উইমেন (সামাজিক,মানসিক,সুবিধা বঞ্চিত নারী)

তাহারে দিও না সব

তাহারে দিও না সব
images কাল কলা ভবনের কমন রুমের মামা খুব দুঃখের সাথে বলছিলেন, অনেক ছেলেকে দেখেছেন বটতলা বা আমতলার নীচে দাঁড়িয়ে মেয়েটাকে থাপ্পড় দিতে দিতে মাটিতে ফেলে দিয়েছে। কোন কোন ছেলেকে দেখেছেন  হাত চেপে ধরে সিগারেটের ছ্যাকা দিতে। আমি নিজেও অনেক বার দেখেছি মেয়েদেরকে ছেলেদের পায়ে ধরে কাকুতি মিনতি করতে, চোখের পানি ঝরাতে। আহ! কি সস্তাই না মেয়েদের চোখের পানি! অথচ এরা উচ্চ শিক্ষিত মেয়ে , দেশের সর্বচ্চ বিদ্যাপীঠের মেধাবী ছাত্রী। ছাত্রী তো খুব নগণ্য বিষয়। এইবিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা যেখানে নির্যাতিত হতে পারেন, যেখানে চোখ তুলে নেওয়া হয় শিক্ষিকার সেখানে শিক্ষা আসলে কতোটুকু নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করতে পারে তা বলাই বাহুল্য। এমবিএ পড়ুয়া ছাত্রীর স্বামীর হাতে নির্যাতনের ঘটনা সেই ঘটনারই খুব স্বাভাবিক ধারাবাহিকতা। আর এগুলো খুব বাড়াবাড়ি মাত্রার নারী নির্যাতনের ব্যাপার, যা আমাদের সামনে প্রকাশ হয়। একজন পুরুষের শক্ত হাতের থাপড়ের দাগ যখন গালে বসে যায়, কিংবা কামড় দিয়ে যখন খাবলে খাওয়া হয় চোখ তখন হয়তো নির্যাতনের বাস্তব রূপ দেখে আমরা ভাবি, আহ! আমি বুঝি বেঁচে গেলাম!  আর গবেষণা বলে – এই নির্যাতনের শিকার ৮৭ ভাগ মহিলাই। কিন্তু যে নির্যাতন চোখে দেখা যায় না? যারা উচ্চ শিক্ষার জন্য ঘর থেকে বের হয়না, কিংবা গৃহিণী? তাদের নির্যাতন হয় বন্ধ দরজার ভেতরে। আর প্রেম ভালোবাসা সংক্রান্ত ব্যাপারে মেয়েদেরকে খুব সহজেই বেশ্যা বা অসতী বলে গালি দেওয়া যায়। কারণ, সমাজে যতো গালি আছে সব মেয়েদের জন্যই বরাদ্দ। কিন্তু যে মেয়েটি অসতী হচ্ছে সে কি একা একা অসতী হচ্ছে? নাকি কোন ছেলের মাধ্যমেই? এই খেলায় কি ছেলেটা সত্যিই কিছু হারায় না? কুরআনে সূরা বাকারায় আদম হাওয়ার ঘটনা সঠিকভাবে বর্ণনার পরে ঘটনার দ্বায়ভার আদমের ঘাড়েই তুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে হাওয়ার নাম উল্লেখ করা হয়নি। কারণ পুরুষ ক্ষমতাবান, অনেক ক্ষেত্রে অনেক বেশী আবেগবর্জিত। সে ক্ষেত্রে আবেগপ্রবণ নারীর সরলতার সুযোগ না নিয়ে নিজের বিবেকের কথা শোনার দ্বায়টা পুরুষের একটু হলেও বেশী। নারী চায় সর্বস্ব দিয়ে ভালবাসতে, একদম দেয়ালে পীঠ ঠ্যাকার আগ পর্যন্ত। আর এটাই নারীর প্রকৃতি। তাই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে পুরুষকেই বেশী দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেই সাথে পাপের দ্বায়ভার ও পুরুষেরই বেশী। তবে হ্যা। এটাও ঠিক। নারী যেহেতু সম্পদ, সৌন্দর্যের আঁধার! নিজের ভালো বোঝার দায়িত্ব ও নারীরই। সমাজ এখন জাহেলিয়াতের চৌ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। এখানে অনেক ফাঁক ফোঁকর। আর শিক্ষিত হলেও নারী স্বভাব সুলভ নমনীয়তা, আবেগের জাল ছিঁড়ে বের হয়ে আসতে পারছেনা অনেক চেষ্টা করেও। যে ছেলেটা আপনাকে বিয়ে করছেনা, অথচ ঠিক ঠিক ব্যবহার করছে মনে রাখবেন সে কোনদিন আপনার যোগ্য নয়। কারণ, পুরুষের স্বাভাবিক যে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা তা যার মধ্যে নেই , সে সাড়া জীবন আপনাকে আগলে রাখতে পারবে না কিছুতেই! যে ছেলেটার সামনে আপনি চোখের পানি ঝরাচ্ছেন আর সে নির্লিপ্ত বসে রয়, কীভাবে ভাবেন সে আপনার সুখ দুঃখের সঙ্গী হবে? যে ছেলেটা এক কথায় বারবার সম্পর্ক শেষ করে দিতে পারে, যে ছেলেটা আপনাকে শেষ করে দিয়ে আরেকটা বিকল্প নিয়ে ভাবতে পারে, তাকে বুকের জল ভাসিয়ে পেয়েও কি আপনার সুখ হবে? আর এরা তো স্বাদ আস্বাদনকারি। বিয়ে মানে এদের কাছে দ্বায় দায়িত্ব আর দুই জীবনের যাত্রার চেয়ে ভোগবাদই বড়। আর বিধাতা স্বয়ং বলেছেন- তিনি স্বাদ আস্বাদনকারীদের পছন্দ করেন না। যাকে আল্লাহ ভালোবাসেন না তাকে আপনি সব বিলিয়ে দিয়ে কোন পুণ্য করছেন একবার ভাববেন? থাপ্পড় সিগারেটের ছ্যাকা, আপনারই প্রাপ্য। কারণ, আপনাকে যে সম্মান করা হয়েছে আপনি তার মর্ম দিতে পারেন নি। আর একটি মেয়েই যেখানে আরেকটি মেয়ের বড় শত্রু, মেয়েরাই যখন লঙ্ঘন করে মেয়েদের অধিকার, যখন গীবত পরনিন্দা আর সংসার ভাঙ্গে নারীই নারীর তখন পুরুষের কাছ থেকে আপনি আসলে কি প্রত্যাশা করেন? আর তা কতোটুকুই বা যৌক্তিক?

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