
একি গরম!!! ’সবে ভোর চোখ মেলেছে । হাই তুলে ঝিরঝির বাতাস বইছে । বেলা ৬ টা চৈত্রের ভোর । এখনও গরম লাগছেনা । তবু কেন বললাম গরম? কারন এটা আমার মুদ্রা দোষ । বিপত্তি ঘটলেই আমার মুখে গরম লাগে । সে গরম শত চেষ্টায় ও আইস কুল পাউডার দিয়ে ঠাণ্ডা হবে না । আজ ঘুম থেকে উঠে বিছানা থেকে পা ফেলেছি আর “ছপাত!! একটা তেলতেলে চর্বিওয়ালা হোঁৎকা মোটা আরশোলার মৃত্যু হল । তারপর ল্যাংড়াতে ল্যাংড়াতে শৌচাগারে গিয়ে আস্ত পা টা বেসিনে তুলে দিলাম । গরম দিয়েই শুরু হল সকাল । লাক্স সাবানের ঘষাঘষিতে পা টা কে দুর্গন্ধ মুক্ত করে দৈনন্দিন সকালের কার্যাদি সম্পন্ন করে বিছানায় মর্নিং ন্যাপ দিতে গিয়ে পিঠের নিচে চোখা কিছুর গুঁতো খেয়ে স্বরবর্ণের সাথে একাত্মতা জানিয়ে উঠে বসলাম । একি গরম!! দুষ্ট সিফাতের কাজ । আমি যাতে ব্যাথা পাই তাই বিছানায় জ্যামিতির কাটা বিছিয়ে রেখে এখন দরজায় দারিয়ে আছে আমার বড় ভাইয়ের বজ্জাত ছেলেটা । এই বড় ফাজিল হয়েছিস না? বড়দের সাথে খালি বেয়াদবি করিস? তোর কান আজ এখনি কেটে নিব । তেড়ে গিয়ে কান ধরলাম । আআ......।কাকু আমাকে ব্যাথা দিচ্ছ কেন?ওটাতো সিফাত করেছে । যেন খুব বাথা পাচ্ছে এমন ঢঙ্গে বল্ল । সিফাত না? তুইই ত সিফাত । পাজির হাড্ডি। কাকু তুমি এখনও আমাদের চিনতে ভুল কর !!!!!!! আমাকে তোমার সিফাত মনে হল?? অবাক কণ্ঠে বললো ইদুরের বিষ দাঁতটা । নিজেকে রিফাত বুঝানর চেষ্টা করছে ।এই সিফাত রিফাত যমজ দুইটা স্টুপিড আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত খালি গরম লাগাতে থাকে সারাদিন । এখন আমাকে গুঁতো দিয়ে কনফিউসড করার চেস্টা করছে । হাত টা উঠিয়ে কানের নীচ লক্ষ্য করে ঠা... করে দিতে যাবো । মার রৈ রৈ আওয়াজ । আমার দাদুরে......। একি গরম !!! মনে হচ্ছে যেন চরটা বসিয়েই দিয়েছি। এত জোরে চিৎকার । শিকারটা হাত ফসকে গেলো। মা টার জন্য পারিনা । নাহলে কবে যে দুটোর মাংশ ছারিয়ে এনাটমি পরা শুরু করতাম যদিও এটা আমার বিষয় না। ভাইয়া রুম থেকে ছুটে এল । ভাবি রান্না ঘরে দুই হাতে কাজ করতে আর রান্না করতে করতে আওয়াজ দিলো ঃ মার কি হল? ভাইয়া দৃশ্য পরিদর্শন করে ভাবি কে খবর দিতে গেলো। সিফাত আর তার দাদি এখন “ পেয়ার কি ঝাপ্পি “দিচ্ছে । আমি দাঁত কটমট করে রুম এর দরজা লাগিয়ে দিলাম। বিছানাটা টান করে শোয়ার জন্য প্রস্তুত হলাম।একি গরম!! মোবাইলটা সাইলেনট করেছে কে?