সাহিত্য

শত কোটি গল্পের ভীড়ে

শত কোটি গল্পের ভীড়ে
th শেষ পর্ব ঈশাণ ফজরের নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে ফিরে আসে। আনিকা নামাজে দাঁড়িয়েছে। ওর নামাজ পড়া খুব মনোযোগ দিয়ে দেখে ঈশাণ। মন ভরে যায়, দৃষ্টি জুড়ে ভেসে ওঠে অজস্র প্রেম। নিজেই মুচকী হেসে ভাবে, এই মেয়েটাতো দেখছি আমার সব মনোযোগ মূহূর্তেই কেড়ে নেয়, আমার মস্তিষ্ক, মন সবটায় কেন যে ওকে নিয়ে স্বপ্ন বোনে বুঝিনা! এবার নিজেকে সামলায়, খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা কল করতে হবে, ভূলে গেলে চলবেনা, দ্রুত নিতাইয়ের নাম্বারে কল করে, কিন্তু নিতাই ধরছেনা, আনিকা ঈশাণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে অনুভব করছে ঈশাণের অস্থিরতা, বারবার কল করছে, দেখে বললো, -বেশী টেনশন নিয়োনা প্লিজ!  তুমি তো খুব ধীর স্থীর ভাবে সবটা সামলে নিতে পারো! -হুম আনিকা, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই, কিন্তু ঠিক এমুহুর্তে আমার খুব অস্থির লাগছে, অদৈত শিফট করার পর থেকে ওর কোন খোঁজ নেই, নিতাই ঠিকানাটা জানিয়েছিলো কিন্তু পুলিশ আজ অব্দি খুঁজে পেলোনা। ঈশান বসা অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা আনিকাকে দু বাহুতে জড়িয়ে নিয়ে নিজের মুখটা লুকিয়ে ফেলে, আনিকা ম্লান হেসে ওর চুলে বিলি কেটে দেয় নিচু কন্ঠে, -ঈশান! -হুম! -মা রান্নাঘরে একাকী! তোমার জন্য চা নিয়ে আসি? -কেন ভাবী আছেনা? -না ভাবী একটু অসুস্থ -আর দু মিনিট থাকো! -ঠিক আছে। আনিকা শাশুড়ী মাকে হেল্প করতে রান্নাঘরে ঢোকে, এদিকে ঈশান নিতাইকে ফোন করেই যাচ্ছে কিনতু নিতাই রিসিভ করছেনা। হঠাৎই নিতাই কল ব্যাক করে, রিসিভ করে কিছু বলার আগেই নিতাই নিজেই এক নাগাড়ে বলে যায় ওর ব্যাস্ত ও ফিসফিসানো কন্ঠ, -সামাদ অদৈতকে খু... কে পালিয়েছে, সামাদের গার্লফ্রেন্ডের সাথে এক বিছানায় অদৈত বেলেল্লাপনা করছিলো, তখন সামাদ খু... করে পালিয়ে যায়। তুমি সাবধানে থেকো ঈশান, সামাদ তোমাকেও খুঁজছে, মারবে বলে বেশী কিছু বলতে পারবোনা। পুলিশ এসে চারেদিকে ঘিরে ফেলেছে, একজন অফিসার আমাকে শাস্তি দিবেননা বলেছেন তুমি নাকী আমার ব্যাপারে বলেছো। থ্যাঙ্কস ঈশান আমি শীঘ্রই তোমার কাছে আসবো। চায়না দিদির মতো সৌভাগ্য অর্জন করার জন্য, আমার স্ত্রীকে নিয়ে............... ঈশান কিছু বলার আগেই কেটে দিলো ওপার থেকে। আনিকা চা নিয়ে ভেতরে ঢোকে ঈশান তড়িৎ গতিতে উঠে দাঁড়ায়, আনিকার হাতের ট্রে নিয়ে বেড সাইটে রেখে দিয়ে আনিকাকে পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়ে মুচকী হাসে, দ্রুত কন্ঠে বলতে থাকে, আনিকা আমি আজ খুব খুউউউউউব খুব খুশি।  আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ....................................... আলহামদুলিল্লাহ! জানো আনিকা নিতাই মুসলমান হতে চায়!...... আনিকা প্রাণ ভরে ওর আনন্দটাকে উপভোগ করে, ওর মুচকী হাসিটাকে অপলক তাকিয়ে দেখে। মুচকী হাসিতে ঈশানকে সবসময় আনিকার কাছে দুনিয়া সেরা হ্যান্ডসাম যুবক মনে হয়। এতো সুন্দ কেউ হয় কখনো! আনিকা নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে। ঈশান বললো, -চা এখানে খাবোনা চল সবার সাথে। আনিকা ট্রে নিতে গেলে ঈশান বাধা দেয়, -উহু আজ তোমার সব কাজ আমি করবো, আর দুপুরের রান্নাটাও। সান্ধ্য আয়োজন সম্পন্ন হলো।  ছাদের এক কোণে দাঁড়িয়ে দুজন। ওমরা করতে যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হানিমুনে যেতে হবে বলে মুরুব্বীদের তাগাদা। ঈশাণ আনিকা সিন্ধান্ত নেয় পরবর্তী জীবনের জন্য পর্যাপ্ত পুঁজি সংগ্রহের, যেন ওপারে গিয়েও  এই ভাবে একসাথে থেকে দুজন দুজনকে ভালোবাসতে পারে। (সমাপ্ত)

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)