সাহিত্য

কাংখিত

কাংখিত
(একটা অবুঝ প্রেমের গল্প) ১. উত্তরা ৮ নং সেক্টর। গল্পটা যাকে নিয়ে সে, তার মা, আর সরকারী চাকুরে বাবা এখানকার সরকারী কোয়ার্টারে থাকে। বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে নিলয়। উজ্জবল শ্যামলা গায়ের রং মুখমন্ডলে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি, চোখে মোটা ফ্রেমের পাওয়ারযুক্ত চশমা। উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ  সিক্সথ সেমিস্টারে পড়ছে। তিন চার বছর আগে থেকে কবিতার প্রতি একটা বিশেষ ঝোঁক তৈরী হয়েছে ওর রবীন্দ্রনাথ, জীবনান্দ দাশ, আল মাহমুদের প্রেমের কবিতাগুলো খুব পছন্দ করে সে। ইদানিং আবার আবৃত্তির প্রতিও ঝোঁক তৈরী হওয়ায়, খুব ভোরে উঠে ছাদে গিয়ে আবৃত্তির পশরা সাজিয়ে বসে যেন। আজও ছাদের এককোণে দাড়িয়ে কবিতা আবৃত্তি করছে, “হাজার বছর ধরে পথ হাটিতেছি পৃথিবীর পথে আমি ক্লান্ত প্রাণ এক চারেদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন............ থেমে যায় নিলয় পাশের বিল্ডিংয়ে অগ্নিমুর্তি ধারনকারীনি এক আন্টিকে দেখে। স্মিত হেসে নিলয় বললো, -ও! আন্টি আপনি? কি হয়েছে? কোন সমস্যা? দাঁতে দাঁত চেপে আন্টির মুখ দিয়ে যেন অগ্নিস্ফুলিংগ বের হয়, -প্রতিদিন ভোরবেলা এসব কি হ্যা? যে কাজ ঠিকমতো পারোনা সেটা করে কি লাভ? শুধু শুধু আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাও। যাও এখান থেকে। মুখটা শুকিয়ে যায় নিলয়ের নরম কন্ঠে, -আন্টি আপনি স্পেসিফিক কোন কাজটার কথা বলছেন কাইন্ডলি যদি বলতেন! কপাল চাপড়ান আন্টি, -হায় আল্লাহ এই সাত সকালে কি বুঝানোর দায়িত্ব নিলাম। একটু থেমে, রাগকে প্রশমিত করে একটু ভেংচানো  কন্ঠে, -নিলয় আমি তোমার আবৃত্তির কথা বলছি, এটাতো তুমি ভালোভাবে পারোনা তাই এগুলো বাদ দাও অযথা এতো কবিতা পড়লে মানুষ পাগল হয়ে যায়, দেখোতো তুমি আমার ছোট্ট কথাটুকুও বুঝতে পারলেনা............ বেশ প্রশস্ত হাসি হাসে নিলয়, -ও আন্টি এই কথা? ঠিক হয়ে যাবে, প্রতিদিন সেজন্যইতো প্র্যাকটিচ করি যেন আপনার ভালো লাগে, তিথির ভালো লাগে। ও, আন্টি তিথি আজ ক্যাম্পাসে যাবেনা? তিথির মা কিছুক্ষণ কিংকর্তব্যবিমূড় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন, নিলয় আবারো কবিতা আবৃত্তি করতে শুরু করে বাকী অংশ, “চুল তার কবে কার অন্ধকার বিদিশার দিশা......... রান্নাঘরে রুটি শেখছেন নিলয়ের মা তাহমিনা খন্দকার। তিথির মায়ের কথাগুলো শুনেছেন। নিলয় ঘরকুনো স্বভাবের ছেলে।  