বিবিধ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, দাদাদের কারসাজি ও আমাদের স্বপ্ন .........

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, দাদাদের কারসাজি ও আমাদের স্বপ্ন .........
  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ১৯২১ সালের ১লা জুলাই তার পদযাত্রা শুরু করে, বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে পর্যায়ক্রমে ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২ এর সাংবিধানিক আন্দলন, ৬৯ এর গনঅভুত্থান, ৭১ এর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মত্যাগের মহান শিক্ষাই এই বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়েছে পূর্ণতা । পূর্ব বাংলার পিছিয়ে পড়া মুসলমানরা ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ নামক সোনার হরিণ পেয়ে আর্থ সামাজিক ক্ষেত্রে অগ্রসরমান হতে থাকে। পূর্ব বাংলার মুসলমানদের উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতাকে আমাদের ঐ পাড়ার দাদারা নিজেদের সর্বেসর্বা সুবিধা লাভের পথে অন্তরায় ভেবে বঙ্গমাতার অঙ্গছেদের সাথে তুলনা করে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন শুরু করলে ব্রিটিশরা ১৯১১ সালের ডিসেম্বরে বাধ্য হয় বঙ্গভঙ্গ রদ করতে। মুসলমান নেতৃবৃন্দ এতে তীব্রভাবে মর্মাহত হন, সার্বিক বিবেচনায় মুসলমানদের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য লর্ড হার্ডিঞ্জ ঢাকা আসলে স্যার সলিমুল্লাহ ও নওয়াব আবদুল লতিফ এর নেতৃত্বে্ ১৯ জনের এর মুসলিম প্রতিনিধি দল ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন। লর্ড হার্ডিঞ্জ সার্বিক দিক বিবেচনা করে ঘোষণা দেন ‘’the government of india realised thad education was the true salvation of the muslims and that the government of india,as an earnest of their intentions, would recommends to the secretary of state for the constitution of university of dacca.’’ কলকাতার কংস মামারূপী দাদারা সমস্ত লজ্জার মাথা খেয়ে এবার বেহায়াপনার একটু বেশি ই লিপ্ত হলেন।মুসলমানেরা শিক্ষা দীক্ষায় অগ্রসরমান একটি জাতি হিসেবে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে সচেষ্ট হউক দাদারা কখনই তা চাননি। ১৯১৭ সালে রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরেব সভাপতিত্বে কলকাতার গড়ের মাঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা বিরোধী সমাবেশ হয়। রাসবিহারি ঘোষের নেতৃত্বে হিন্দু প্রতিনিধিদল হার্ডিঞ্জের সাথে দেখা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার তীব্র বিরোধিতা করে স্মারকলিপি পেশ করে, প্রস্তাবিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কে ব্যঙ্গ করে মক্কা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আখ্যায়িত করে, এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাতে টিচিং কাম এফিলিয়েড বিশ্ববিদ্যালয় না হতে পারে সেজন্য কলকাতার হিন্দু কংস মামারা এর তীব্র বিরোধিতা করে। নওয়াব আবদুল লতিফ এর বিশাল ত্যাগ এবং মুসলিম নেতৃবৃন্দের বাস্তবমুখী সিদ্ধান্তের কারনেই ১৯২১ সালের এই দিনে কংস মামাদের সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে তিনটি অনুষদ আর ১২ টি বিভাগ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় নাথান কমিটির গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয় ’’We don’t forget that the creation of the university was largely due to the demand of muslin community of eastern Bengal for greater facilities for higher education.’’ মুসলমান সম্প্রদায়ের দাবীর প্রতি লক্ষ্য রেখেই যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে কিন্তু খুবই পরিতাপের বিষয় একই প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মেধা তালিকায় শীর্ষে থাকা সত্ত্বেও কেবল ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ায় তাদেরকের শর্তের মারপ্যাঁচে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সারির বিভাগ গুলো থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে তা অবশই হিউম্যান রাইটস এর ভাইলেশন, আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে মেধার লালনের পরিবর্তে মেধাহীনতার চর্চায় একটি জাতি হিসেবে মেরুদণ্ডহীন জাতি হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা । তিলকের চিকা আর সিকা প্রথার রাখি বন্ধনে নিজস্ব সংস্কৃতি অনেক আগেই বিকলাঙ্গ হয়ে গেছে এখন শুধু দাদাদের আদরে সংস্কৃতি নামক বিকলাঙ্গ লাশটার সৎকার্য করাটাই বাকী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতার অন্যতম কারণ ছিল মুসলমানদেরকে পশ্চাৎপদ জাতি হিসেবে দেখার অভিপ্রায়, ৪৭ এর দেশ বিভাগের পর তারা মনে প্রানে আসক্তিতা বেড়েছে বৈ কমেনি, রক্তে মাংসে এমন একটি জাতি হিসেবে আমাদেরকে দেখতে চেয়েছে তারা যারা হবে তাদের সেবা দাস, যারা থাকবে দাদাদের অনুকম্পায় বিস্তৃত অনুভূতিহীন একটি জাতি। দাদারা সফল, দাদাদের আদরে অনেক সেবা দাসই আজ ক্ষমতার উচ্চ শিখরে উঠে দাদাগিরিতে ব্যস্ত, আমাদের মানচিত্র ওঁরা চিবিয়ে খাচ্ছে, অনেক কথাইতো হয়ে গেল, আজ ১ জুলাই আসুন না কংস মামা আর দাদাদের করাল গ্রাস হতে দেশটাকে বাঁচাই, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রেখে যাই সফেদ সরল একটি নিজস্ব সমাজ, নিজস্ব সুস্থ সংস্কৃতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হউক ঠিক আগের মতই অগ্রগণ্য চারণক্ষেত্র আর আমরা না হয় হব সেই পরিবর্তনের অগ্রগামী কর্মী। সংগ্রহীত

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