বিবিধ

কল্পলোকের গল্প নয়-৬

কল্পলোকের গল্প নয়-৬
পৌনঃপুনিক-এক  জামান পরিবারের বড় ছেলে। পরিবারের প্রয়োজনে এইচ এস সি পাশ করেই একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকুরী নিয়েছে। বেতন মোটামুটি। চাকুরীর পাশাপাশি একটা কলেজে নাইট শিফটে ডিগ্রী পড়ছে। বাবা, মা, বড়বোন ও ছোট দুই ভাই নিয়ে তাদের সংসার। ওর বাবা একসময় ব্যবসা করতেন। কিন্তু ব্যবসায় লোকসানের পর এখন বেশ কষ্ট করেই ওদের চলতে হয়। বড়বোন সেলাইয়ের কাজ করে সংসারে কিছুটা অর্থের যোগান দেয়। এভাবেই সবাই মিলে সংসারের খরচ চালায়। এছাড়াও আত্মীয়-স্বজনরাও নিয়মিত সহায়তা করে।  রীপা ধনী পরিবারের মেয়ে। ওর আব্বার নিজস্ব ব্যবসা আছে। অবস্থা বে-শ ভালো। বাবা, মা ও ছোট একটি বোন ...এই হল তার পরিবার। পরিবারের বড় মেয়ে হওয়ার কারণে বাবা, মা ছাড়াও মামা, খালা, চাচা, ফুফুদের কাছে ওর কদর অনেক বেশী। সবাই ওর যে কোন আবদার, যে কোন প্রয়োজন সবসময়ই পূরণ করার চেষ্টা করে। ও যখন ক্লাস সেভেনে পড়ে তখন জামানরা রীপাদের পাশের বাসায় ভাড়া আসে।  পাশাপাশি বাড়ি হওয়ার কারণে রীপা প্রায়ই জামানদের বাসায় যায়। জামানের বড়বোন লতা আপার সাথে বেশ আন্তরিকতা গড়ে ওঠে। লতা আপাও রীপাকে ছোটবোনের মতই স্নেহ করেন। দিন মাস এভাবেই কাটতে থাকে...... বছর গড়ায়। রীপা এবার ক্লাস এইটে উঠলো। লতা আপার কাছে ঘনঘন আসা যাওয়ার ফলে এক সময় রীপা ও জামান পরস্পরের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে। তারা একে অন্যকে তাদের ভালোলাগার কথা জানায়। এক পর্যায়ে দুজনের মাঝে সম্পর্ক গড়ে ওঠে।  জামানের আম্মা ও আপা প্রথম থেকেই বিষয়টা টের পায়। কিন্তু তারা কোন বাধা দেয়নি। তারা না দেখা ও না জানার ভাণ করে থাকত। এতে ওরা আরও সাহসী হয়ে যায়। জামানের আম্মা ও আপা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করত - ধনীর দুলালীর সাথে সম্পর্ক হয়ে বেশ ভালই হল। রীপার বাবার এত সম্পদ! আর ওরা মাত্র দুইবোন। অর্ধেক সম্পদের মালিকতো রীপা-ই। কোনমতে একবার বিয়েটা হয়ে গেলেই আর পায় কে!!! যার কারণে আত্মীয়-স্বজনরা এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেও বারবার ব্যর্থ হয়।  রীপার ছোটবোন দীপা প্রথম থেকেই বিষয়টি জানত। সেও তার পরিবারে এ ব্যাপারে কিছু জানায়নি। কারণ সে তার বড়বোনকে খুশী রাখার জন্য এ বিষয়টি গোপন করে যায়। ওর আম্মা ভীষণ রাগী একজন মানুষ। সে জানত যদি বাসায় এই বিষয়টি জানাজানি হয় তবে আম্মা আপুকে আস্ত রাখবেনা। এভাবেই ছোটবোনের সহযোগিতায় রীপা বেশ ভালোভাবেই(!) দিন কাটিয়ে দিচ্ছিল......।  দিন যায়............ মাস যায়......... একপর্যায়ে রীপার ছোটচাচী এই ঘটনা টের পেয়ে গেল। এই চাচী স্বামী সন্তানসহ রীপাদের বাসায়ই থাকত। আগে ছোটচাচা তার পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকত। তার নিজস্ব কোন ইনকামের ব্যাবস্থা ছিলনা। ব্যবসার কাজে সহযোগিতা পাওয়ার জন্য রীপার আব্বা তার ছোটভাইকে পরিবারসহ তার বাসায় নিয়ে আসেন। ছোটচাচার এক ছেলে ও এক মেয়ে। বাচ্চা দুইটি বেশ ছোট।  রীপার আব্বার ব্যবসা অনেক বড় ছিল। ফলে কর্মচারীর সংখ্যাও অনেক বেশী। দুপুরের খাবার বাসা থেকেই দিতে হত। রীপার আম্মাকে কাজে সাহায্য করার জন্য বাসায় একাধিক কাজের লোক ছিল। কিন্তু এতগুলো মানুষের রান্না করতে করতে তিনি হাঁপিয়ে উঠতেন। তাই ছোট জাকে পেয়ে উনি বেশ খুশী হলেন এই জন্য যে, এবার মাঝে মধ্যে তার জা-ও রান্নাটা করতে পারবে। এবার তিনি একটু অবসর পাবেন।  (চলবে..............) 

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