ধর্ম ও গবেষনা

প্রাণ খুলে চাই তাঁর কাছে

প্রাণ খুলে চাই তাঁর কাছে

একজন মুসলমান হিসেবে আমার কাছে সবচে লোভনীয় আ'মল মনে হয়, 'দু'য়া'। এর মধ্যে অনেকগুলো ম্যজিক আছে। কি কি?

১। দুয়ায় পাওনা বাড়ে। চাইলে আল্লাহ দিবেন, আল্লাহর ওয়াদা। যে ভাবেই হোক, যে রকমেই হোক। এটা যে দুয়া করে, সে টের পায়। আজ এই মুহূর্তে আমার ঝুলিতে এমন অনেক কিছু আছে, যেটা, আলহামদুলিল্লাহ, হবার ছিলো না। দুয়ার অনিশ্চিত মুহূর্তগুলো মনে আছে শুধু। মনে হয়, আরও চাইতাম যদি। আমি ক্ষুদ্র, যাঁর কাছে চাইছি তিনি ত সর্বোত্তম ধনী! তাঁর দয়া তো সবচেয়ে বেশী।

২। দুয়া পথ দেখায়। একটা অপছন্দনীয় কাজ, ছাড়তে না পেরে যখন সাহায্য চাই, 'আল্লাহ আমাকে আমার হাত থেকে বাঁচান,প্লীজ!' কেমন করে যেন, সেই কাজটার নেশা আস্তে আস্তে কমে। এটা মনে হয় ভেতর থেকে একটা প্রতিরোধ জন্ম নেয়ার কারণে হয়।

৩। দুয়া একটা মারাত্নক ক্যালকুলেটর। এতে শুরুতেই গুণ হয়, যোগ না, গুণ। শুধুই বাড়ে বাড়ে বাড়ে। যা যা আমার চাই, আমি একার জন্য চাইলাম, আল্লাহ দিবেন হয়ত। আর যদি সেইটা আর কারুর জন্য দুয়া করি, আল্লাহ তাকে দিবেন, আমাকে দিবেন, আর তার জন্য চাইছি এজন্য আমাকে আরও বেশী দিবেন। আমি নিজেই এটার অনেক প্রমাণ দেখেছি।

৪। দুয়া সম্ভবত শয়তানের খুব অপছন্দের কাজ। কি অদ্ভুত বুদ্ধি করে যে দুয়া করার কথা ভুলায় দেয়, অবাক লাগে।

৫। ইচ্ছেমতো ভাষায় দুয়া করা যায়। কিছু আরবী দুয়া আমার খুব ভালো লাগে। বাচ্চারা সহ মুখস্থ করি। তবু, আল্লাহর কাছে চাইতে গেলে কিছুক্ষণ মুখস্থ দুয়া বলার পর, নিজের মনের মধ্যে লুকানো কথাগুলো আমার ভাষায়ই বের হয়। কি শান্তি! একটা সত্ত্বা, নিরবে শুনেন, ভাবতে ভালো লাগে। ভাবতে ভালো লাগে, ইচ্ছেমতো জায়গায় 'কুন' বলে বদলে দিচ্ছেন, আমার হাত ভরে দিচ্ছেন।

একা হাঁটার সময়, ঘরের কাজের সময়, চুপ থাকার সময়, মুখে অনর্গল দুয়া করতে চাই। ভুলে গেলে, মনে পড়ার সাথে সাথে আবার শুরু করি। সবচে কষ্ট দেয়া মানুষটাকে নিয়ে যখন দুয়া করি, আস্তে আস্তে নিজের মধ্যের ঋণাত্নকতার দুষ্ট পাজী মানুষটা নড়বড়ে হতে থাকে।


আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)