সাহিত্য

ধ্রুবতারকার কথা

ধ্রুবতারকার কথা

তুমি কি জানো?

যখন একরাশ দ্যুতিময়তার মাঝে আমি হতাশা চেপে রাখি,

সুবেহ সাদিকের নীলাভ আকাশে চোখ পেতে থাকি।

আত্মমগ্নতা আমায় কোনো অশরীরী চেতনায় নিয়ে যায়।

যেখানে তুমি-তোমরা-আমরা কেউ নেই।

আর উত্তর তলে মাথা ঠেকিয়ে শক্তি সঞ্চয়ের চেষ্টা করি ঊর্ধ্ব হতে।

 

প্রতিদিন উদয়ের অপেক্ষায় বসে থাকি।

সূর্য তো রোজ ওঠে। রোজ একেকটা ভন্ড আবরণের খেলুড়ে গোলক।

উদ্যানে সবুজের রঙ প্রতিদিন ফ্যাকাসে হতে থাকে।

সবাই প্রাণপনে কিছু ক্লোরোফিল খুঁজে ফেরে।

অনেকদিন সত্যিকার সূর্যোদয় দেখা হয় নি, না?

 

হতাশার কথা আমি বলতে চাই না, জানো?

হতাশাকে আমি দাঁতে দাঁত চেপে রাখি।

জানা আছে- অমেয় সিঁড়িগুলো যখন নক্ষত্রের আকাশে উঠে ভেঙে যায়,

তখন স্বপ্ন দেখার মতো আর কিছু থাকে না দুনিয়ায়।

 

আমি যদি আজ ভেঙে যাই,

কাল আমার ভাই গড়িয়ে পড়বে মহাশূন্যে।

পরশু আমার বোন পিছলে যাবে গভীর পঙ্কে।

তারপর পথহারা মুসাফিরদল বিশ্বাস করতে শুরু করবে

আকাশের ধ্রুবতারকা সর্বগ্রাসী কৃষ্ণ-বিবরে রূপ নিয়েছে।

নিরুপায় হয়ে ওরা মৃত্তিকা গহ্বরে পথ খুঁজবে।

যেখানে ডুবে যাবে সব গলিত ম্যাগমার মাঝে।

আমি হতাশার কথা বলতে পারি না তাই।

জানি বাঁধের গায়ে ছোট্ট ছিদ্র করে দিলে

স্রোতের প্রবল টানে কিছুদিন পর বাঁধ ভেঙে যায়।

ভালোবাসার মুখগুলো পান করে সেই হলাহল।

আমি হতাশার শ্বাসও ফেলতে পারি না তাই।

 

সান্ত্বনা খুঁজে ফিরি তোমাদের আঁখির তারায়

সেখানে আজো কত কত স্বপ্নঝিল টলমল করে!

নিরাপত্তা খুঁজে পাই সংরক্ষিত অমিয়ে,

আমাদের হারাবার কীইবা আছে,

যেখানে আমাদের অন্তিম গন্তব্য প্রশান্ত এক

স্বচ্ছতোয়ার তটে?

 

আকাশ-প্রদীপ দেখেছো তুমি? ফানুস?

শোঁ শোঁ করে স্তুপকৃত বেদনাগুলো নিঃসীমায় হারিয়ে যায়।

 

পথ দেখানোর আগে যে আমাকে পথ খুঁজে নিতে হয় এভাবে।

তাই তো আমি ধমনী হতে লোহিত-কণিকা নিয়ে

প্রত্যয়ের শব্দমালা লিখতে পারি।

নিঃশঙ্ক আশাবাদের দ্যুতি ছড়িয়ে যেতে পারি।

তুমি উত্তরাকাশে জ্বলতে দেখো একটি ধ্রুবতারকা।


আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)