ধর্ম ও গবেষনা

মেয়েদের জামাতে তারাবী

মেয়েদের জামাতে তারাবী
ভেবেছিলাম, মসজিদ খালি। কিন্তু নামাজ শুরু হতে হতে বারান্দা পর্যন্ত নারী নামাজী দিয়ে পূর্ণ হয়ে গেলো। সব বয়সের মেয়ে দেখতে পেলাম তারাবীর নামাজ পড়তে এসেছে। পিচ্চি পিচ্চি মেয়ে ও নেহায়েত কম নয়, আবার একদম বুড়া মানুষ ও আছে। আমাদের বয়সী অনেক মেয়েই বাসার আরাম আয়েশ রেখে এসেছে সিজদায় লুটাতে।  এখনো বাংলাদেশের মহিলারা একটু সুযোগ পেলে collective ভাবে ধর্ম পালনে খুবই উৎসাহী ভেবে ভালো লাগলো। মহিলাদেরকে মসজিদে ঢুকতে না দেওয়ার প্রবণতা আজকে মেয়েদের বিপথগামী হওয়ার একটা বড় কারন। ঘরে ঘরে তো ইসলাম চর্চা হয়না। কিন্তু, মসজিদে সমমনারা আসে, তখন আলোচনা, জিজ্ঞাসার মাধ্যমে দাওয়াতি কাজ অটো হয়ে যায়। কিন্তু, আমাদের মসজিদগুলোতে মহিলাদের জন্য সেই অবকাশ কই! বেশ লম্বা নামাজ! কখনো কখনো একটু যে ক্লান্ত হয়ে যাইনি তা নয়। কিন্তু, মনের শয়তান থেকে নিজেকে সতর্ক করলাম। যেই আল্লাহ এই পা দু খানি দিয়েছেন, এখনো একদম সুস্থ রেখেছেন তার জন্য কৃতজ্ঞতার নিমিত্তে এতোটুকু ত্যাগ তো করাই যায়। কিন্তু, খতমে তারাবীতে খুব আফসোস হোল! যদি এইসব মানুষগুলো আরবি বুঝত! এই নামাযটা কতোই না মজার হতো, বোধগম্য হতো! নামাজে দাড়িয়ে কেউ নিরাপদ যায়গা ভেবে দুনিয়ার কথা ভাবতো না। মনোযোগ দিয়ে বুঝত, আল্লাহ আসলে কি বলেছেন! যাই হোক, আসার সময় থুরথুরে এক বুড়ি জিজ্ঞেস করলো- এটা কি রহমতের ১০ না বরকতের? আরেকজন নামাজ কীভাবে জামাতের সাথে পড়তে হয় নিয়ম জিজ্ঞেস করলো। যারা মহিলারা মসজিদে আসলে ফিতনার আশংকা করেন, তাদের মধ্যে আসলে ম্যানেজমেন্ট নামক জিনিষ সম্পর্কে তেমন কোন জ্ঞান নেই। এই যে হুজুর কি সুন্দর মসজিদে বলে দিলেন- নীচ তালার পুরুষরা বের হয়ে গেলেই মহিলারা একটু দেরী করে মসজিদ থেকে বের হবে! যাতে সমস্যা না হয়। খুব কি ক্ষতি হয়েছে? আপনার মা বোনদের জন্য এতোটুকু ব্যবস্থা করা খুব কঠিন কিছু না। মানুষের সাথে না মিশলে মহিলারা দাওয়াত কীভাবে পাবে? কীভাবে আমর বিল মারুফ নেহি আনিল মুনকারের দায়িত্ব পালন করবে? আল্লাহ চাহেত- মসজিদে নামাজ চালিয়ে যেতে পারলে ইনশা- আল্লাহ এমন অনেক মেয়েকেই চেনা হবে যাদের রাস্তায় দাড়িয়ে খুঁজে পাওয়া সম্ভব না, হয়তো। আসলে, রোজার মাস অনেক বেশী বেশী রহমত নিয়ে পৃথিবীতে আসে। সিরিয়াল আর বিজাতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসনের সবচেয়ে বড় শিকার আমাদের দেশের নারী সমাজকে কিছুটা হলেও ইসলামমুখী করে এই রমযান মাস। রাত অনেক। রাস্তা খালি। নামাজ শেষে আসতে আসতে হালকা ঠাণ্ডা একটা আবহাওয়া এই রহমতের অনুভূতিকে প্রবল করে দেয়। স্বগতোক্তি বেরিয়ে আসে- বছরের সেরা মাস! রহমত, বরকত, মাগফেরাতের মাস! তোমাকে স্বাগতম এই ধূলার পৃথিবীতে.........

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)