ছেলের আবৃত্তি শুনতে পাচ্ছেন তিনি। হঠাৎই অগ্নিশর্মা একটি কন্ঠের ডাক শুনতে পেলেন, -তাহমিনা! চমকে ওঠেন তাহমিনা খন্দকার। নিলয়ের বাবা হাফিজুর রহমান ডেকেছেন। বাসার কাজের মেয়ে লিপি কে রুটি শেকতে ইশারা করে দ্রুত পায়ে ড্রয়িং রুমে ঢুকলেন, -কী হয়েছে? -কী হয়েছে জানোনা? রোজ সকাল সকাল তোমার ছেলে এসব কি শুরু করেছে? মাথা নিচু করেন তাহমিনা খন্দকার মলিন কন্ঠে, -ও কী খারাপ কিছু করছে? -ও, তার মানে তোমারও প্রশ্রয় আছে, একটা কথা কান খুলে শুনে রাখো কেউ যদি আমার কাছে নালিশ দেয় তাহলে তোমার ছেলেকে ঘাড় ধরে বের করে দিব বলে দিলাম। -আচ্ছা আমি ওকে না করে দেব। দ্রুত পায়ে রান্নাঘরের দিকে গেলেন তাহমিনা খন্দকার। হাফিজুর রহমান গলা উঁচু করে কাজের মেয়েকে ডাকলেন, -লিপি প্রায় দৌড় দিয়ে এগিয়ে আসে লিপি, -জ্বে চাচাজান! আয়েশ করে ছোফায় হেলান দিয়ে বসেন হাফিজুর রহমান। -পেপারটা দে, একটু দেশের অবস্থা জানি। -জ্বে দিতাছি। ফ্লাটের বাইরের দরোজার নিচের ফাঁকা দিয়ে ঢুকিয়ে দেয়া পেপারটি নিয়ে এসে হাফিজুর রহমানের হাতে দেয়। এদিকে সকালের নাস্তা একদম রেডি হলে নিলয় নেমে আসে। খুব দ্রুত কন্ঠে, -আম্মা  আমার তোয়ালেটা দিও। আমি গোছল করতে গেলাম। হাফিজুর রহমান অফিস যাবার জন্য রেডি হয়ে নাস্তার টেবিলে বসেছেন। ছেলের দিকে একবার আঁড়চোখে তাকালেন। তারপর নাস্তা করতে মনোযোগ দিলেন। ২. উত্তরা ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস, নিলয় ওর বন্ধুদের সাথে লাইব্রেরিতে বসে বিভিন্ন নোটস হাতে আলোচনা করছে। নিলয় খুব ভালো ষ্টুডেন্ট, পড়াশুনার ব্যাপারগুলোতে সবাই ওকে খুব মূল্যায়ন করে। কিন্তু নিলয় অন্যমনষ্ক। তিথি এখনও আসছেনা এই চিন্তায়।  ওর এক বন্ধু অনন্ত উৎফুল্ল কন্ঠে,কথা বলতে বলতে লাইব্রেরিতে প্রবেশ করলো। ওদের কাছাকাছি এসে, -আমার একটা ঘোসনা রয়েছে, আপনারা মনোযোগী না হলে কিন্তু  ঘোষনাটি দ্বিতীয়বার রিপিট করা হবেনা। তিথির প্রবেশ, দীঘল কালো চুল ছেড়ে দিয়ে টপ, আর লং স্কাট পরে এসেছে। ওড়না গলায় পেচানো, অধৈর্য কন্ঠৈ, -এই অন্তু (অনন্ত) এতো ভনিতা করিসনাতো, এমনিতেই মেজাজ বিগড়ে আছে, যা বলার বলে ফেল। ইদানিং ভোরবেলা ঘুমের ডিস্টার্ব হয়। নিলয় তিথিকে দেখেই খুশিতে গদগদ। উৎফুল্ল কন্ঠে, -কেনরে কী হয়েছে? -আর বলিসনা চার পাঁচদিন ধরে  পাশের বিল্ডিংয়ে  কে যেন কবিতা আবৃত্তি করে, ঠিক করে তো পারেইনা অযথা আমাদের ঘুম নষ্ট করে আমার............... একটু ঘুরে নিলয়ের মুখোমুখি বসে, -এই নিলয় তোদের