একি!!!!গরম আর গরম!! মোবাইলে ২০টা মিস কল পরে আছে। জাবেদ , গিয়াস,ফরিদ ...... এতজন!!! জাবেদকে কল ব্যাক করিঃসালাম।কিরে? জাবেদ ভিত কণ্ঠে ঃ কোথায় ছিলি সালা? ফোন করতে করতে মরে গেলাম। হলে পুলিস এসেছিল। আমি বিরক্ত হলাম। একি গরম! আবার কেন? হলের ছাত্র ত অর্ধেকেরও বেশি হল ছেড়েছে এবার কি হল খালি করার ইচ্ছা? জাবেদঃ সেটাই ত মনে হচ্ছে। কাল এসে আরেকটা টর্নেডো বইয়ে গেসে। ইকবাল আর কিব্রিয়ার কাছে কুরান ছিল ট্রাঙ্কে । সেটা দেখে ওদের রুম এর সব্বাইকে ধরে নিয়ে গেছে। আমরা ভয়েই পালিয়ে আসছি । রাস্তার চিপায় ঘাপটি মেরে লুকিয়ে আছি। এমনি হাটাচলা করলেও তো সন্দেহ করবে । তোকে ফোন দিসিলাম , দোস্ত তোর বাসায় একটু জায়গা দিবি? আমিঃ কয়জন তোরা? জাবেদ ঃ ৫ জন । আমিঃ আয় তবে ৫ জন একসাথে এলে গিরগিটিরা আর বসে থাকবেনা । ২ জন আয় আগে । আর ২ জন আধা ঘন্তা পর । আর ১ জন ১৫ মিনিট পর । জাবেদ ঃ এতক্ষন রাস্তায় কি করব? রাস্তায় বেওয়ারিশ ভদ্র ছেলে দেখলেও তো ধরে নিয়ে যাবে । ভাবতে পারবিনা তুই কোথায় লুকিয়ে আছি আমরা । আমিঃ আচ্ছা আয় কিচ্ছু হবেনা । সব আল্লাহ ভরসা । কল কেটে দিলাম । বাহিরে বেরিয়ে মাকে বললাম ঃ মা আমার ৫ টা ফ্রেন্ড আসবে । ওদের হলে কাল পুলিশ গিয়েছিল । বেচারা গুলো পথে পথে ঘুরছে । মাঃ আচ্ছা ঠিক আছে । তোর ভাবি কে বলছি নাস্তা বানাতে । ছেলেগুলো নিশ্চয় রাত থেকে খায়নি । ভাইয়া পেপার থেকে মুখ তুলেঃ ধুর......... দেশটা পুরা বাপের বাড়ি বানায় ফেলসে । পুরো দেশের মানুষকে একটা অঘোষিত কারফুএর মাঝে ফালায় দিসে । জায়গায় জায়গায় তল্লাশি । আরে বাবা ! আমরা যেন দেশের অস্ত্রাগার লুট করেছি । নাকি দেশে কোন জঙ্গি আছে? খালি খালি ভদ্র নিরপরাধ ছেলে গুলো কে এতদিন ধরেছে । এখন মেয়েরাও বাদ যাচ্ছেনা । কমলাপুরে এক বাসায় অসুস্থ রুগির জন্য দোয়ার ছোট একটা পারিবারিক অনুষ্ঠান হচ্ছিলো । কোথা থেকে পুলিস এসে ঘরের মহিলা সুদ্ধ সব্বাইকে থানায় নিয়ে গেছে । আমিঃ একি গরম!!! ভাইয়া আমরা কোন পারিবারিক অনুষ্ঠান ও করতে পারবনা? ভাইয়াঃ পারবি তবে সেখানে ডিজে আনতে হবে । মেয়েদের ছোট পোশাকে নাচতে হবে । গান হবে । মাখামাখি হবে । তাহলে কেও তোকে disturb করবেনা । বুঝলি ? পেপারে চোখ রেখে বল্লঃ এই দেখ...