বিবিধ

পরিমিত খাদ্যাভাস, সাশ্রয়ী জীবনযাপন ও সহযোগী মনোভাব

পরিমিত খাদ্যাভাস, সাশ্রয়ী জীবনযাপন ও সহযোগী মনোভাব

করোনার এই আবদ্ধ সময়ে আমরা চাইলে পরিমিত খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে পারি‍‍। ইচ্ছামতো বেশি বেশি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা থেকে একটু সরে আসতে পারি‍। এটা একদিকে যেমন সাশ্রয়ী, তেমনি স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো‍।

যেমন: বাসায় বসে আছি বলে বেলায় বেলায় যা মন চায়, তাই বানিয়ে না খাওয়া‍। তিন বেলায় নানা আইটেমের খাবার না খাওয়া‍।

রমজানের ইফতারিটা অন্য বছরের মতো না করা‍।
যেমন: চার পাঁচ আইটেমের চপ, পাকোড়া ইত্যাদি। এক্ষেত্রে পুষ্টিমান বজায় রেখে স্বল্পমূল্যের খাবারের দিকে মনযোগী হওয়া‍ (যদি সম্ভব হয়)‍। অর্থাৎ সাশ্রয়ী স্বভাবে অভ্যস্ত হওয়া‍।

এখন সাশ্রয়ী হবো, কিন্তু কিভাবে?

যেমন: তিন বেলায় মাছ, মুরগী, ডিম না খেয়ে এক বেলায় ভর্তা ভাত খাওয়া যায়‍। অতিরিক্ত ভাজা পোড়ার পরিবর্তে ভর্তা খেলে স্বাস্থ্যের জন্য যেমন ভালো, তেমনি তেলও কম লাগবে‍। আগে একটু বেশিই খেতেন, এখন না হয় একটু কমিয়ে নিলেন‍।

বাসায় যেহেতু বসেই আছেন, ক্যালরি বার্ন হওয়ার সুযোগও কম‍। তার উপর এক্সারসাইজেও রয়েছে অলসতা‍। তাহলে মনের ক্ষুধায় বেশি খেয়ে কী হবে বলুন তো? তাই আইটেমগুলোকে পুষ্টিমান অনুযায়ী চাইলেই একটু ভাগ করে নেওয়া যায়‍।

ইলিশ, কোরাল, চিংড়ি মাছ বেশি খেতেন? একটু নাহয় ব্যালেন্সই করলেন‍। বিকেলের আড্ডায় দামি দামি কেক-বিস্কিট? মুঠো মুঠো কাজু বাদাম? চাইলে কিছু দেশি বাদামও খেয়ে নেওয়া যায়‍। দামে কম, পুষ্টিতে বেশি‍।

মাছ, মাংস, ডিম সব কষিয়ে ভুনা ভুনা করে খাওয়া? নাকি তেল ও পেয়াজের স্বল্প ব্যবহারে একটু ঝোলও করে খাওয়া যায়?

ইফতারিতে খেজুর খাবো? আজোয়া, মারিয়াম? একটু মিলিয়ে মিশিয়ে না হয় কিনি‍।

লকডাউন না থাকলে এ'কদিনে কতবার বাইরে যাওয়া হতো, চোখের প্রলোভনে খেয়ে ফেলতাম কত পিজ্জা-বার্গার, পাস্তা, নাচোস আরও কত কি! যাচ্ছি না বলে তো সেই এক্সট্রা খরচটাও বেঁচে যাচ্ছে, তাই না? বেঁচে যাচ্ছে রিক্সা ভাড়া, চকলেট-চিপস, আইসক্রিমের মতো নানান বাহুল্য খরচ‍। তো সেই বেঁচে যাওয়া টাকায় হতে পারে এক অপূর্ব বিনিয়োগ।

এখন প্রশ্ন, আমার তো সামর্থ্য আছে তবু কেন সাশ্রয়ী হবো? এই যে বেঁচে যাওয়া তেল, পেঁয়াজ, বেসন, মশলা, আরও যা যা বলেছি সেগুলো অতিরিক্ত না খেয়ে সেগুলোই আমরা খুব সহজে ভাগ করে নিতে পারি অন্যদের সাথে‍। দিন এনে দিন খাওয়া মানুষদের যখন মৌলিক প্রয়োজন ব্যাহত হবে, তখন আমরাই এই বেঁচে যাওয়া অর্থ থেকে অন্যদের সহযোগিতা করতে পারবো ইনশাআল্লাহ‍।

হয়তো বলবেন, আমরা কি দান করছি না? অবশ্যই করছেন, তবু অহেতুক খরচ বাঁচাতে পারলে কিংবা আরেকটু সাশ্রয়ী হলে আমাদের সহযোগিতার হাতটা আরও বেশি প্রসারিত করতে পারবো‍। আরও বেশি মানুষের কাছাকাছি যেতে পারবো‍।

আর এভাবেই আমরাই হয়ে ওঠতে পারি মানবিক বাংলাদেশ‍।

-নুসরাত জাহান


আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