বিল্ডিংয়েইতো...... ছাদে উঠে......... তুই চিনিস তাকে? মা আজ ধমকে দিয়েছে তাও......... নিলয়ের মন খারাপ হয়ে যায় খুবই, মাথা নিচু করে ফেলে, -আন্টি বলেনি ওটা কে ছিলো? অনন্ত বন্ধুদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে, -এই তিথি, নিলয় চুপ থাকনা, এই কথা তো পরেও হতে পারতো তাইনা? শোন আমি একটা নোটিশ দেখে এসেছি। দু মাস পর অর্থাৎ ভ্যালেন্টাইনস ডেতে একটা কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগীতা হবে। এখন কে কে নাম দিবি বল, আমরা নিজেরা নিজেরা প্রাকটিস করবো। ওরা মোট দশজন ফ্রেন্ড  যদিও সবাই সবসময় একসাথে হয়না, মাঝে মাঝে একসাথে হয়ে জমিয়ে আড্ডা দেয়। অন্যমনষ্ক নিলয়, ওরা চারজন নাম দেয়, অনন্ত, আসিফ, তানহা, নীলা। তিথি আবৃত্তি পারেনা। কিন্তু শুনতে ভীষন পছন্দ করে। নিলয়কে অন্যমনষ্ক দেখে তিথি, -কী হয়েছে তোর নিলয়? -নিলয় মাথা উঠায়, হাসার চেষ্টা করে, সব বন্ধুর মনোযোগ এখন নিলয়ের দিকে, সবার দৃষ্টিতে জিজ্ঞাসা, আসিফ ওর কাঁধে হাত রাখে, -সমস্যাতো বন্ধুদের সাথেই শেয়ার করতে হয়, তোকে আজ শুরু থেকেই অন্যমনষ্ক লাগছিলো কী? নিলয় মৃদু হেসে, -না না তা কেন? এমনিতেই। তোরাতো সব ব্যাপার নিয়ে একটুতেই সিরিয়াস হয়ে যাস, চল ক্লাসে যাই। সবাই প্রায় সমস্বরে, -ও হ্যা হ্যা চল্ ওরা সামনের দিকে এগুতে লাগলো নিলয় সবার পেছন থেকে ধীরে ধীরে সরে অন্যদিকে চলে গেলো যা তিথির দৃষ্টি এড়ালোনা, একবার দেখে নিলো ওর চলে যাওয়া। হেটে হেটে ওদের কোয়ার্টারের ভেতরে এসে ইট সিমেন্টের বেঞ্চিগুলোর মধ্যে যেটি একটু আড়ালে, গাছের ছায়ায় সেটাতে  বসলো নিলয়। মনটা সত্যিই খুব খারাপ। বিড়বিড় করে বললো, -যার জন্য আবৃত্তি শেখার এতো চেষ্টা, সেইতো আমার আবৃত্তি পছন্দ করছেনা। কিন্তু তবুও আমি চেষ্টা করবই করবো। তিথিকে কোয়ার্টারের গেটে ঢুকতে দেখে মাথা উঁচু করলো স্বাভাবিক হলো, তিথি খুব দ্রুত এসে নিলয়ের পাশে বসলো , -নিলয়! -হ্যা বল্ - কোনোরকম লুকোচুরি ছাড়া আমকে বল্ কী হয়েছে? বোকার মতো হাসে নিলয়, -আরে, আজবতো কী আর হবে এমনিই! রাগান্মিত দৃষ্টিতে তাকায় তিথি, -এতো এতো মিথ্যা বলতে তোর লজ্জা করছেনা? নিজেইতো ন্যাকার মতো সকলকে বলিস, মিথ্যা বলোনা মিথ্যা বলতে নেই, মিথ্যা হলো সব পাপের জনক জননী বলিসনা? নিলয় আর কিছু বলেনা, উঠে দাঁড়ায় খুব দৃঢ়তার সাথে বললো, -কী হয়েছে সেটা আমি তোকে বলবনা। তিথি কিছু বলতে চেয়েছিলো কিন্তু নিলয় দ্রুত পায়ে বাসার দিকে চলে যায়। ৩. দুদিন পর। বিকালবেলা। তিথি