
ইদানিং যতো তালাকের কেইস রেজিস্ট্রি হচ্ছে বেশিরভাগই নাকি মেয়েদের পক্ষ থেকেই হচ্ছে। এক্ষেত্রে অনেকেই নারীর পরকীয়াকে ঢালাও দোষারোপ করেন। যদিও এক হাতে তালি বাজে না। আর সব তালাকের কেইসেই পরকীয়ার ব্যাপার ও যে আছে তা ও না।
বেশীরভাগ মেয়েরা এমনিই সংসারপ্রিয়। নিজের চারপাশে ভালোবাসার জগত আত্মত্যাগ দিয়ে তৈরি করতে মেয়েদের কোন জুড়ি নেই। এবং সংসার আঁকড়ে পড়ে থাকাই জীবনের সার্থকতা মেয়েদের।
এমনই যখন বাস্তবতা, তখন কোন নারীর সেধে সংসার ভাঙার বিষয়টা কি এক তরফা? নাকি সহ্য করতে করতে এক পর্যায়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলেই সামনে যেতে বাধ্য হয় নারী?
ছেলেরা প্রকৃতিগত ভাবেই একটু কেয়ারলেস। কেয়ারলেস অনুভূতিগুলোর দিকে, প্রিয় মানুষের একাকীত্বের প্রতি, কিংবা না চাইতেই পেয়ে যাওয়া তার যত্ন ভালোবাসার মূল্যায়ন করার প্রতি। তাদের অভিধানে প্রয়োজনহীন তদারকি কিংবা খোঁজ নেওয়াটা অনর্থক বলেই হয়তো তাদের হাতকে কঠিন কঠিন কাজের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। বাসার আলামারি শো-কেস যেগুলো হাজার ঠেলেও ২ বোন তেমন কিছু করতে পারিনা, একই কাজ ২ জন লেবার কতো সহজেই করে ফেলে। আস্ত আলমারিটা মাথায় তুলে ফেলে, কিংবা ৭০ ঊর্ধ্ব বুড়া চাচাকেও এই তারুণ্যের চেয়ে বেশী সবল দেখা যায়।
ছেলেদের কাজের মোহ ছাড়া আর যে কোন মোহই ক্ষণিকের। কাজের প্রয়োজনেই কিংবা স্বার্থ উদ্ধারের ক্ষেত্রেই তাদের দেখা মেলে। ভালোবাসার সুখানুভূতিগুলো তাদের কাছে ভীষণ মেয়েলি, চুড়ি পড়িয়ে রাখার মতোই।
জগতের সব কিছুর দ্বায় নিয়ে ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াতে তাড়াতে ঘরের খবর নেওয়ার আর সময় তাদের থাকে না। শুধু ঘরে আগুন লাগলে কিংবা পেটে ক্ষুধা লাগলেই ঘরের কথা মনে পড়ে।
আর ওদিকে মেয়েরা সারাদিন শত ব্যস্ততার মাঝেও ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে ভাবে। মেয়েদের পুরা জগতটাই যেন মায়ার জগত। মায়া ছাড়া, ভালোবাসা ছাড়া তারা কিছুই ভাবতে পারে না। এমনকি, ভালো কিছু খেতে গেলেও প্রিয় মানুষের কথা ভাবে! সে খেলো কিনা!
কিন্তু, বেশীরভাগ সময়ই মেয়েদের এসব আবেগ , ভালোবাসার অনুভূতির খবর ও কোন স্বামী নিতে আসে না। কারন, মেয়েরা এমনই মায়ার জগত তৈরি করে দেয় যে, তারা ভালোবাসার কোন অভাবই বোধ করেনা। কিন্তু সব দিয়েও মেয়েদের ভালোবাসা পাওয়ার পাল্লাটা সব সময়ই খালি! এই হাহাকার পূরণ হয়েছে এমন নারী খুব কমই দেখেছি জীবনে।
এই জন্যই হয়তো মেয়েদেরকে আল্লাহ সন্তান দিয়ে এই একাকীত্ব আর চরম অবহেলার কথা ভুলে যাওয়ার একটা নিয়ামক তৈরি করে দিয়েছেন। আর স্বার্থপর, অনুভূতিহীন পুরুষকে দিয়েছেন জগত শাসনের ক্ষমতা।
ভালোবাসা একটা শুধু ভালো বাসা নয়, এইটা গাছের মতোই। শুধু কিনে গাছ রেখে দিলেই যদি ডাল পালা মেলে ফল দিতো, তাহলে তো পৃথিবীতে আর কোন পরিশ্রমই করা লাগতো না।
ঠিক তেমনি, শুধু সংসার গড়লেই হয়না। তার যত্ন করতে হয়, নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয় ঠিক একটা গাছের মতোই। আর পরকীয়া তো একটা আগাছা। যেটা নিয়মিত পরিচর্যায় কখনোই বেড়ে ওঠার কথা না।
যদিও সব ছেলে এক রকম নয়, ভালো মানুষ আছে বলেই মায়ার এই জগত , সংসার ধর্ম আজও টিকে আছে
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)