ধর্ম ও গবেষনা

যে কারণে মেয়েদের শুধুই গৃহিণী হওয়া অনুচিত( পর্ব- ১)

যে কারণে মেয়েদের শুধুই গৃহিণী হওয়া অনুচিত( পর্ব- ১)

 

মেয়েদের একান্ত ব্যক্তিগত কিছু শারীরিক সমস্যা থাকে, যা মহিলা ডাক্তার ছাড়া দেখানো খুব সহজ নয়। এটা এক ধরণের মানসিক চাপ তো সৃষ্টি করেই আবার অনেক সময় দেখানো গেলেও , পুরুষ ডাক্তারের দ্বারা হ্যারেজ হবার সম্ভাবনা ও থাকে। 
মাতৃত্বকালীন কষ্ট যে একবার মা না হয়েছে সে পুরুষ ডাক্তারের বোঝা ও সম্ভব না। এই তো কিছুদিন আগে একই ক্লিনিকে চারজন প্রসূতিকে ভুল চিকিৎসায় মরতে হল, তাদের সবাই তো পুরুষ ডাক্তার ছিল। যা হোক! এখানে পুরুষ ডাক্তারদের বিশেদ্গার করছিনা, জাস্ট এতোটুকুই বলা- কিছু কাজ শুধু মেয়েদের জন্যই বরাদ্দ থাকা উচিৎ। 
অনেকে মেয়েদের ডাক্তার হওয়া মেনে নিলেও অন্য কোন প্রফেশনে মেয়েদের এলাউ করতে চান না। আর ডাক্তারের ব্যাপারেও অনেক বিচার যাই হোক তাল গাছ আমার বলা কট্টরপন্থীরা বলেন- জান বাঁচানো ফরজ, সুতরাং, ডাক্তার ও পুরুষ দেখানো জায়েজ। 
যা হোক! আরেকটা পেশা আছে, যেখানে মেয়েদের খুব খুব বেশী দরকার। সেটা হচ্ছে শিক্ষকতা। এখানে উদাহরণস্বরূপ, নবীপত্নী হযরত হাফসার শিক্ষিকা হযরত উম্মে আতিয়াহ (রা.) এর কথা ধরা যায়। এ ছাড়াও সে যুগে শিক্ষিতা একজন নারী অন্য আরও ১০ জনকে গড়ে তুলেছেন সন্তান শিক্ষা দেওয়ার জন্য। 
হযরত উমরের আমলে এই সাহাবীকে বাজার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। জি হ্যা! একজন মহিলাকেই। 
হযরত আসমা বিনতে ইয়াজিদ (রা.) একবার মহিলাদের তরফ থেকে একটি প্রশ্ন করেছিলেন নবীকে, তিনি বলেছিলেন- আল্লাহ আপনাকে পাঠিয়েছেন নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে নির্দেশ দিতে। আমরা আপনার উপর ঈমান এনেছি। 
কিন্তু নারী পুরুষের মধ্যে বড় পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। মহিলারা পুরুষদের মতো জুমা, জামাত, জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ করতে পারেনা। এমনকি হজ ও জিহাদেও সাধারনভাবে যোগ দিতে পারেনা। তারা ঘরে বসে সন্তান লালন পালন করে, ধন সম্পদ দেখাশোনা করে, পরিবার পরিজনের পোশাকের জন্য চরকা কাটে, কাপড় বোনে। মহিলারাও কী পুরুষদের মতো এসব কাজের পুণ্য পাবে?
এই মহিলার বাকরীতি শুনে রাসুল ও সাহাবারা বিস্ময় অভিভূত হয়েছিলেন। 
এখানে আমার সবচেয়ে যেটা লক্ষ্য করার মতো কথা মনে হয়েছে তা হল- আগে তো চরকা কাটতে হতো কাপড় বোনার জন্য। আগে এতো সুন্দর স্কুল কলেজ ও ছিল না, যে ছেলে মেয়েকে সারাদিনের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া যাবে। আগে কূপ থেকে পানি তুলে রাঁধতে হতো, কাপড় ধূতে হতো। এখন কল ছাড়লেই হাজার ট্রিলিয়ন পানি পাওয়া যাচ্ছে। আগে তো বাগানে সবজি করতে হতো, আটা পিষতে হতো যাতা দিয়ে। কিন্তু আগেও তো সময় ২৪ ঘণ্টাই ছিল, নাকি এরচেয়ে বেশী ছিল?
তাহলে আগের যেই সময়গুলো এখন বেঁচে যায় সেই সময়গুলো দিয়ে আজকের নারীরা করেটা কী?
সময় পাইনা অজুহাত তুলে দুই লাইন কুরআন একটা বই যারা পড়তে পারেন না, প্রতিবেশীর খবর নিতে পারেন না, আত্মীয়দের হোক আদায় করতে পারেন না, তাদের সেই সময়গুলো যায় কোথায়?
আর কোথাও না। তাদের সময় চলে যায় সিরিয়াল দেখতে দেখতে, তাদের সময় যায় অনলাইন শপিং স্টোরে চোখ বুলাতে বুলাতে, সময় যায় চ্যাটিং এ, সময় যায় পার্লারে, সময় চলে যায় মার্কেটে, সময় যায় পরনিন্দা করতে করতে। 
অথচ, আধুনিকতার কল্যাণে আমাদের যে সময়গুলো বেঁচে যায় তা দিয়ে সমাজ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করা। পুরুষ যদি অর্থনীতির ভীত গড়ে দেয়, নারীর প্রয়োজন ছিল নৈতিকতা বিনির্মাণ করার। 
যদি নারী অথবা ঘর ঠিক হতো তাহলে সন্তান অমানুষ হবার কথা তো ছিল না। যদি শিক্ষা বা নৈতিকতার চাষাবাদে নারী অগ্রাধিকার পেতো তাহলে তো পরিমলদের জন্ম হবার কথা ছিল না।
নারীর জন্য কোন ভালো কাজের সৃজন করা হয়নি। তাই সাঁজতে সাঁজতে নারী একদিন ভেবেছে, এই তো আমার কাজ। সেজে শুধু ঘরে থাকবো কেন? দুটো পয়সা পেলে ক্ষতি কী!
তাই তো শোকেসগুলো ঘরের বাহিরে এসেছে, আর লাইব্রেরিগুলো ঘরেই পড়ে আছে।


আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)