বিবিধ

ফ্ল্যাশ মবঃ শুরুটা আনন্দের, কিন্তু তারপর?

ফ্ল্যাশ মবঃ শুরুটা আনন্দের, কিন্তু তারপর?
  মধুর ক্যান্টিনের সামনে ভিডিও ক্যামেরা ঠিকঠাক করতে দেখে একটু ভয় পেলাম। এখনই কি নৃত্য শুরু হয়ে যাবে নাকি! ভয়ে আরও জোরে হাটা দিলাম। আশেপাশের পাবলিক ও একটু একটু গুঞ্জন তুলল। একটা সেন্সে যদি বলি,  রাস্তার কোন বাপ মা নেই। যার যা মনে চায় করতে পারে, তাতে আমার কিছু বলার নেই। বললেও শুনে কে! তাইনা? শুধু একটা কথাই বলবো, কুরআনে আছে যে তোমরা গোপনে কিংবা প্রকাশ্য অশ্লীলতার কাছে ও যেয়ো না। কোন জিনিষের জন্য সমাজে অশ্লীলতা আরও প্রমটেড হয় তাহলে সেটা একজন মুসলিম হিসেবে আমি কখনোই সমর্থন করিনা। সাধারনতঃ গান বাজনা আমাদেরকে সাময়িক আনন্দ হয়তো দিতে পারে। কিন্তু , এটা কখনো কখনো একটা সমাজ ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট। যেমন, ক্রুসেড এ পড়েছিলাম, সুলতান সালাহ উদ্দিন আইউবির শাসনে ব্যাঘাত ঘটানোর জন্য, মুসলিমদের যাতে নৈতিক অবক্ষয় হয় তাহলে যুদ্ধ আর করা লাগেনা, এমনি ই অলস মস্তিষ্কের মানুষদের কাবু করা যায়, খুব সহজেই তাই সে সমাজে অবাধ গান বাজনা আর নারী সরবরাহের ষড়যন্ত্র করে ইহুদীরা । সেদিন টি এস সি তে গান বাজানোর জন্য ব্যারিকেড দিয়ে চত্তর বানানো হোল, ধান্মন্দি পর্যন্ত ৮০ টাকা ভাড়া ঠিক করেছিলাম। কোনক্রমেই মঞ্চ ওভার করে যাওয়া যাবেনা দেখে কিছু টাকা গচ্ছা দিয়ে নেমে বহুদূর হাঁটতে হোল। কোনদিন দুপুরে একটু ঘুমাতে পারিনা, সিডির দোকানের গানের শব্দে, যে কোন গান ৫/১০ মিনিট হেড ফোনে শুনলে আমার মাথা ব্যাথা করে। গান বাজনা সাময়িক আনন্দ দিতে পারে হয়তো। কিন্তু, অনেক ক্ষেত্রে অনেক যায়গায় এটা খুবই কষ্টকর একটা জিনিষ। এভাবে নিত্যদিন মিউজিক এর জন্য ঝামেলা পোহাই আমরা। তার মধ্যে আবার নতুন ক্রেজ ফ্ল্যাশ মব। যেখানেই যাই, দেখি পোলাপান ছোট খাটো জটলা পাকিয়ে ফ্ল্যাশ মব বানানোর বুদ্ধি করছে। সবাই পপুলারিটি চায়, সবাই নিজেদেরকে দেখাতে চায়। কিন্তু এতো মানুষ যদি ফ্ল্যাশ মব বানাতে পাগল হয়ে উঠে, এই পুরা টি টুয়েন্টি চলাকালে কতবার কতো যায়গায় হুটহাট ফ্ল্যাশ মব শুরু হয়ে ভোগান্তি পোহাতে হবে! এটা তো সিভিক সেন্সের ও পরিপন্থী! তাইনা? যাই হোক, উইকি ঘেঁটে দেখলাম, ফ্ল্যাশ মব আসলে বিজনেস প্রোডাক্ট ইন্ট্রডিউস করার জন্য শুরু হয়েছিলো। এখানে কোন বিজনেস চলছে আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। শুধু তাই নয়। ফ্ল্যশ মবের মাধ্যমে নানা ধরনের ক্রাইম ও পরবর্তীতে ওয়েস্টার্ন দেশ গুলোয় হয়েছে। তাই বলছি, অনেক কিছুর শুরুর উদ্দেশ্য নিছক আনন্দের জন্য হলেও অনেক সময় এর শেষ বেদনাবিধুর। যেমন গ্যাংনাম স্টাইল খুব জনপ্রিয় হলেও, এই স্টাইলে গুলি নিয়ে নাচতে যেয়ে ইয়েমেনের একটা বিয়ের অনুষ্ঠান মৃত্যুর শোকে পাথর হোল। মানুষকে, আপামর রিকশাওয়ালা , মেথর পথচারীকে নিজের দেহের কসরত দেখিয়ে আসলে লাভটা কি? আমার বিবাহিত এক বান্ধুবির কথা মনে পড়ছে। সে বলেছিল- আমরা তো নাহয় সেজে জামাইকে দেখাই, জামাই কত্ত কিছু কিনে দেয় খুশী হয়ে। কিন্তু এদেরকে কে কি দেয়? যে এরা মাগ্না সবাইরে রুপ দেখিয়ে বেড়ায়?

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