মেইক ইউরসেল্ফ (রুপচর্চা,পারসোনালিটি,ক্যারিয়ার,স্বাস্থ্য)

আত্মহ... কী, কেন এবং কখন করে?

আত্মহ... কী, কেন এবং কখন করে?

?সাধারণ অর্থে যেকোন অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে নিজের প্রাণ নিজে হরণ করাই আতত্মহ...! এটি এক বা একাধিক কারণে ঘটতে পারে! কখনো কখনো হঠাৎ করেই আবার কখনো দীর্ঘদিনের চুপচাপ পরিকল্পনায়!

?খালিচোখে এর পেছনে যে #কারণগুলো বিদ্যমান:
হতাশা, বিষন্নতা, ব্যর্থতা বা ধারাবাহিক ব্যর্থতা (ব্যক্তিজীবন, শিক্ষাজীবন, কর্মজীবন),
অপ্রাপ্তি, হাহাকার, অবহেলা, হীনমন্যতাবোধ, নিজেকে তুচ্ছ মনে করা, চারপাশের কিছুই ভালো না লাগা, হঠাৎ মানসিক আঘাত ও তার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে না পারা এবং সর্বোপরি জীবনে চলতে গিয়ে ঘটে যাওয়া যেকোন অপ্রত্যাশিত ও অনাহূত পরিস্থিতি মেনে নিতে না পারার অক্ষমতা!

?#পটভূমি
ব্যক্তি কি একাই দায়ী? একাই এর মূল কারণ? নিশ্চয়ই নয়! কাছের কিংবা চারপাশের কেউ, পরিবার, সমাজ, পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিও নিয়ামক হিসেবে কাজ করে! 
সম্পর্কের ক্ষেত্রে কাউকে অতি আবেগে অধিক ভালোবেসে ফেলা, নির্ভরতা তৈরী হতে হতে এককেন্দ্রীক করে ফেলা (যেহেতু সবাই একরকম নয়) এবং সবশেষে তাকে হারিয়ে জনসমুদ্রে থেকেও নিঃস্ব হয়ে চরম একাকীত্বে ডুবে যাওয়া। 
সর্বশেষ পরিণতিতে আত্নঘাতী সিদ্ধান্ত! 
এছাড়াও একাডেমিক লাইফের প্রেসার, ফলাফলে ব্যর্থতা, কর্মজীবনে এসে নানামূখী অর্থনৈতিক চাপ, লেনদেনের জটিলতা, চরম ঋণে জর্জরিত হয়ে কঠিন সময়ের সাথে খাপ না খাওয়া এবং মানুষের নানামূখী প্রতারণামূলক কাজ, বিশ্বাস ভেঙ্গে দেওয়া ইত্যাদি!

?#করণীয়:
সমস্যা ছিল, আছে, থাকবেই তার সাথে সমাধানও কিন্তু রয়েছে আমাদেরই কাছে।
আমরা যেহেতু জানি আত্মহ... মহাপাপ! সেক্ষেত্রে এই বিষয়টা মাথায় গেঁথে রাখা জরুরী!
জনৈক এক মাদরাসা শিক্ষার্থী হতাশ হয়ে বলেছিলেন, মাঝে মাঝে মন চায় মরে যাই! কিন্তু ধর্মের কথা ভেবে পারিনা। এক্ষেত্রে ধর্ম তাকে আটকে দিচ্ছে বারবার, আটকে দিচ্ছে তার মাঝে গেঁথে থাকা বোধ ও অনুভব, 
কখনো কখনো ব্যক্তিগত মানসিক শক্তি,এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে, ধ্বংসস্তুপের ভেতরে দাঁড়িয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রেষণা!

আমার মতে #করণীয় দুধরণের হতে পারে:
#প্রথমত, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন নিজের নিয়ন্ত্রণ না হারানোর জন্য মানসিকভাবে শক্তিশালী ও ভারসাম্যপূর্ণ হওয়া!
#দ্বিতীয়ত, কাছের মানুষদের আন্তরিক খেয়াল, পরিচর্যা, উৎসাহ, সহযোগিতা,ভালোবাসা, পর্যাপ্ত কাউন্সিলিং ও যেকোন বৈরি অবস্থায় পাশে দাঁড়িয়ে কাঁধে হাত রেখে ''কিচ্ছু হবে না, সব ঠিক হয়ে যাবে'' বলার মতন মানসিকতা ও এর বাস্তবায়নে সহযোদ্ধা হওয়া!
তবে এক্ষেত্রেও বাস্তবতা অনুযায়ী নির্ভরতা পরিহার করে নিজের আবেগ-ঘুড়ির সুতো কেটে উড়িয়ে না দিয়ে নিয়ন্ত্রণের নাটাই হাতে রাখতে পারার চেষ্টাটাই উত্তম! অর্থাৎ মানসিক গঠন মজবুত করা! কেননা দিনশেষে আমরা আমাদের জন্যই!!

এছাড়াও কোন দূর্বিপাকে পড়ে গেলে নিজস্ব চেষ্টায় নিজের প্রতিই নিজের ভালোবাসা বাড়ানোটা জরুরী! মনে রাখা উচিত, হারানোর গল্প যেমন অনেক, পাওয়ার গল্পও কিন্তু কম নয়!
একটা হাত ছেড়ে গেলে কিংবা কিছু সুযোগ মিস হয়ে গেলেও কিন্তু গল্পের অনেকটা বাকি থেকে যায়!
যদি দৃষ্টিভঙ্গি বদলাই,মুঠো মুঠো ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে পারি অক্সিজেনের মতো তবে গল্পটা পূর্ন হয়! বেঁচে যায় বেঁচে থাকে একটি প্রাণ!

?সবশেষে, আমরা মানসিকভাবে শক্তিশালী হই, সচেতন হই নিজের জন্য, মানবিক হই অপরের জন্য, আমাদের কাছের কারো জন্য! 
যা চলে যায় তা হয়তো আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয় কিন্তু যা আছে তাতো আগলানো বা যত্নে রাখা সম্ভব।


আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)