সাহিত্য

নেতা কুকুর জাতভাই

নেতা কুকুর জাতভাই
  -এই আব্বু ! আমাকে একটু স্কুলে দিয়ে আসবে? পিচ্চি সাইফ আবদারের সুরে বলে বাবাকে।  বাবা পেপার পড়ায় মগ্ন। ছেলের দিকে তাকালেই সে আবদারের সুরে বলবে তাকে দিয়ে আসতে তাই পাত্তা দিচ্ছেন না খুব ।  -তোমার না স্কুল এতো কাছে। এই যে বারান্দা থেকে দেখা যায়। যাও। এখন একা একা যাও। নীচে গেলেই তুমি ১০১ টা বায়না করো। এভাবে শাসন করলে ছেলেকে দমিয়ে দেওয়া একটু সহজ বলেই ধারনা তার।  সাইফ মন খারাপ করে নীচে নামে।  কিন্তু একি! বাড়িওয়ালা নেতা মানুষ বলে এতদিন একটা কুকুর পালত। এখন দেখা যাচ্ছে ২ টা হয়ে গেলো। এটা অবশ্য মেয়ে। সিঁড়ি থেকে কুকুর দেখে আর নীচে নামলো না সাইফ। মেয়ে কুকুরটা পিচ্চি বাচ্চা সহ্য ই করতে পারে না। কখন কামড়ে দেয় তার কোন ঠিক নাই। মেয়ে কুকুরগুলো এমনই হয় মনে হয়। ফাজিল কুকুরগুলোর মধ্য থেকে মেয়ে কুকুর টা সাইফ কে দেখে ঘেউ করে সুর তুলল। সাইফ ভয়ে পড়িমরি করে দিলো এক দৌড়। নীচে থেকে ২ কুকুরের ঘেউ ঘেউ চলছেই। বাড়িওয়ালা নেতা মানুষ। শুনেও না শোনার ভান করছে হয়তো। তার মধ্যে একধরনের চাপা আনন্দ কাজ করে। ৭০ হাজার টাকা দিয়ে ২ টা কুকুর কিনে সেটা দিয়ে এলাকা এবং নিজের বাড়িতে পাবলিক সাইজ করার একটা অমানুষিক পাওনা তো আছেই। সাইফ কে ঘরে ফিরতে দেখে সাইফের বাবা অবাক। বেচারা কেঁদে কেটে অস্থির। আর বাবা ও কুকুর ভয় পায়। সো, সে ও অফিস ড্রেসে বসে রইলো। এদিকে সাইফের স্কুলের সময় ও চলে যাচ্ছে। সাইফের বাবার অফিসের টাইম ও গেলো গেলো। লোকাল কুকুর হলে কোন সমস্যা হতো না। কিন্তু, এই বিদেশী কুকুর ২ টা খুব শয়তান প্রকৃতির। এগুলোকে প্রশিক্ষণই দেওয়া হয়েছে ভালো মানুষদের কামড়ানোর জন্য। তাই , ভীতু প্রকৃতির মানুষ হিসেবে সাইফের বাবা ও নীচে যাওয়ার সাহস পান না। একটু পর পর সিঁড়ি থেকে উকি দিয়ে দেখেন , আর বাড়িওয়ালার নাম্বারে কল দেন। কিন্তু, সারারাত খেয়ে নিশ্চয়ই সকালে ফোন ধরার জন্য নেতা বসে নেই। আর জাগলে ও ফোন ধরার কোন কারন নেই। ক্ষমতার সুখ এটাই। কাউকে জবাব দিতে হয়না। বাড়িওয়ালার বাসায় কেউ ফোন ধরে না। বেল টিপলেও দরজা খুলে না। মাঝে মাঝে সবই পরিকল্পিত মনে হয় তার। অগত্যা তিনি বের হন। কিন্তু সাইফ কিছুতেই যেতে রাজি হয় না। তার নিজের একটা জানের ভয় আছে। সে কুকুর অনেক বেশী ভয় পায়। আর কিছুতেই তার পক্ষে এই কুকুর ডিঙ্গিয়ে স্কুলে যাওয়া সম্ভব না। সাইফের অবস্থা দেখে বাবা তাকে বাসায় ই থাকতে বলে। সাইফ ও আর নড়ে না। বারান্দায় ঠায় দাড়িয়ে স্কুলের দিকে তাকিয়ে থাকে। হটাত রাস্তায় চোখ পড়তে ও দেখে, নেতা এক চা দোকানে বসে আছে। আর কুকুরগুলো নেতার পেটের কাপড় তুলে পেট চাটছে। লালা দিয়ে মুখ ভরিয়ে দিচ্ছে। নেতা ও খুব খুশী কুত্তার আদর পেয়ে। একটু পর সাইফের হেলুসিনেশন হতে থাকে। হটাত ওর মনে হতে থাকে- ওখানে ২ টা নয়, ৩ টা কুকুর বসে আছে। মাঝের জন হোঁৎকা মোটা বিশাল একটা পেটের অধিকারী............

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)