ফিল্ম ও মিডিয়া

বিজ্ঞাপন নাকি স্লো পয়জনিং

বিজ্ঞাপন নাকি স্লো পয়জনিং
lux আচ্ছা! সাবানের গন্ধ কি এতোটাই পাগল করা? আর লাক্স সাবান শরীরে ব্যবহার করলেই কি মানুষ রাস্তা ঘাটে লিফটে মানুষ থেকে বন্য প্রাণী হয়ে যায়? আচ্ছা! মানলাম! নাহয় হলোই । কিন্তু তাই বলে কি সেটা সারাক্ষণ টিভিতে দেখাতে হবে? ইদানিং একটা বিজ্ঞাপন খুব বিরক্তিকর মনে হয়। ইমরান আর দীপিকার লাক্স সাবানের বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপন না বলে হিন্দি সিনেমার গানের দৃশ্য বলাই ভালো মনে হয়। দেশের পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে ঘরে ঘরে বাংলা চ্যানেলগুলো দেখার প্রবণতা বেড়ে যায়। আর সারাক্ষণ খবর জানার আশায় চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকা নবীন প্রবীণ চোখগুলো পরিবারের সব সদস্যকে নিয়ে টিভি সেটের সামনে বসে লাক্সের এই বিজ্ঞাপন দেখে মেয়ে সদস্যদের সামনে চোখ লুকায়। এই বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর এইসব বিজ্ঞাপনগুলো অনেকটা স্লো পয়জনিং এর মতো মনে হয় আমার কাছে। যে পরিবারে মা বোন মাথায় কাপড় বুকে ওড়না দিয়ে সারাক্ষণ ঘরের ভেতর চলাফেরা করে, সেই পরিবারের টিভি স্ক্রিনে কথায় কথায় এমন হিন্দি গানের দৃশ্যের অবতারনা , সেটা নিশ্চয়ই সুখকর নয়! এগুলো আস্তে আস্তে মানুষের দৃষ্টিকে অশ্লীলতা সহায়ক হিসেবে প্রস্তুত করে নেয়। বিজ্ঞাপনের মেয়েটির পোশাককে সার্বজনীন করে নেয়। আমি জানি, অনেকেই চোখ ফিরিয়ে নেয় লজ্জায় এসব বিজ্ঞাপন দেখে। আবার অনেকেই অবচেতন মনে দেখে ফেলে। কিন্তু অনেকেই মনোযোগ দিয়ে দেখে। কারন এটা তাদের দৃষ্টিতে ধীরে ধীরে একটি সাধারণ দৃশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো ও দিন দিন এই তালিকায় চলে যাচ্ছে। একটা মেয়ের শরীরটাই যেন মুখ্য, এবং একমাত্র দর্শনীয় বস্তু। যখন হোম পেইজে অর্ধ উলঙ্গ নারীর একাধারে অনেকগুলো ছবি ভেসে ওঠে, আর কম্পিউটার মনিটরের সামনে নিজের বাপ ভাই দাড়িয়ে থাকে, তখন মেয়ে হিসেবে সত্যিই লজ্জিত বোধ করি। শুধু তাই নয়। শপিং মলে যেয়েও নিস্তার নেই। সানসিল্কের তরুণী ফ্ল্যাশমব আছেই রেডিমেড লাইভ বিনোদনের জন্য। কি অদ্ভুত না! রাস্তার মধ্যেও একদল মেয়ে নাচানাচি করে তথাকথিত ঝলমল চুল দেখানোর নামে অঙ্গ প্রদর্শনী যখন তখন হবে। এবং আমাদেরকে দর্শক হিসেবে সহ্য করতে হবে! আমাদের শ্রেষ্ঠত্বকে জানান দেওয়ার এটাই কি একমাত্র অস্ত্র? শুধুই সুন্দর শরীর আর সুন্দর মুখশ্রীই কি আমাদের যোগ্যতা? শরীর কি শুধুই অন্যকে আনন্দ দেওয়ার মাধ্যম? আর এই শরীরে যে মানবাত্মা বসবাস করে, সেই আত্মার যে কিছু চাওয়া পাওয়া আছে, আছে মেধা মননের উন্মুক্ত আকাশ, আছে মানবতাকে কিছু দেওয়ার যোগ্যতা সেসব কি শুধুই কেতাবি কথা! এই শরীর থেকেই যে বের হয়ে আসে, বের হয়ে আসছে আদম সন্তান, তার পবিত্রতার কি এতোটুকু দাম নেই? তার অঙ্গ সজ্জা জিলবাবে মোড়ানো নাই বা হলো কিন্তু তার এই দেহকে পুঁজি করে বাণিজ্য করে মায়ের জাতিকে কলঙ্কিত করার অধিকার তাদের কে দেয়! আল মাহমুদের মতো আমারও বলতে ইচ্ছা করে- তোমার আব্রু ঠিক করে নাও এই তো ছতর ঢাকার সময় কোথায় হারিয়ে এসেছ তোমার বুকের সেফটিপিন? আজ ইবলিশকে তোমার ইজ্জত শুকতে দিও না। পর্বতের দোহাই মেয়ে, দোহাই ঐ চিম্বুক পাহাড়ের ঢাকো তোমার বুক কারন সত্য ও মিথ্যার লড়াইয়ে আমরা হকের তালিকায় লিপিবদ্ধ

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)