সাহিত্য

মাহমুদ দারবিশের কবিতা ও স্বদেশভাবনা

মাহমুদ দারবিশের কবিতা ও স্বদেশভাবনা
60103_Shahitto-3 মাহমুদ দারবিশ কবিতা লিখছেন তার কৈশোরকাল থেকে, চল্লিশ বছরেরও আগে থেকে। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ আসাফির বিলা আজ্নিহা (বার্ডস উইদাউট উইংস) প্রকাশিত হয় ১৯৬০ সালে। তিনি বহুলপ্রজ এবং মর্মস্পর্শী কবি, তার কবিতাগ্রন্থের সংখ্যা ২০ এবং তিনি বর্তমান আরববিশ্বে যুক্তিসঙ্গতভাবেই সবচেয়ে জনপ্রিয় ফিলিস্তিনি কবি। অনুবাদের কল্যাণে তিনি পাশ্চাত্যেও সুপরিচিত, ২০০২ সালের এপ্রিলে ফিলাডেলফিয়ায় ল্যান্যান ফাউন্ডেশন তাকে ‘প্রাইজ অব কালচারাল ফ্রিডম’ দান করে। এ প্রতিষ্ঠানটি গঠিত হয় ১৯৯৯ সালে, লক্ষ্য কল্পনার স্বাধীনতা, অনুসন্ধান এবং মতপ্রকাশের মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অসাধারণ ও সাহসী কাজের স্বীকৃতি দেয়া। তার কাব্যসমগ্র দিওয়ান পড়লে যে কেউ সাথে সাথেই প্রগাঢ় প্রেমে আচ্ছন্ন হবেন, যা তার মূলভাব। কখনো কখনো এটা নারীর প্রতি প্রেম, হোক সে নামী বা বেনামী, বাস্তব বা কল্পিত, কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এটা হচ্ছে জন্মভূমি ফিলিস্তিনের প্রতি প্রেম, যদিও প্রায়ই তিনি এটাকে উপমায়িত করেন দয়িতা নারীর সাথে। দারবিশের কবিতার মধ্যে বাস করে ফিলিস্তিন, যা তার বেশির ভাগ কবিতাকে জীবন্ত করে তোলে; কিন্তু একই সাথে কবিতা তার স্বদেশও বটে, এর মধ্যেই তিনি বাস্তব ও স্মৃতির ফিলিস্তিনকে প্রাণবান করেন তার প্রত্যেক তাৎপর্যময় অনুপুঙ্খসমেত। সব আরবের কাছেই ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব অতি উচ্চ এবং তার মতো আনন্দদায়ক স্টাইলের প্রতি তাদের সহজাত আবেশের কথা জানা থাকলে বর্তমান আরববিশ্বে দারবিশের বিশাল আবেদন ও জনপ্রিয়তাকে যে কেউ সহজেই অনুধাবন করতে পারবে। দারবিশ জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪২ সালে বিরওয়ায়, সেটা উত্তর ফিলিস্তিনের অ্যাক্রির পুবে একটা ছোট্ট গ্রাম। ১৯৪৮ সালে ইসরাইল প্রতিষ্ঠিত হলে তার পরিবারকে তাদের গ্রাম থেকে বিতাড়িত করা হয়, তারা আশ্রয় নেন লেবাননে। আল-বিরওয়াকে আক্ষরিক অর্থেই মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়। এক বছর পরে তিনি জন্মভূমিতে ফিরে আসেন, থাকেন ইসরাইলের অধীনে অন্য একটি জায়গায়, সেখানেই বেড়ে ওঠেন। মাতৃভাষা আরবি ছাড়াও তিনি হিব্রু ভাষায়ও দক্ষ হয়ে ওঠেন। ১৯৬০ সালে হাইস্কুলের শিক্ষা শেষ করে তিনি হাইফাতে সাংবাদিকতা শুরু করেন। তার কবিতা, অন্যান্য লেখা এবং বামপন্থী রাজনৈতিক কর্মতৎপরতার কারণে তাকে