এক লোক মেয়ের বিয়ে দিচ্ছিল । সে নাকি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের লোক । তাই মেয়ের বিয়ের আসর থেকে বাপ , ভাই আর বর কে পুলিশ থানায় নিয়ে গেছে । আমি ঃ ভাইয়া আমি একটা জিনিস বুঝিনা । এই যে পাকিস্তানীরা আমাদের স্বাধীনতা দিতনা কিছু বলার বা করার । তারা নিজেদের সুবিধা মতো দেশ চালাত । যেখানে খুশি আন্দলন থামাতে গুলি চালাত। সেজন্যই তো এদেশের মানুষ যুদ্ধ করে দেশ টা স্বাধীন করেছে তাইনা? এখন ওই সময় কে যুদ্ধ চেয়েছে কে চায়নি বা যে দল যুদ্ধ সময় প্রধান ভুমিকায় ছিল তারা তো সে মুক্তিযুদ্ধ কে নিজেদের অর্জন মনে করে এই দেশটাকে নিজেদের ইচ্ছা মত চালাচ্ছে । তারাও তো সেই পাকিস্তানের মতো কাজ করছে । আমার মনে হয় বাংলাদেশে বর্তমানে একটা ঘর ও নেই যাদের কোন না কোন আত্মীয় জেলে নেই । ভাইয়া ঃ হুম । আজ-কাল অফিসে জেতেও ভয় লাগে । যদি আগেপরে কোন মিছিল হয়ে থাকে তাহলে রাস্তায় যে কাওকে ধরে নেয় । কলিং বেল বাজল । বুয়া এসেছে । জাবেদরাও চলে এসেছে । সব্বাইকে নিয়ে রুম এ ঢুকলাম । সবার পরনেই লুঙ্গি । একি গরম!!!! লুঙ্গি কেন? ফাহিম বলে উঠলঃ এ...হ ! রাত ৩ টায় লুঙ্গি পরা থাকবনা বুঝি? হাতের কাছে ওয়ালেট আর মোবাইল নিয়ে ছাদে উঠে বাথরুম এর পাইপ বেয়ে বিল্ডিং এর পেছনে নেমে কোনমতে পালিয়েছি । আমিঃ একি গরম!! তোরা বস নাস্তা আসতে দেরি হবে । ভাবি বানাচ্ছে । এমন সময় দরজা ফাক হয়ে ২ টি মুখের উদয় হল । ফরিদ হেসে বলেঃ আরে টুইন নাকি? এস বাবু । কি নাম তোমাদের ? জাবেদ মুখের কোনা দিয়ে বলে ঃ সাবধান , এরা সিফাত রিফাত । দুই বোল্লা । আমি জাবেদের কাছে এদের ঘটনা প্রতিনিয়তই বলে থাকি । জাবেদ , ফাহিম , গিয়াস , ফরিদ আমার ক্লাস এই পরে । শুধু অনিক এক ক্লাস জুনিয়র । জাবেদের সাথে আমার বেশি ওঠা বসা । সিফাত রিফাত ইতিমধে ফরিদের জামায় কৌশলে তেলাপোকা ঢুকিয়ে দিয়েছে । তাতে হিন্দি নায়কের মত দিব্যি নেচে যাচ্ছে ফরিদ । ফাহিম আর অনিক হাতের কাছে বালিশ পেয়ে ফরিদের শরীরে বারি দিচ্ছে । একি গরম!!! এই দুষ্ট গুলো কে নিয়ে কি যন্ত্রণা । তারা ফরিদকে নকল করে নাচছে । আমার মান সম্মান সিন্দুকে পুরে সাত সাগরের তলায় মাটি চাপা দিয়ে দিল এই দুটো । কোত্থেকে যে এত দুষ্ট হয়েছে এরা? ভাইয়া হাউমাউ শুনে রুম এ ঢুকে চোখ ছানাবড়া । রিফা...ত সিফা...