মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ

One Bangladesh Campaign এর মাধ্যমে আমরা কি ছড়িয়ে দিতে চাই?

One Bangladesh Campaign এর মাধ্যমে আমরা কি ছড়িয়ে দিতে চাই?
মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব তার কর্মে, চিন্তায়, আচরণে, মনুষ্যত্বে। ধর্ম, ভাষা, লিঙ্গ, জাত-বংশ, বর্ণ, গোত্র, রাজনৈতিক পরিচয়ে নয়। সুতরাং এসবের ভিত্তিতে যে শ্রেষ্ঠত্বের অহংকার বা একে অন্যকে সাবজুগেইট করার চিন্তা তা সমাজে হানাহানি বৃদ্ধি করবে। সহাবস্থান স্বীকার করে নেয়া, আচরণে সহিষ্ণুতা, ভিন্ন সংস্কৃতিকে সম্মান করতে শেখা এসবই এ সমস্যা উত্তরণের উপায়। আমাদের আইডেন্টিটি কি হবে, কিসের ভিত্তিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ হবো, আমাদের মধ্যে মিল কোথায়? ধর্মে? ভাষায়? আঞ্চলিকতায়? সংস্কৃতিতে? কোন পরিচয়টি সার্বজনীন? যা দিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করা যায়। তা হচ্ছে আমরা সবাই বাংলাদেশী। আমরা সবাই এ ভূ-খন্ডের অধিবাসী। সুতরাং এর ভিত্তিতেই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পথ খুঁজে পাওয়া যাবে। যেখানে ধর্ম, ভাষা, জাত-বংশ, বর্ণের ভিত্তিতে কারো শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশিত হবে না। বাংলাদেশে বসবাসকারী সকল মানুষ সমান বলে বিবেচিত হবে। শিক্ষা এবং অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ দেশ গুলোতে তুলনামূলক জাতিগত হানাহানি কম। হানাহানি অস্থিরতায় আক্রান্ত দেশগুলো অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে আছে। একটার সাথে আরেকটার কার্যকারণ সম্বন্ধ আছে। সুতরাং প্রাথমিকভাবে দ্বন্ধ-হানাহানি কমলেই কেবল আমরা সমৃদ্ধির পথে চলতে পারবো যা দীর্ঘমেয়াদে হানাহানি কমিয়ে দিবে। ঘৃণা ঘৃণাই ডেকে আনে। নির্মূল অভিযান নির্মূলের পথ-ই প্রশস্থ করে। আমরা সত্যিকার অর্থে কেউ কাউকে নির্মূল করতে পারবো না। সেটা স্বাভাবিক ও না। এ ধরণের হঠকারিতা মূলক চিন্তা শুধু অস্থিরতাই বাড়াবে। সুতরাং জাতিগত কিংবা রাজনৈতিক পরিমন্ডলে ঘৃণা চর্চা নয় সহনশীলতা জরুরী। ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় সহনশীলতার দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি আমরা। কারো কোন ক্রিয়ার বিপক্ষে প্রতিক্রিয়া জানাতে হলে তার যথাযথ ভদ্রোচিত পন্থায় জানানো প্রয়োজন। একে অপরকে গালাগালি করা, শারীরিক মানসিক ভাবে আঘাত করা যার যার আদর্শ সম্পর্কে অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। গালাগালি চরমপন্থার প্রথম ধাপ। সন্ত্রাস তার চুড়ান্ত পর্যায়। যারা কারো কোন কথার জবাবে যৌক্তিক কথা না বলে গালি দেয় বুঝতে হবে সে চরমপন্থী। সব চরমপন্থীই গালিবাজ নয়, কিন্তু সব গালিবাজরাই চরমপন্থী। চরমপন্থার চুড়ান্ত পর্যায় সন্ত্রাস। সব চরমপন্থীরা অবশ্য সন্ত্রাসী হয় না, কিন্তু সব সন্ত্রাসীরাই চরমপন্থী। যারা কারো কোন লিখার জন্য তার উপর আক্রমণ করে তারা যেমন চরমপন্থী তেমনি যারা অন্যের ধর্ম বা বিশ্বাসকে অযথা অশ্লীল বাক্যবানে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে তারাও চরমপন্থী (অবশ্য একাডেমিক আলোচনা এর মধ্যে নয়)। যারা নিজের মত-পথকে শ্রেষ্ঠ মনে অন্যকে হেয় প্রতিপন্ন করে, নির্যাতন করে আনন্দ পায় তার মধ্যে উগ্রতা আছে যা সমাজের জন্য ক্ষতিকর। সহনশীলতা, সহমর্মিতা আর সহাবস্থানের এই আহবান গুলো আমরা ছড়িয়ে দিতে চাই তরুনদের মাঝে।

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)