
(আগের পিক খুঁজে পাচ্ছিনা)
২৫
অদৈত লিজার পাশে বসে কথা বলছে। আব্দুস সামাদ হন্তদন্ত হয়ে প্রবেশ করে,
-অদৈত দা আজ একটা কার্ড পেয়েছি। কার্ড দিয়ে অস্ত্রের ডিজাইন তৈরী করা আমার নেশা। কার্ডটা রাস্তায় পড়ে ছিলো... মানে আফসার উদ্দিনের বাসার সামনে.........
অগ্ণিশর্মা হয়ে যায় অদৈত দাঁতে দাঁত চেপে,
-সামাদ তুমি যত দ্রুত ভেতরে ঢুকলে মনে হলো খুবই জরুরী কথা, কিন্তু যা বলছো তার সাথেতো তোমার ভঙ্গিরও মিল নেই আবোল তাবোল কথা পরে বলো......নিতাই ভেতরে ঢুকে ওদের কথা গুলো শুনছে......
-আবোল তাবল না দাদা! ঈশাণ মুসলমান!
নিতাই অকস্মাত চমকে উঠে,
-আরে ধুর! তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে.....।।অদৈত পারলে যেন একটা থাপ্পড় লাগায় সামাদকে, অত্যধিক রেগে,
-তোমার কী মাথা খারাপ! নেশা করে এসেছো?! শুরু করলে কী দিয়ে আর বলছো কী! ধীরে সুস্থে বলো!
আব্দুস সামাদের গলা কাঁপছে একা বিয়ের কার্ড বের করে,
-এই দ্যাখো, আফসার উদ্দিনের মেয়ে আনিকা আর ঈশাণের বিয়ে ঈশাণের নাম এহতাশিম বিল্লাহ ঈশাণ! নিতাই বিচলিত হয়ে গেছে নরম কন্ঠে,
ঈশাণ কী শুধু একজনই আছে সামাদ? ঈশাণের নামতো ঈশাণ চক্রবর্তী।
আব্দুস সামাদ মৃদু স্বরে,
-আমি চাই আমার ধারণা মিথ্যা হোক, কিন্তু ওর চলাফেরা কথাবার্তা সবটা...... একটু থেমে যেন অন্যরকম, আর এইযে কোন কাজই সফল হচ্ছেনা তার পেছনে ঈশাণেরই হাত আমার তাই মনে হয়......... অদৈতর চোখ লাল হয়ে গেছে সামনে টি টেবিল চাপড়ায় সে,
-ঈশাণের নামে আর একা কথাও নয়!
লিজা এবার বললো,
-তোমার জন্য একটা ভয়ংকর খবর আছে, সেদিন বাসে চায়নাকে দেখেছি হাতে ছিলো মুসলমানদের হাদীস বই। অদৈত অস্থির কন্ঠে,
-আমি কী শুনছি এসব! হায় ভগবান......... খানিক্ষণ চুপ থেকে,
চায়না এমন কিছু করে থাকলে ওকে আমি নিজের হাতে খু... করবো! নিতাই কালকের মধ্যে চায়নার খবর আমাকে দেবে। অদৈত চিন্তিত কন্ঠে,
-লিজা ডিনার রেডী করো!
আব্দুস সামাদের কথা অদৈতকে দূর্বল করে দিয়েছে, অনেক বিমর্ষ হয়ে চুপ করে থাকে বেশ কিছুক্ষণ!
২৬
অনেক ঝড় ঝাপ্টা পেরিয়ে ঈশাণ আর আনিকার বিয়ে আজ, আনিকার ভাই নাফিজের বিয়ের অনুষ্ঠানটাও একসাথে পাড়ি দিচ্ছেন আফসার উদ্দিন। সমস্ত ফরমালিটিজ শেষে বর ভেতরে ঢোকে। নিতাইকে সাথে নিয়ে সামাদ এসেছে ব্যাপারটা দেখতে। নিতাই হঠাৎই বরের বেশে ঈশাণকে দেখে ফেলে, ও অবাক হয়ে যায় কিন্তু আব্দুস সামাদের দৃষ্টি এড়াবে কি করে? কিছু বলতে গিয়ে থমকে দাঁড়ালো, সে দেখতে পেলো ঈশাণ ভেতরে ঢোকার সাথে সাথে একই বেশে আরও একজন! আর নিতাই মনে মনে ঈশাণকে "দ্যা গ্রেট" বলে একটা স্যালুট দিয়েই দিলো! আর আব্দুস সামাদ এগিয়ে গেলো সেদিকেই। নিতাই বললো,
-তুমি দেখে এসো সামাদ, আমি অপেক্ষা করছি। নিতাই হুট করেই চায়নাকে দেখে ফেলে, সম্পূর্ণ ভিন্ন পোশাকে, একটু চমকেই ওঠে ওদিকে যাওয়ার আগেই সামাদ এগিয়ে আসে। ওর ভ্যাবাচ্যাকা চেহারা দেখে নিতাই মুচকী হাসে, বলে,
-কী দেখলে?
-আরে না ভূল দেখেছি, চলো যাই। ওরা চলে যায়।
সাদিয়া (চায়না রাণী বর্মণ) আনিকার কাছে গিয়ে বসে, মুচকী হেসে,
-সো লাভলী আনিকা! কে সাজিয়েছে তোমার বোন মণিকা?
-না দিদি ও তো সকাল থেকে কেঁদেই যাচছে, পার্লার থেকে এসেছিলো বসো দিদি! মণিকা আনিকাকে জড়িয়ে ধরে বসে আছে। সাদিয়া বসে,
-আনিকা তোমার বরের নিক নেম ঈশাণ দেখলাম!
-হ্যা দিদি ওর নাম ঈশাণই। তুমি এখনও জানোনা যে কোন ঈশাণ! ওর নিরাপত্তার জন্য জানানো হয়নি। সাদিয়ার মুখ ঈষৎ হা হয়ে যায়, দৃষ্টিও খানিকটা বড় অবাকের পরিমান বেড়ে যায়,
-মানে তুমি কী বলতে চাইছো ঈশাণ চক্রবর্তী! অ মাই গড! ও মুসলমান?
ঈশাণ আর আনিকা মুখোমুখি বসে আছে। ঈশাণ আনিকার ভেজা চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। কিছুক্ষণ আগে ওরা ফজরের নামাজ আদায় করেছে। আনিকা ঈশাণের দেয়া নুপুর গুলোতে হাত রেখেছে ,
-খুব সুন্দর ঈশাণ!
-সত্যিই কী? কি জানি আমি অনেক ডিজাইন দেখে এটা চুজ করেছি।
-আমার খুবই পছন্দ হয়েছে।
-যাক আলহামদুলিল্লাহ্। চলো সানরাইজ দেখবে?
- হ্যা অবশ্যই! চলো। চলবে............
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)