ত । জোরে চেঁচিয়ে উঠে দায়িত্ববান বাবা । নাচ বন্ধ হয়ে যায় । তেলাপোকা টাও লুঙ্গির নীচ থেকে বের হয়ে খাটের নিচে পালায় । ভাইয়া অফিস যাচ্ছিল । রিফাত সিফাতের কান ধরে দুইহাতে । এত বেয়াদপ হয়েছিস কবে থেকে? বাসায় মেহমান এসেছে । তাদের সাথে এমন করাই শিখিয়েছি তোদের? দুই ভাই মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে । ওদের মুখ দুটো দেখতে খুব মিষ্টি । কিন্তু সেই মিষ্টি মুখের পিছনে লুকিয়ে আছে কিলবিল বাঁদরামি । অনিকের মায়া হলঃ থাক ভাইয়া । ওদের মাফ করে দেন । আমরা কিছু মনে করিনি । অনিকের কথায় চোখে বিস্ময় নিয়ে মুখ হা করে ওর দিকে তাকাল নাজেহাল ফরিদ । ভাইয়া কিছু না বলে ওদের কান ছেরে হাত ধরে রুম এর বাহিরে নিয়ে গেলো । দরজা লাগাতেই অনিকের উপর ঝাপিয়ে পড়ল ফরিদ । মানে কি হা? কিছু মনে করিনি মানে কি?????? তোর ভেতর যদি আজ দশটা তেলাপোকা নয়া ঢুকাই তবে আমার নাম.........। একি গরম!!! থাম থাম । সকলে মিলে থামালাম তাকে। বেশ কিছুক্ষন পর সকাল ১০ টা । সকলে মিলে আমার প্যান্ট পরিধানের চেষ্টায় মগ্ন । এই কি গরম!!! গিয়াস তোর গায়ে হবেনা রে । আমার প্যান্টটা ছিরবে শেষমেশ । সবার ফিট হয়েছে তাও না । জাবেদ এখনো লাফাচ্ছে । ফাহিমের ঢিলে হয়েছে । অনিকের ফিট । ফরিদের ও ফিট । গিয়াস কে ধরে সকলে মিলে টেনেটুনে কোনরকমে প্যান্ট উপরে উঠালাম । ওর মাংসল পায়ের আকার পুরদমে স্পষ্ট হয়ে আছে । ফর্সা মুখটা লাল হয়ে আছে । এরে.........নরতেও যে পারছিনা । ছিরে যাবে মনে হচ্ছে । ফাহিম গিয়াসের পিঠ চাপরে বলেঃ বাছা সময় থাকতে মেদ কমায় ফেল । নইলে বউ জুটবেনা । গিয়াস হাত মুঠ করে দেখায়ঃ “একটা না দশটা জুটবে । তবে তোর কপালে । আর কি জুটবে জানিস? কিল । শালা শুঁটকি...।“ জাবেদ হাত উঠায়ঃ বাদ দে । চল বের হই। খোদা জানে ক্যাম্পাসের কি পরিস্থিতি । বাসে ঝুলাঝুলি শেষে ভাসিটি পৌঁছলাম । চুপচাপ চারিদিক । সবাই নিচু স্বরে কথা বলছে । ক্লাস রুমে ঢুকতেই কয়েকটা মেয়ে এগিয়ে এলো । তোরা আছিস? সবাই বলছে তোদের নাকি পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে । কারন পুলিশ চলে যাবার পর তোদের আর কেও খুজে পায়নি । আমি আর জাবেদ সরে এলাম । মেয়ে দেখলেই আমাদের খিচুনি শুরু হয় । তাই দূরে দূরে থাকি । ক্লাসে স্যার ঢুকলেন । বিরস লেকচার । মস্ত রুমটা ২০/২৫ জন বসে আছে । কেমন খা খা করছে । স্যার এর কথা গুলো গমগম আওয়াজ তুলছে । ক্লাস এর ব্রেক এ মাঠের এক কোনে জট পাকিয়ে বসে আছি