সাহিত্য

করুণা

করুণা
পর্ব- ২ অনেকদিনের ইচ্ছে ঐ মাঠে ঐসব পিচ্ছিদের সাথে আমি খেলব। কানামাছি, বৌছি, গোল্লাছুট...... ওরা কতো মজা করে খেলে, সবাই একসাথে হাসে, দিনান্তে দল বেঁধে ঘরে  ফেরে। আমি প্রতিদিন জানালা দিয়ে ওদের খেলা দেখি, যখন ট্রেন আসে, তখন ওরা আড়াল হয়ে যায় আবার ট্রেণ চলে গেলে আবার ওদের কে দেখি, অনেকটা লুকোচুরির মতো......... হাহাহাহা বিস্তৃত খেলার মাঠ জুড়ে কিশোর কিশোরীদের আনাগোনা, ওরা খেলা নিয়ে মত্ত ওদের কাছে একেবেকে হেটে যায় সে, মৃদু স্বরে বলে, -আমায় খেলতে নিবে? হৈ হল্লা চিৎকার চেচামেচিতে ওর কথা কারো কানে ঢোকেনা, খুব জোরে চিৎকার করে , -তোমরা আমার কথা শোননা কেন? দুজন ওর কাছে আসে, -কিছু বলছো? হ্যা সূচক মাথা নাড়ায় ও, ওরা একে অপরের দিকে তাকায়, একজন বলে, -কী! -নাম কী তোমাদের? -আমার নাম মৌমিতা, আর ওর নাম মাঈশা। তোমার নাম কী? -জানিনা! মাঈশা মৌমিতা অবাক হয়ে ওর সর্বাঙ্গ দেখে নেয়, অবাক হয়ে শুধু দেখতেই থাকে, ও মাথা চুলকায়, মলিন বেশ টানাটানি করে, শিশু সূলভ ভঙ্গিতে, -আমি তোমাদের সাথে খেলবো! ওরা দুজন আরো অবাক হয় এতোবড় মানুষ ওদের সাথে খেলতে চায় বলে, মাঈশা অবাক কন্ঠেই বলে, -তুমি থাকো কোথায়? ওর হাস্যকর ভঙ্গি দেখে দুজন মিটিমিটি হাসে, ও নিজেও হাসে, -ঐ যে দেখছোনা রেললাইন পার হয়ে দুরে যে ঘরটা, ওটাতে আমি থাকি। -ওমা ওখানে আবার কেউ থাকে নাকী, ওটাতো কোন পাড়াও নয়, একটা মাত্র ঘর, তুমি একা থাকো?! -হুম, তোমরা আমায় খেলতে নিবেনা তাইনা? মৌমিতা উচ্ছসিত কন্ঠে, -না না তা নয়, নেবোতো, কিন্তু আজতো সন্ধা হয়ে গেছে! কাল এসো খেলবো। তার আগে আমরা তোমার একটা নাম দিই, কি বলিস মাঈশা? মাঈশা সম্মতি জানায়, কিন্তু ও হাসতে থাকে, অট্টহাসি দিতে থাকে, এবার আর মুর্ছা যায়না, হাসি থামিয়ে, -দাও! -তোমার নাম, মিতালী, আজ থেকে তুমি আমাদের বন্ধ্‌ তাই তুমি মিতালী... -......... বড়ো বড়ো চোখ বানিয়ে ওদের পেছনে দাড়ানো অগনিশর্মা লোকটিকে দেখে মিতালী, কিছু বলতে চেয়ে বলতে পারেনা। মাঈশা মৌমিতাও পেছনে তাকায়, ওরা সমস্বরে, -বাবা! -এখানে কী?! -না বাবা এমনি! -চলো এখান থেকে, আসলে তোমাদেরকে বাইরে বের হতে দেয়াটা উচিত না এসো! ওরা কাঁচু মাচু হয়ে বাবার পিছুপিছু চলে যায়। মিতালী অনেক্ষণ ওখানেই দাড়িয়ে থাকে। চলবে.....................

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)