উইমেন (সামাজিক,মানসিক,সুবিধা বঞ্চিত নারী)

ইসলামের দৃষ্টিতে ধর্ষিতার বিচার

ইসলামের দৃষ্টিতে ধর্ষিতার বিচার
এক বান্ধুবি সেদিন জিজ্ঞেস করলো- ইসলামের দৃষ্টিতে ধর্ষিতার বিচার কি? আমি মোটামুটি আকাশ থেকে পড়লাম! ধর্ষিতার আবার কিসের বিচার! মজলুমের কোন বিচার বিধান করার আইন তো ইসলামের মতো সুবিন্যস্ত ধর্মে থাকার কথা নয়! ক্রাইম ওয়াচের একটা পর্বে ফরিদপুরের এক মেয়ের দুর্দশার কাহিনী দেখলাম। ছেলেটা ইনিয়ে বিনিয়ে প্রেমে ফেলে এরপর ধ... করেছে। মেয়েটা সাধ করে ধর্ষিত হতে যায়নি। এরপর কুমারী মাতা হওয়ার বঞ্চনা মেয়েটা একাই বয়ে বেড়াচ্ছে। গ্রাম্য মোড়লরা শালিশ করে মেয়ের বাবাকে দিয়ে ছেলেকে ১ লাখ টাকা দেওয়ার পরেও কোন লাভ হয়নি। মেয়েটা সম্মান, পরিচয় কিছুই পায়নি, পায়নি তার নাবালক সন্তান ও । আচ্ছা, আমি নাহয় শরীয়ত প্রসঙ্গে পরে আসি। স্বাভাবিক কমন সেন্স কি বলে? যে অত্যাচারিত হয়, তার ব্যাপারেও শাস্তির বিধান ইসলাম করবে? ইসলাম কি অমানবিক ধর্ম? আর নারীর প্রতি মানবতাবোধের সূতিকাগার তো ইসলামই । তাহলে নাস্তিকরা বা সুশীল নারীবাদীরা কেনই বা বলে – যে ইসলাম ধর্ষিতার বিচারের বিধান করেছে। ইসলাম যা করেছে সেটা হোল ধ... আর জিনার মধ্যে পার্থক্য তৈরি করে দিয়েছে। যা না করলে প্রতিটা মানুষই অন্যায় করার একটা জাজমেন্তাল সাপোর্ট পেতো, যা আমাদের আইন করে দিয়েছে। বাংলাদেশের আইনে ধ...ের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, যদি কোন পুরুষ বিবাহ বন্ধন ব্যতীত ষোল বত্সরের অধিক বয়সের কোন নারীর সহিত তাহার সম্মতি ব্যতিরেকে বা ভীতি প্রদর্শন বা প্রতারণামূলকভাবে তাহার সম্মতি আদায় করিয়া,অথবা ষোল বত্সরের কম বয়সের কোন নারীর সহিত তাহার সম্মতিসহ বা সম্মতি ব্যতিরেকে শারীরিক সম্পর্ক করে , তাহা হইলে তিনি উক্ত নারীকে ধ... করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন৷ ইসলামের সাথে এই সংজ্ঞার তেমন কোনো বিরোধ নেই। তবে এতে কিছু অসামঞ্জস্যতা আছে। ইসলাম সম্মতি-অসম্মতি উভয় ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বিবাহ বহির্ভূত দৈহিক মিলনকে দন্ডনীয় অপরাধ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু এই আইনে কেবল অসম্মতির ক্ষেত্রে তাকে অপরাধ বলা হয়েছে। এখন এটা কেন অপরাধ হিসেবে বলা হোল! এটাই হোল নাস্তিকদের মুল কথা! সম্মতিক্রমে নিজেকে অপমানিত করার সুযোগ বা কর্মকাণ্ডকে ইসলাম যদি সাপোর্ট করতো তাহলে অবস্থাটা কি দাঁড়াত? এমনিতেই বাংলাদেশে নারীরা ভীষণভাবে নির্যাতিত। এরমদ্ধে স্বেচ্ছায় এমন কাজ যদি অপরাধ হিসেবে গণ্য না হতো, বিন্দুমাত্র সহানুভূতির যদি স্থান করে দেওয়া হতো, তাহলে ছেলেরা এর মাধ্যমে মেয়ে, তার পরিবার এবং সমাজকে ইমোশনাল ব্ল্যাক মেইল করার সুযোগ পেতো অনেক বেশী। ধ... আর জিনার মধ্যে পার্থক্যের একটা বিরাট গুরু রহস্য বিদ্যমান। কোরিয়ান একটা মুভিতে দেখেছিলাম, নায়ক নায়িকাকে বিয়ে ছাড়াই পেতে পারে, আবার নায়কের এক্স গার্ল ফ্রেন্ড হিংসার বশবর্তী হয়ে কিছু ছেলেকে দিয়ে নায়িকাকে রেইপ করায়। ২ টাই অন্যায়, ২ টাই পাপ! কিন্তু প্রথমটিতে সেন্তিমেন্ত ক্রিয়েট করা সহজ, কারন ওখানে তথাকথিত ভালবাসাকে প্রদর্শন করা হয়। কিন্তু আসলে স্বেচ্ছায় ধর্ষিত হওয়াটা একটা মেয়ের নিজেরই আত্মসম্মানের চরম লঙ্ঘন। বিশ্বাস করুন আর নাই করুন , এই রকম বস্তুবাদী কথিত ভালোবাসা একটা মেয়েকে কিছুই দিতে পারেনা। লা নুই বেঙ্গলিতে পড়া একটা লাইনের কথাই আমার মনে হয়- মেয়েটা বিছানায় পরে রইলো দুমড়ানো কাগজের মতন। যে স্বেচ্ছায় অসম্মানিত হয় তার অবস্থাটা দুমড়ানো কাগজের চেয়ে খুব ভালো কিছু হয়না বলেই আমার ধারনা। ধ... অসম্মানের, চরম লাঞ্ছনার। সেটা সমাজের সবাই মেনে নিয়েছে। তাহলে স্বেচ্ছায় এর শিকার হওয়াকে কেন ভালোবাসার মোড়কে সাজিয়ে দেখানো হচ্ছে? কারন একটাই। খারাপ কাজের একটা জনসম্মতির প্রসার। বা এমনটা তো হতেই পারে, এমন ধারণার জন্ম দেওয়া। আর এটাতে আইনত বা নৈতিক সমর্থন তো দূরের কথা শাস্তির বিধান না করলে সমাজের পুরা সিস্টেমই এলোমেলো হয়ে যায়। ইসলাম মজলুম ধর্ষিতার বিচার করেনি, এমন কোন বিধান ও দেয়নি। কিন্তু যে ব্যক্তি নিজের সম্মান, নিজের ইজ্জতের দাম দিতে জানেনা, তার জন্য শরীয়তী সহানুভূতির আশা যারা ইসলামের মতো ধর্মের কাছে আশা করে, কিংবা এই নিয়ে বিতর্কের অবতারনা করে তারা আসলে ঘুরিয়ে মেয়েদের সেধে অপমানিত হওয়াটাকেই হালাল করার চিন্তায় মশগুল। তারা কখনোই আপনার সম্মান রক্ষায় আপনাকে ডিফেন্সিভ হতে বলেনা, অসম্মানিত হওয়ার পর অফেন্সিভ হতে বলে। কিন্তু তাতে মেয়েটা কি পায়? ভেবেছেন হে নারীবাদীরা?

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