ছাদে উঠেছে । দোলনায় বসে আয়েশ করে কফি পান করছে। ওর চুল পুরোটা বেনি করে ছেড়ে দেয়া। হঠাৎই নিলয়দের বিল্ডিংয়ে নিলয়ের মাকে দেখে, -আসসালামু আলাইকুম আন্টি, কেমন আছেন? -ও তিথি, এইতো মা, তুমি ভালো আছো? -হ্যা, কিন্তু নিলয়ের কী হয়েছে আন্টি? ও কেমন জানি মনমরা হয়ে আছে দুদিন ধরে। -বলবো তুমি আমাদের বাসায় আসো! -আচ্ছা আন্টি, এখনই আসি? -না এখন এসোনা তোমার আংকেল খুব রেগে আছে, নিলয়কে বকছে। অবাক হয় তিথি, মনটা খারাপও হয়ে যায়, মলিন কন্ঠে, -কি হয়েছে এমন যে, আংকেল ওকে বকছেন! আমি কী তাহলে সন্ধার পরে আসবো? -হ্যা মা তাই এসো। ছাদের কাপড়গুলো নিয়ে বাসায় ঢুকেই হাফিজুর রহমানের কর্কশ আর রাগান্মিত কন্ঠ শুনতে পান, -তোমার জন্য আজ আমাকে অপমানিত হতে হলো, কবিতা নিয়ে মেতে আছো, তোমার নামে অভিযোগ কেন শুনতে হলো বলো? নিলয় মাথা নিচু করে বসে আছে, মৃদু কন্ঠে, -বাবা ভোরবেলা আমার আবৃত্তি আর কেউ শুনতে পাবেনা আমি তোমাকে কথা দিলাম। -চুপ করো! তুমি দিনে দিনে গাঁধা হচ্ছো গাঁধা, যত্তোসব! সব এসে আমার ঘাড়ে চেপেছে, যেমন মা তার তেমন ছেলে। লিপি কাঁচুমাচুঁ মুখে ড্রয়িং রুমের এক কোণে দাঁড়িয়ে  আছে, তাহমিনা খন্দকার স্বামীর পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে, -কী গো হয়েছে, ওতো বললোই আর করবেনা, চলো চা খাবে টেবিলে এসো। হাফিজুর রহমান কিছু না বলে বাইরে বেরিয়ে গেলেন, তাহমিনা খন্দকার সেদিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন, পরে ছেলের পাশে গিয়ে মাথায় হাত দিলেন, -নিলয়, চা নাকী কফি? মলিন কন্ঠে নিলয়, -আমাকে দিয়ে কিছুই হবেনা তাইনা মা? -কে বলেছে? অবশ্যই হবে। এবার চলো......... -না মা এখন আমি কিছু খাবনা, আমি একটু বাইরে যাবো। নিলয় উঠে দ্রুত একটা কবিতার বই নিয়ে বাইরে চলে যায়। ও বের হলে তিথি ঢোকে ওদের বাড়িতে, তিথিকে দেখেও একটুও থামেনা, তিথি একটু দাঁড়িয়ে পেছন ঘুরে ওকে যতক্ষণ দেখা যায় তাকিয়ে থাকলো, তারপর দরোজা লাগিয়ে দিলো নিজেই একট বিড়বিড় করে, ভ্রু কুঁচকিয়ে, -আজব তো! লিপিকে দেখে হাসি মুখে, -কী? লিপি কেমন আছিস? তিথি খুশি হয়ে, -ভালা আছি আফা, আম্মায় নামাজ পড়তাছে, আপনারে বসতে কইছে। -আচ্ছা বসছি। নিলয়ের কী হয়েছে রে তুই জানিস কিছু? -হ ইট্টু ইট্টু জানি, আম্মায় আপনারে কইবো আইসা। তাহমিনা খন্দকার ড্রয়িংরুমে এসে তিথির মুখোমুখি বসেন, মুচকী হেসে, -যতোসব সমস্যা সব তোমার জন্য এটা কী বোঝ? তিথি অবাক হয়ে তাকায় তাহমিনা খন্দকারের দিকে, বোকার