অনেক ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের জেল এবং গৃহবন্দিত্ব ভোগ করতে হয়। শেষ পর্যন্ত ১৯৭১ সালে তিনি ইসরাইল ত্যাগ করেন, প্রবাস জীবন যাপন করেন কায়রো, বৈরুত ও তিউনিসে, তারপর প্যারিসে। তিনি ১৯৯৫ সালে আম্মানে এবং ১৯৯৬ সালে ফিলিস্তিনের কর্তিত অংশ পশ্চিম তীরে চলে যান। তিনি রামাল্লা থেকে আল-কারমিল পুনঃপ্রকাশ করেন, এই ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকাটি তিনি বৈরুত ও প্যারিস থেকে বের করতেন। একজন শিশুর ভিটে হারানো এবং তারপর ইসরাইলের অধীন নিজভূমে আগন্তুকের মতো বেড়ে ওঠার আঘাত ও যন্ত্রণা তার জীবনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে, তার ব্যক্তিত্বের ওপর এর প্রভাব ছিল খুবই গভীর; তার সকল কবিতা এবং অন্যান্য লেখায় এই ক্ষত প্রতিফলিত হয়েছে। ইসরাইলে থাকতে তিনি স্বদেশী ফিলিস্তিনিদের ক্ষতি এবং ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের সকল অবিচারের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধ লড়াই নিয়ে কবিতা লিখতেন। অবশ্য ইসরাইল ত্যাগ করার পর আরববিশ্বে বসবাস করার সময় তিনি আরব শাসকদের অগণতান্ত্রিক আচরণ এবং ফিলিস্তিনি স্বার্থের প্রশ্নে তাদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে তার মোহমুক্তি ঘটে। একমাত্র ফিলিস্তিনই তার বাসভূম তার এই বিশ্বাস আরো শক্ত হয়, তিনি অনুধাবন করেন যে সেটাই তার একমাত্র বাসভূমি, যা তার চিরকাল ছিল এবং থাকবে; কিন্তু তার শৈশব ও আদর্শবোধের ফিলিস্তিনের মৃত্যু ঘটে। ফিলিস্তিনের বিশাল অংশ ১৯৪৮ সালে ইসরাইলে রূপান্তরিত হয়, সেটা এখনো সেভাবেই থেকে গেছে। অন্য অংশগুলোর ইতিহাস বড্ড গোলমেলে : কিছু যুক্ত হয়েছিল পশ্চিম তীর নামে জর্ডানের সাথে, গাজা উপত্যকা শাসন করছিল মিসর। ১৯৬৭ সালে ইসরাইল সেগুলোও দখল করে নেয় এবং নতুন নতুন বসতি স্থাপন করতে থাকে। ১৯৯৩ সালে অসলো চুক্তির পর কিছু অংশ চেয়ারম্যান ইয়াসির আরাফাতের ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে অর্পিত হয় বটে, কিন্তু ইসরাইল বাস্তবে সেগুলোকেও আবার জবরদখলে নিয়ে বসতি স্থাপন করে। তিনি তার জনগণের জন্য যে স্বাধীন বাসভূমির আকাক্সা করেছিলেন, সব কিছুই তার থেকে অনেক দূরে চলে যায়। তার আদর্শ বাসভূমির জন্য লড়াই অবিরামভাবে প্রতিফলিত হতে থাকে তার কবিতায়। দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও ফিলিস্তিন বিষয়ে নিষ্ক্রিয়তা এবং ফিলিস্তিনিদের ওপর আরোপিত দুর্ভোগ ও অবিচারের প্রতি বিশ্ববাসীর উদাসীনতার কারণে হতাশ ফিলিস্তিনি ও আরব জনগণের আশা-আকাক্সার