বাসটা অনেক কষ্টে ঘুমাতুর চোখে ধরেছি। উঠে দেখি প্রায় সব সিট ই ফাঁকা। একটায় আয়েস করে বসতেই সিটের কোনায় ছোট নোট বুকটা চোখে পড়লো। ভাবলাম, কার জিনিষ জানি ফেলে গেছে। দেখি! পেলে দিয়ে দিবো। এরপর খুলে এটা পড়ে দেখলাম। খারাপ লাগছে মেয়েটার জন্য। ডাইরিটা বাসে রেখে এসেছি। যার জিনিষ সে নিশ্চয়ই খুঁজছে! আসলে , ছেলেরা এমন কেন হয়? খুব খারাপ লাগে এসব দেখলে। নিজের বউয়ের সাথে ও মানুষ এমন আচরণ করতে পারে? একটা মেয়ে কতো কিছু ছেঁড়ে একজনের ঘরে যায়, কতো অনিশ্চয়তা নিয়ে। তার প্রতি কোন আন্তরিকতা তো নেই ই, শুধু অবহেলা। এই জন্যই বলি- ধনী কি দরিদ্র কি, কি বা মধ্যবর্তী জন, পুরুষ নয়কো কারো বিশ্বাস ভাজন। ভুলো না ভুলো না বোন, এদের কথায়, নিজ স্বার্থ হেতু এরা অবলা মজায়। পিতা ভ্রাতা স্বামী পুত্র এক শ্রেণী সব গুরু শিষ্য শিক্ষাদাতা সুহৃদ বান্ধব তবে সবাইকে এক পাল্লায় মাপা ও বোধ হয় ঠিক না। তবে জীবন সঙ্গীর মাঝে যখন সঠিক আদর্শের অভাব থাকে, তখন ই মনেহয় মেয়েটা তার অমূল্য ভালোবাসা অপাত্রে দান করে ফেলে। আর সে সেই ভালোবাসার মূল্য তো দিতেই পারেনা, বরং সঙ্গীকে অযাচিত কষ্টই দিয়ে যায়।

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)