ফিল্ম ও মিডিয়া

রান ওয়ে ও বাংলা চলচিত্রে ইসলাম বিদ্বেষ

রান ওয়ে ও বাংলা চলচিত্রে ইসলাম বিদ্বেষ
  বাংলাদেশে ২ টা বিষয় নিয়ে মানুষ কোন উন্নয়নের কথা চিন্তায় ও আনতে পারেনা। এবং সচরাচর দেখা যায় যে এই ২ টা অঙ্গনে কারো পদচারনা হলে লোকজনের এমন একটা ভাব হয়যে - আহা ! ছেলেটা / মেয়েটা বুঝি বখে গেলো!   রাজনীতি আর চলচিত্র জগত এই ২ টা নিয়ে আমাদের তরুণরা সবসময় ভীত এবং পারলে সবসময় একশো হাত দুরেই থাকে। কারন এই ২ টি অঙ্গন এতোটাই নষ্ট হয়েছে , যে এর কোন উন্নতির কথা আমরা ভাবতেই পারিনা। চলচিত্র অঙ্গন almost সো called প্রগতিশীলদের দখলে। তাই আমাদের চলচিত্রে ফুটে উঠেনা এখনকার সমাজ জীবনের বাস্তবতা। সমাজের মানুষগুলোর নিরন্তর সংগ্রামের ইতিবৃত্ত । এর ফলে তরুন সমাজ অনেকটাই ভারতীয় বাংলা ও হিন্দি ছবির দ্বারা প্রভাবিত। যদিও বা তাতে আমাদের সমাজ বাস্তবতার কোন ছায়া নেই, তবুও আমরা এসব দেখেই informally influenced হচ্ছি ।   ইদানিং বাংলা চলচিত্রে ইসলাম বিদ্বেষ ও বেড়ে গেছে, যদিও বিদ্বেষটা খুব প্রচ্ছন্ন । তারেক মাসুদের সর্বশেষ ছবি রান ওয়ে দেখে বিষয়টা আমার চোখে আর ও স্পষ্ট হয়ে ধরা দেয়। এই ছবিটায় বাংলাদেশের ইসলামিক ধ্যান ধারণার বিকাশ কে জঙ্গি ছাঁচে বেঁধে ফেলা হয়েছে। বিষয়টা এমন ভাবে উপস্থাপিত করা হয়েছে যাতে মনে হয়েছে যারা ধর্মীয় অনুশাসন মানে তারা সবাই এমন কাজের সাথেই জড়িত ।সামাজিক প্রেক্ষাপটকে সাজানো হয়েছে যেভাবে তা দেখে বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতার চেয়ে বেশি মিল খুঁজে পেয়েছি পাকিস্তান , আফগানিস্তানের সাথে।   ভারতীয় মুভি গুলোর শুরুতে এবং এর প্রতিটি ধাপে ধাপে ধর্মীয় ভক্তি শ্রদ্ধা , ও প্রার্থনাই বেশি দেখানো হয়। আমাদের বাংলা ছবি গুলোতে ধর্মের লেশমাত্র ও থাকেনা। তাও নাহয় মেনে নিলাম! কিন্তু তাই বলে ধর্ম মানেই জঙ্গিবাদ এমন ধারনা মুভির মাধ্যমে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা বড়ই দুঃখজনক । এই ছবির মাধ্যমে কিছু জনপ্রিয় ইসলামিক গানকে ও বিতর্কিত করার প্রয়াস পেয়েছে।কওমি মাদরাসার ছাত্রদের জঙ্গি প্রশিক্ষণের চিত্র  ও বেমানান। এখন হয়তো অনেকে প্রশ্ন তুলবেন- তাহলে কি বাংলাদেশে জে এম বির মতো জঙ্গি সংগঠন ছিলোনা? হুম! ছিল একটা সময়, তাও সেটা ইহুদী raw এর  মদদপুষ্ট  জঙ্গি সংগঠন। যাদের ধ্যান ধারণা , চিন্তা অনুশীলন ইসলামের সাথে যায়না ! তাহলে কেন এই ঢালাও প্রচারণা ? তা কি শুধুই সমাজে যারা ধর্মকে মেনে চলে তাদের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি করা? নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টির আরেকটা প্রয়াস দেখেছি হুমায়ূন আহমেদের ঘেঁটু পুত্র কমলা নামক ছবিটিতেও । এই ছবিতে একজন রীতিমত ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় কারী মুসলিম জমিদারের সমকামিতাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এবং দর্শক কে এমন একটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে যে নামাজি হলেই সে ভালো হবে এমন কোন কথা নেই। আমার ধারণা ছবিতে যা দেখানো হয়েছে তা হয়তো কিছুটা বাড়িয়েই দেখিয়েছে। জানিনা বাকিরা কীভাবে এর মূল্যায়ন করেছে।   লিখালিখি মানুষের মনে অনেক প্রভাব বিস্তার করতে পারে, কিন্তু মুভি মানুষের মনে অস্পষ্ট ছাপ ফেলে যায় খুব সহজেই। তাই, এখন সময় এসেছে ইসলামের মাধুর্য গুলোকে আরও সুগভীর ভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ।যার একটি শক্তিশালী মাধ্যম হতে পারে ইসলামিক চলচিত্র নির্মাণ । আজ ও the messege, the messenger এর মতো চলচিত্র গুলো আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কি আমরা পারিনা আমাদের সংস্কৃতি , আর এই নতুন প্রজন্মকে ভালো কিছু জীবন বোধ সম্পন্ন চলচিত্র উপহার দিতে?    

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)