সোচ্চার কণ্ঠ হিসেবে তিনি জাতীয় প্রতীকের মর্যাদায় অভিষিক্ত হন। ১৯৮৪ সালে তিউনিসে প্রকাশিত হিসার লি মাদায়িন আল-বাহর (সমুদ্র নগরীর অবরোধ) কাব্যগ্রন্থের ‘রিহলাত আল-মুতানাব্বি ইলা মিসর’ (আল-মুতানাব্বির মিসর ভ্রমণ) শীর্ষক কবিতায় দারবিশ বলেন আমার মাতৃভূমি আমার সবচেয়ে নতুন কবিতাটি। কবি পরিপূর্ণরূপেই তার মাতৃভূমিকে তার কবিতার সাথে সমতুল্য করেছেন : তার নতুনতম কবিতাই তার স্বদেশভূমি, তার মধ্যেই তার বসবাস। ঐতিহাসিকভাবে বলতে গেলে তার প্রকৃত স্বদেশভূমি অবশ্য ফিলিস্তিন; কিন্তু যতক্ষণ তিনি কবিতা লিখে চলেছেন ততক্ষণ তার স্বদেশ তার প্রতিটি নতুন কবিতার মধ্যে অস্তিত্ববান হয়ে উঠছে। এমনকি কেউ যদি তাকে বলে যে তার জন্মভূমি তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে তাহলে তিনি তার উত্তর দেন আরেকটি কবিতা লিখে, এভাবে তিনি তার স্বদেশকে পুনরায় অর্জন করেন সেইসব স্মৃতিকে আবাহনের মাধ্যমে যা ধ্বংস করে ফেলতে চায় তার শত্রুরা। আত্মপরিচয় ও জন্মভূমির সাথে সংশ্লিষ্ট এবং পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ভাষা, নৈতিকতা, আদর্শসহ সকল সাংস্কৃতিক-ঐতিহাসিক বাস্তবতাকে স্মৃতি সংরক্ষণ করে। ১৯৮৯ সালে লন্ডনে প্রকাশিত ‘মা’সাত আল-নারজিস ওয়া মালহাত আল-ফিদ্দা’ (দ্য ট্র্যাজেডি অব নার্সিসাস অ্যান্ড দ্য কমেডি অব সিলভার) নামক দীর্ঘ কবিতায় দারবিশ বলেন মাতৃভাষার মতো স্বদেশভূমিও মানুষ উত্তরাধিকার সূত্রে পায়। তিনি এই ধারণার পুনরাবৃত্তি করেছেন আরো তিনটি কবিতায়। স্বদেশভূমি কেবল সেটা নয় যেখানে আপনি জন্মেছেন এবং বড় হয়েছেন, বরং এটা আপনার মধ্যে জন্ম নেয় যখন আপনি অস্তিত্ববান হয়ে ওঠেন। এটা আপনার মধ্যে বাস করে এবং এটা আপনার পূর্বপুরুষের কাছ থেকে পাওয়া সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের অংশ। এটা জন্মসূত্রেই আপনার অংশ : আপনি এর থেকে আলাদা হতে পারেন না, যখন আপনি নিজেকে প্রকাশ করেন, তখন আপনি এমনকি তার মধ্যে দিয়েই নিজেকে প্রকাশ করেন, বিশেষভাবে যখন আপনি সেটা করেন আপনার নিজ ভাষায়। আপনার স্বদেশভূমি, দারবিশ বলেন, আপনার মুখের ভাষার মতো উত্তাধিকার সূত্রে পাওয়া। এই দীর্ঘ কবিতার এক জায়গায় দারবিশ ব্যাখ্যা করে বলেন, আমাদের স্বদেশভূমি সেটাই যেটা আমাদের স্বদেশভূমি আর আমরা যার স্বদেশভূমি সেটাই আমাদের স্বদেশভূমি এটা সেটাই আমরা যার গাছপালা এবং পাখি এবং তার সকল প্রাণহীন বস্তু।   আমাদের স্বদেশ হচ্ছে আমাদের জন্ম আমাদের পূর্বপুরুষ আমাদের নাতিপুতি আমাদের শিশুরা, আমাদের হৃৎপিণ্ড   কাঁটাঝোপের কাঁটার ওপর দিয়ে বনমোরগ বেড়ায় চরে আমাদের স্বদেশভূমি হচ্ছে সেই  যার আগুন এবং ছাইকে আমরা লতার বেড়ায় ঘিরি।   