# পাখি উড়তে পারে তাই মানুষ পছন্দ করে। আদর করে কাছে ডাকে। পাখি সাড়া দেয়; কাছে আসে। একসময় সেই মানুষ-ই তার ডানা কেটে দেয়। হয়তো অতিমাত্রার ভালোবাসায় মোহাচ্ছন্ন প্রেমিক তাকে অহর্নিশ কাছে পেতে চায়। কিন্তু পাখিটার উড়বার আবেগকে অনুভব করার বোধ তার থাকে না।
# একটা মানুষ সবার সাথে হাসি মুখে কথা বলে। মমতায় ভরা আবেগ নিয়ে মানুষের সাথে মিশে। এতেই সে আনন্দ পায়; মানুষও তাকে পছন্দ করে। তার এই গুণের কারনেই কেউ একজন তাকে পছন্দ করলো; বন্ধুত্ব হলো। তারপর সে আর সহ্য করতে পারে না "তুমি কেন সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলো! শুধু আমার সাথে হাসবা; বাকী সবার সাথে গোমড়া মুখে ভেংচি কাটবা, কারো খবর ও নিতে পারবা না"। হয়তো অতিমাত্রার ভালোবাসার অন্ধ মোহে বন্ধুটি এ আচরণ করছে। সবার সাথে হাসি মুখে কথা বলার, খবর নেয়ার তার যে আবেগ এটা উপলব্ধি করবার মতো বোধ দ্বিতীয় জনের হয়ে উঠে না।
# আবার কেউ কেউ এমন--বিয়ে করার আগে খোঁজে পাত্রী ভালো স্টুডেন্ট হওয়া চাই; ভালো সাবজেক্টের ছাত্রী হওয়া চাই। কথা শুনে সেই পাত্রী খুশি হয়; আমাকে বুঝার কাউকে পাওয়া গেলো। তারপর দেখা গেলো---বিয়ের পর হাজবেন্ড আর পড়তে দিতে চায় না। কি দরকার মাস্টার্স করার, পিএইচডি করার!! যথেষ্ট হয়েছে। কিন্তু পড়াশুনার প্রতি এই মেয়ের যে দীর্ঘ দিনের আবেগ-ভালোবাসা তা এই স্বামী অনুভব করতে পারে না।
এই যে শুধু নিজের আবেগ কে বুঝা; অন্যের আবেগ বুঝতে না পারা; আবেগের ফারাক করতে না জানা; অন্যের আবেগ কে শ্রদ্ধা করতে না জানা; নিজের আবেগ-বুঝ কে উত্তম মনে করা; অন্যের আবেগকে ভুলভাবে লেবেলিং করা এসব তার চিন্তা, কর্ম এবং সামাজিক আচরণকে ও নিয়ন্ত্রন করে। যার ফলশ্রুতিতে তৈরি হয় নানবিধ সমস্যা এমনকি চুড়ান্ত পর্যায়ে সম্পর্কে ছন্দপতন। এটা পারিবারিক, সামাজিক, বন্ধুত্ব যেকোন সম্পর্কের ক্ষেত্রেই হতে পারে।
এর কারন হিসেবে স্কলাররা বলেছেন এটা হচ্ছে "Lack of Emotional Intelligence". আগে যেমন মনে করা হতো যার IQ যতো ভালো সে ততো পরিবেশের সাথে অভিযোজিত হতে পারে এখন বলা হচ্ছে শুধু IQ না- তার সাথে Emotional Intelligence (EI) থাকা উচিত। EI এর ঘাটতি তাকে সমাজের মানুষের সাথে মিশতে বাধাগ্রস্থ করে।
তাই বাচ্চার IQ এর পাশাপাশি EI বাড়ানোর প্রচেষ্টা ছোট বেলা থেকেই শুরু হওয়া উচিত। যদিও আমাদের একাডেমিক পড়াশুনায় এই কনসেপ্ট টা এখনো যুক্ত হয়নি।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)