নোটিশ বোর্ড

মাকে নিয়ে লেখা আহবান

মাকে নিয়ে লেখা আহবান
আদম এবং হাওয়া ছাড়া পৃথিবীর সকল মানুষের জন্ম হয়েছে, হচ্ছে একজন মহিলার অন্ধকার গর্ভ থেকে। কেমন ছিলো সে সময়টা? নিকষ অন্ধকারে একলা একটি কোষ তার যাত্রা শুরু করেছিলো। এক থেকে দুই, দুই থেকে চার, চার থেকে আট, আস্তে আস্তে তাতে আকৃতি এলো। ঠিক জায়গামতো দু’টো চোখ তৈরী হল, হাতের জায়গায় হাত, পায়ের জায়গায় পা, আর বুকের মধ্যে ধুকপুক করতে থাকা হৃদপিন্ড। যেন অদৃশ্য মালিক তাঁর শ্রেষ্ঠ কারুশিল্পটি তৈরি করছেন, পরম মমতায়। আর গর্ভধারিণী তখন কোথায়? কি করছেন? মানুষের বৈশিষ্ট্যই এই, যে কেউ তাকে কষ্ট দিলে সে কষ্ট ভুলতে তার সময় লাগে। শারীরিক মানসিক কিংবা দুই ধরণের কষ্টই যদি মানুষ কারুর থেকে পায়, পেতেই থাকে, তার প্রতি বিরূপ হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। সহ্য করতে না পেরে পালটা আক্রমণ করতেও ছাড়ে না অনেক সময়। ভাবুন দেখি, একজন মানুষ অন্য একজন মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে। সে মানুষটি সোজা হয়ে দাঁড়ানোর শক্তি পাচ্ছে না হয়ত, থেকে থেকে সারা শরীর গুলিয়ে উঠে তীব্র বমনেচ্ছা হচ্ছে। সহ্য করতে হচ্ছে লাথি, সহ্য করতে হচ্ছে কষ্ট পেয়ে বিচ্ছিরি হয়ে বদলে যাওয়া সুন্দর শরীর। আর মন? দিনরাত্রি চব্বিশ ঘন্টা অবিরাম কেবল একটাই ভাবনা, যে কষ্ট দিচ্ছে তাকে নিয়ে। চাইলেও এই ভাবনা থেকে বের হওয়ার উপায় জানা নেই তার। তাও এই কষ্ট এক দুইদিন না, আট নয় মাস ধরে এই বাড়তি বোঝাটিকে শরীরে মনে ধারণ করতে হয় তার। কি করবে এই কষ্ট পেতে থাকা মানুষটা? হাতে যখন পাবে, আচ্ছামত পিটিয়ে আধমরা করে দেয়া উচিত না? অথচ ঠিক উল্টাটা কাজটাই করে সে মানুষটা। হাতে এনে দেয়া হলে অপার্থিব হাসিতে মুখ ভরে তাকিয়ে থাকে, বোকার মত আদর করতে শুরু করে যেন সব কষ্ট ভুলে গেছে। ঠিক, এইই হল মা আর তার সন্তানের সম্পর্ক। পৃথিবীর আর কোন সম্পর্কের সাথে এর কোন তুলনা নেই। মজার ব্যপার আরেক জায়গায়। দীর্ঘ গর্ভধারণের এই সময়টিতে আমরা সবাই আমাদের মায়ের হৃদপিন্ড থেকে রক্ত নিই, মায়ের খাবারে ভাগ বসাই। সাথে সাথে মায়ের থেকে নিয়ে নিই আরও কিছু বৈশিষ্ট্য। ছোট্ট শিশু থাকতে টের পাবার উপায় নেই। বয়ঃসন্ধির সময় মেয়েটার কন্ঠে, মাঠ থেকে ঘর্মাক্ত হয়ে ফিরে বালকের ঘাড় মোছার ভঙ্গিতে, ব্যস্ত তরুণীর গিন্নিপনার কাজে, কোথায় যেন মায়ের ছায়া আপনিই বেরিয়ে আসে। বাবা ফোন করে চমকে ওঠেন, মেয়ের কন্ঠ কেন ওর মায়ের মত? ছোট্ট মেয়েটা দাদীর হাতে ভাত খেতে বসে চেঁচিয়ে ওঠে, তুমি বাবার মত ভাত মাখো দাদু! আপনার এমন গল্পটার অপেক্ষায় থাকবো আমরা। নিজের কোন কাজে মা’কে খুঁজে পান? কোন ভাবনাটা ঠিক মায়ের মত লালন করেন? লিখে ফেলেন। অবশ্যই ট্যাগ দিতে ভুলবেন না।

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)