মতো হেসে, -বুঝলামনা আন্টি, কী বলছেন? -না বোঝার কারণেইতো, আচ্ছা বলছি শোন, তুমি কী কবিতা আবৃত্তি শুনতে পছন্দ করো? -হ্যা, খুব। -আর সেজন্যই এখন নিলয় আবৃত্তি শেখার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে, প্রতিদিন ভোরবেলা ছাদে উঠে......... বিস্ময়ে হতবাক হয়ে তাহমিনা খন্দকারের দিকে তাকায় তিথি, -ওটা নিলয় ছিলো? ছাদে আবৃত্তি করতো যে? -ওমা তুমি জানোনা? -না আন্টি, হায় হায় আমিতো আরো ওকে বলেছি যে কে যেন আবৃত্তি করে আমার ঘুমের ডিস্টার্ব হয়, বিরক্ত লাগে। -দেখেছো! এইজন্য ওর এতা মন খারাপ। তিথি মলিন কন্ঠে, -আন্টি আমি সত্যিই জানতামনা আবৃত্তি ও করতো। অন্য কেউ আর ও তো আলাদা তাইনা? নিলয় যেভাবেই করুক যেমনই করুক ওটাই আমার ভালো লাগবে। লজ্জা নিয়ে শেষের কথাগুলো বলে ফেললো, তাই তাহমিনা খন্দকারের দিকে তাকালোনা, কথাগুলো না বললেও হতো, কিন্তু তিথি নিলয়ের মাকে হালকা আভাস দিলো যে শুধু নিলয়ই নয়, আমিও ওর কাছে আসতে চাই। উঠে বের হয়ে গেলো। তাহমিনা খন্দকার অবাক হয়ে, বিজ্ঞের হাসি হেসে নিজের মতো করে , -এরা সবাই এক একটা পাগল! এই লিপি আমার চা দিয়ে যাতো। -হ আম্মা দিতাছি। ৪. নিলয় ৬ নং সেক্টরের পার্কে গিয়ে বসেছে। কবিতার বই খুলে আবৃত্তি করছে। তিথি ওকে খুঁজতে খুঁজতে ওখানে গিয়ে ওর পাশে দাড়িয়ে ওর আবৃত্তি মনোযোগ দিয়ে শুনছে, একসময় নিলয়ের কানের কাছে মুখ নিয়ে স্পষ্ট স্বরে, -নিলয়! থতমত খেয়ে আবৃত্তি বন্ধ করে তিথির দিকে তাকায়, -তুই এখানে? -হ্যা তোকে খুঁজতে খুঁজতে। নিলয়ের পাশে বসে, -সরি নিলয়! -কেন? নিলয়ের বাম হাত নিজে দুহাতের মুঠোয় নিয়ে, -আমি জানতামনা ওটা তুই ছিলিস। -ও! এই কথা। যেটা খারাপ লাগা সেটা আমিই কী আর যে কেও হলেই কী একই ব্যাপার তাইনা? -না একই ব্যাপার না নিলয়। তোর সবকিছুই আমি পছন্দ করি, তোর এভরিথিং আমার বিনা বাধায় ভালো লাগে, কিন্ত হয়তা সেই একই জিনিস অন্য কারো মধ্যে থাকলে ভালো লাগেনা। নিলয় পুলকিত হয়, সেই দৃষ্টিতেই তিথির দিকে তাকিয়ে, -সত্যি বলছিস!? তিথি নিলয়ের চোখে একবার তাকিয়ে লজ্জা পেয়ে যায়, মাথা নিচু করে হ্যা সূচক মাথা নাড়ায়, -হুম! -তার মানে কী বলনা তিথি? -তুই বল। দুজনের আলাপচারিতা চলতে থাকে, নির্বিঘ্ন অন্তরঙ্গতায় ভরে ওঠে চারপাশ, আর সবকিছুতে যেন সেই গানটির প্রতিধ্বনি, “আমারো পরানও যাহা চায় তুমি তাই, তুমি তাই গো............ সমাপ্ত।

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ
লেখকের অন্যান্য ব্লগ সবগুলো দেখুন