অনির্ধারিত

আবদ্ধ রুটিন

আবদ্ধ  রুটিন

সূর্য অস্ত যাবার সময়, আর পাখিদের নীড়ে ফিরবার সময়ে বেশ কিছু ঘুড়িও আকাশ পানে ছোটে। সেদিন ছাদে গিয়ে বুঝলাম ডানা মেলে উড়বার এই শখ শুধু কিশোরদের নয়, পুরুষদেরও আছে। এই দুশ্চিন্তাগ্রস্থ জাতি ভাইরাস ভূলবার নেশায় বেশ অনেক কিছু করে যাচ্ছে। শহুরে জীবনে পাল তোলা নৌকা নেই, সাতার কাটার পুকুর নেই। ঘর থেকে বেরুতে না পেরে মানুষ ইদানিং প্রযুক্তিমুখি হয়ে উঠেছে। এই প্রযুক্তিই যাদের কাছে অকারণ মনে হতো, এখন ভিডিও কনফারেন্সে তাদের হাসি হাসি মুখখানা দেখা যাচ্ছে! ঘরে থাকতে না চাওয়া পুরুষ সারাদিনমান ঘরেই সময় দিচ্ছে, খু...সুঁটি, বাচ্চাদের সাথে খেলা, বাথরুম পরিস্কার করা কেউ কেউ এই ফাঁকে রান্না শিখে ফেলছে।

যে নারী শাড়ি পরতে বিরক্ত বোধ করতো, সেই শাড়ি পরে ঘরময় ঘুরে বেড়াচ্ছে। ? বিকেলটা বাইরে কাটানো কিশোর ঘরে বসে নতুন খেলা খেলছে। রান্নাঘরে নতুন নতুন রেসিপির ফ্লেভার পাওয়া যাচ্ছে। ফোনেও যাদের খোঁজ নেয়া হতো না যোগাযোগ বেড়েছে তাদের সাথেও। শিশুরা তাদের বাবা-মা কে একসাথে দেখছে! কাজের বুয়াদের যে ছুটির প্রয়োজন ছিলো, পাওনা ছিলো তা তারা পেয়ে গেছে। পৃথিবী বদলে গেছে, উল্টে গেছে জীবনের ছন্দ।

আসলে এই এতো কিছুর কারণ কী জানেন? পাওনা! যার কাছে যার যেমন পাওনা ছিলো তা মিটিয়ে ফেলা। মানুষ কেউবা কারো কাছে সময়ের পাওনাদার ছিলো পেয়ে গেছে। কেউ বা কারো কাছে বিশ্রামের পাওনাদার ছিলো মিটিয়ে ফেলেছে, খাদ্যের পাওনাদার ছিলো, পরিচ্ছন্নতার পাওনাদার ছিলো সব মিটিয়ে ফেলা হচ্ছে। ঋণে ঋণে জর্জরিত (যে কোন কিছুর) এ মানব জাতি ঋণ মেটানোর সুযোগ পেয়েছে। অথচ এরপরও যারা আরো বেশি ভোগ করবার নেশায় আছে, তাদের জন্য আল্লাহর ফায়সালা স্পষ্ট!

আসুন আমরা কিছু সময় ভাবি, পুরোনো দেনা, ঋণ হক্বদারের হক্ব আদায় করি / মিটিয়ে ফেলি। গালাগাল, অশোভন আচরণ এর জন্য ক্ষমা চেয়ে নিই। আসলে জানিনা কি এক শংকিত ইতিহাসের স্বাক্ষী হচ্ছি আল্লাহই ভালো জানেন!

রব্বুল আ'লামীন আমাদেরকে ক্ষমা করে দিন, এইটুকু চাওয়া। ফিরবার পথ যেন কোমল হয়, সুগন্ধ বেরোয় যেন রুহ থেকে!


আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)