
আজ ২৫ নভেম্বর ‘ইন্টারন্যাশনাল ডে ফর দ্য এলিমিনেশন অব ভায়োলেন্স এগেইনস্ট উইমেন’ বা আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস। আজ থেকেই শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষেরও। ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পর্যন্ত পৃথিবীর দেশে দেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এ পক্ষ পালিত হবে। বাংলাদেশের নারী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এ উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি নিয়েছে।
নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ১৯৮১ সালে লাতিন আমেরিকায় নারীদের এক সম্মেলনে ২৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ১৯৯৩ সালে ভিয়েনায় বিশ্ব মানবাধিকার সম্মেলন দিবসটিকে স্বীকৃতি দেয়। জাতিসংঘ দিবসটি পালনের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয় ১৯৯৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর। বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস উদ্যাপন কমিটি ১৯৯৭ সাল থেকে এই দিবস ও পক্ষ পালন করছে।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রকাশিত গবেষনা থেকে নারী নিযাতনের সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরা হলো-
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ মূলধারার জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত তথ্য সমন্বয় করে তৈরি এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে,
২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দেশে ২৪ হাজার ৬৩১টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
২০১৪জানুয়ারি-অক্টোবর পর্যন্ত নির্যাতনের ঘটনা চার হাজার ১৪৬টি।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান 'উন্নয়ন অন্বেষণ'-এর এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে,
২০০৮ সালে যৌতুকের কারণে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ২৬৯টি।
২০১২ সালে ঘটেছে ৭৭১টি।
অর্থাৎ নির্যাতনের হার বেড়েছে ৪৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ধ...ের হারও বেড়েছে ১৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
পুলিশ সদর দফতরের নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ সেলের তথ্য অনুযায়ী,
২০০১ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রায় এক যুগে এক লাখ ৮৩ হাজার ৩৬৫ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
এ ছাড়া এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ১৫ হাজার ৫৭৬টি।
নারী নির্যাতনে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে সাইবার ক্রাইম। প্রযুক্তির সহজলভ্যতার কারণে দেশের আনাচে-কানাচে গড়ে উঠছে সাইবার সেন্টার। দেশে কী সংখ্যক নারী সাইবার ক্রাইমের মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই ।তবে একথা বলাই যায় যে সাইবার ক্রাইম বাড়ছে আশংকাজনক হারে।নারী নির্যাতন প্রতিরোধে আমাদের দেশে অনেক আইন প্রনয়ন করা হয়েছ্।যেমন-পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধে ২০১০ সালে পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১১ সালে উত্ত্যক্ত করাকে (ইভ টিজিং) যৌন হয়রানি হিসেবে চিহ্নিত করে আইনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মানব পাচার প্রতিরোধ, এসিড নিয়ন্ত্রণ আইন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (২০০৩ সংশোধিত), যৌতুক আইন ইত্যাদি।তবুও নারী নির্যাতন কমছে না বরং বাড়ছে ।তাই আইনের সঠিক ও কাযকরী প্রয়োগ এবং নারী সচেতনতা প্রয়োজন।এই দুয়ের সমন্বয় না হলে নারী নিযাতন প্রতিরোধ সম্ভব নয়।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)