তার মানে আমরাই তার স্বদেশভূমি। এটা বেহেশতের কানন নাকি একটা অগ্নিপরীক্ষা যাই হোক, একই ব্যাপার। ১৯৭০ সালে, তখনো তিনি ইসরাইলে রয়েছেন, সম্ভবত তার মনে ছিল তিনি প্রথমত ইসরাইলে বসবাসরত ফিলিস্তিনি, তখন প্রকাশিত হয় তার কাব্যগ্রন্থ হাবিবাতি তানহাদু মিন সাওমিহা (মাই সুইট হার্ট রাইজেস ফ্রম হার স্লিপ)। এতে একটা কবিতা আছে, যেটা পশ্চিম তীরের নাবলুসে বসবাসরত ফিলিস্তিনি কবি ফাদওয়া তুকানকে উদ্দেশ করে লেখা স্মৃতি তর্পণের প্রয়োজন নেই আমাদের : কারণ কারমিল পাহাড় রয়েছে আমাদের অন্তরে আর গ্যালিলির ঘাস হচ্ছে আমাদের চোখের পাতা। বলবেন না, ‘যদি নদীর মতো তার দিকে বয়ে যেতে পারতাম।’ বলবেন না!  আমরা রয়েছি আমাদের স্বদেশভূমির মাংসের ভেতর... আর সে আমাদের ভেতর! তারপরেও, ১৯৭১ সালে ইসরাইল ত্যাগ করার পর তিনি স্বদেশের জন্য আকুতিময় যন্ত্রণা অনুভব করেছেন, তিনি লিখেছেন, আমার স্বদেশ এখন অনেক দূরে। এর মাটি বাষ্পের মতো সেঁধিয়ে গেছে আমার অন্তর-কন্দরে। আমি তা দেখতে পাই না।  দেশপ্রেমের আগুন প্রজ্বলিত রাখার জন্য তার বাহ্যিক বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। স্বদেশ যখন বস্তুগতভাবে দূরে, তখন তার প্রতি ভালোবাসাকে জীবন্ত রাখার জন্য কবিকে স্মৃতির ওপর নির্ভর করতে হয়, যেমনটি ঘটেছে সব ফিলিস্তিনির ক্ষেত্রেই, যাদেরকে জোরপূর্বক বহিষ্কার করা হয়েছে। স্মৃতি ছাড়া মানবিক প্রেম শুকিয়ে মরে যায়; যে রকম পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে উত্তাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সংস্কৃতিকে আসন্ন ভবিষ্যৎ সন্তানদের মাঝে প্রবাহিত করে দিতে হয়। মাহমুদ দারবিশ এবং সকল ফিলিস্তিনি বোধগম্য কারণেই ফিলিস্তিনকে হারিয়ে ফেলার ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করেন, কারণ এটা গভীরভাবে অনুভূত তাদের জাতির এবং জীবনের ন্যায্য অধিকার হারানোর ক্ষতি যা তারা এই ক্ষতির আগে নিজেদের দেশে ভোগ করেছেন শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে। তারা মনে করেন, তাদের অন্তরে এবং স্মৃতিতে ফিলিস্তিনের টিকে থাকা উচিত। সে জন্য দারবিশের কবিতায়, ফিলিস্তিন-প্রেমকে অব্যাহতভাবে পুনঃপুন বৃদ্ধি করা হয়, এটা সম্পাদিত হয়েছে অতীতের স্মৃতি এবং স্বদেশের হ্রদ ও নদী, পাহাড় ও সমতলভূমি, সমুদ্র ও তার তীর, প্রাণী ও উদ্ভিদ, জলপাই ও কমলালেবু, গাছপালা ও পাখি, লোকসমাজ ও লোকসাহিত্য এবং তার সকল বস্তুগত জিনিসের বারবার স্মরণের মাধ্যমে। দারবিশ তার এসব স্মৃতিকে মজবুত করেন তার জানা-চেনা সাধারণ ফিলিস্তিনিদের কাহিনী স্মরণ করে, যারা স্বদেশকে ভালোবাসে এবং তার জন্য দুর্ভোগ সয় ও প্রাণ দেয়, অথবা সেইসব ফিলিস্তিনি লড়াকুর কথা স্মরণ করেন, যারা স্বদেশের সেবায় তাদের ভাগ্যকে বরণ করে নেন। সে কারণে নির্বাসনে থাকার চেয়ে জাফায় ফেরার সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ফিলিস্তিনি লোকটি মারা যায়। যে ফিলিস্তিনি যোদ্ধা লড়াইয়ের ময়দান থেকে বিয়ে করতে আসছে সে শত্রুর বিমান হামলায় শহীদ হয়। প্যারিসে ফিলিস্তিনের প্রতিনিধি ইজ্জ আল-দীন ক্কালাক্ক আততায়ীর হাতে নিহত হন, সে রকমই রোমে নিহত হন মজিদ আবু শারার। দারবিশ এ রকম আরো কিছু বাস্তব ঘটনার কথা উল্লেখ করেন তার কবিতায়; তারা সবাই ফিলিস্তিনের প্রতি এই মহান ভালোবাসা ও তাকে ফিরে পাওয়ার বিশাল আশার উদাহরণ সূত্র। তার কবিতায় ফিলিস্তিন-প্রেমকে নতুনভাবে উচ্চকিত করা হয়েছে ওইসব ফিলিস্তিনির স্মৃতির মাধ্যমে, যারা কোনো অপরাধ না করেও বিশেষ বিশেষ ধ্বংসযজ্ঞে নিহত হয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ১৯৫৬ সালে ইসরাইলে কাফির ক্কাসিমে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর গণহ..., বা ১৯৭৬ সালে লেবাননের তাল আল-জাত্বার শরণার্থী শিবিরে ফ্যালাঞ্জিস্টদের হ...যজ্ঞের কথা। দারবিশের ক্ষেত্রে স্মৃতি এবং স্বদেশ অবিচ্ছেদ্য যমজস্বরূপ, আর এটাই একটা কারণ যে তার কবিতা তার স্বদেশ হয়ে ওঠে। এই সংক্ষিপ্ত জরিপ থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে ওঠে, সেটা হল মাহমুদ দারবিশের ক্ষেত্রে স্বদেশরূপী কবিতার মানে কেবল এই নয় যে, একদা স্বদেশে ছিলেন এই আবেগগত পরিবেশের মধ্যে বেঁচে থাকবেন বলে তিনি কবিতা লেখেন। তার কাছে কবিতা হচ্ছে একটা সেতুবন্ধ যার মাধ্যমে তিনি প্রকৃত স্বদেশ ফিরে পান এবং নিজেকে ও পাঠকসমাজকে অঙ্গীকারবদ্ধ করেন ফিলিস্তিনকে পুনর্জীবন দান এবং ফিলিস্তিনিদের ওপর চাপিয়ে দেয়া সব অবিচার নিরসনের দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে। তিনি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করেন, ইসরাইলকে একটা জাতি এবং রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি এবং শান্তিতে বসবাস করতে দেয়া উচিত, কিন্তু তিনি এটাও বিশ্বাস করেন যে, ফিলিস্তিনও একটা জাতি ও রাষ্ট্র, তাকেও একইভাবে সমান স্বীকৃতি এবং শান্তিতে বসবাস করার অধিকার দিতে হবে।  লেখকঃ ঈসা জে. বুলাতা হ অনুবাদ : নাজিব ওয়াদুদ লেখার লিঙ্কঃ মাহমুদ দারবিশের কবিতা ও স্বদেশভাবনা

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)