আমরা ১০/৯ টা ছেলে । আসিফের হাতে গিটার । গিটার থাকলে কোনও বিপদের আশংকা থাকেনা । মাঝে সাঁঝে হেরে গলায় জরিনাদের নিয়ে গান গাইলে তো আরও সেফ । তার ফাকে ফাঁকে চুপিচুপি আলাপ চলছে আমাদের । “এই দেশটার কি হবে বলত? আমাদের ক্লাস এর ২০ টা ছেলে এখন জেলে । সবকটাকে জাস্ট পঙ্গু বানিয়ে দিয়েছে । কেও চুপি স্বরে বললঃ আর দুইটা বন্ধুর জানাজা পড়তে হল । তাও কি ভাবে মারা গেলো? পুলিশের গুলিতে । আরেকজন আওয়াজ তুলে ঃ ডেন্টালের বাদল ভাইকে কি করেছে জানিস? ইলেক্ট্রিক শক দিয়ে মেরেছে । খালাম্মা পুরা পাগল হয়ে গেসে । এখন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে । অন্যপাশ থেকে কেও বলে ঃ হবেইত । বেচারি গ্রামে থেকে কত কস্ট করে টাকা পাঠাটো ছেলেকে । কেও বলেঃ তোরা তাকে চিনিস কীভাবে? চিনবনা? একসাথে তিন তিনটা মিছিল করেছি । কাধে কাধ লাগিয়ে । আরেকজনঃ দোস্ত যতই মিছিল হরতাল করছিস , কিছু তো হচ্ছেনা । ওড়াত ঘাড় ত্যাড়া । কিছুতেই নরম হচ্ছেনা । আমিঃ আমার ইচ্ছা করে একদিন ওদের বাসায় আমার বজ্জাত ভাতিজা দুটোকে রেখে আসি । পাতলা পায়খানা ছুটিয়ে দেবে ওদের । সবাই গড়াগড়ি দিয়ে হাসা শুরু করে । বিকেলে ছাত্র দের দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অন্যায় ভাবে হল থেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে মিছিলে যোগ দেই । ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছাত্ররা মিছিলে নেমে আসে । পুলিশ সাইরেন বাজাতে বাজাতে রাস্তায় নেমেই গুলি করা শুরু করে । একি গরম!!!!! দৌড়া দৌড়া । বলে নিজেও দিকবিদিক পালাতে থাকি । দৌড়ে দৌড়ে ২ কিলো যখন পার হয়েছি । একটা অজানা বাসার গেটে ঢুকে পড়ি । পুলিশের আওয়াজ আর আসছেনা । তবু নিথর হয়ে মোটর ঘরের কোনে চুপ করে বসে থাকি । সন্ধার আধার হাল্কা করে নামছে । মাগরিবের আজান দিচ্ছে । বের হলাম। সবার খোঁজ নিতে হবে । কে কে আটকা পড়ল জানতে হবে । মিছিলে নাম্লে ফোন সাইলেন্ট করে রাখি । যদি পালাতে গিয়ে মোবাইল বেজে উঠে আর ধরা পরে যাই , এই ভয়ে । একি গরম!! বাসার ফোন থেকে এতগুলো মিস কল!!! নিশ্চয় খবরে মিছিল দেখে টেনশন করছে । যাই তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতে হবে । কাছাকাছি মসজিদে নামাজ সেরে বাসে উঠি । বাসায় পৌঁছই তাড়াতাড়ি । রাস্তা ফাকা । আমাদের ফ্লাটের দরজা খোলা । ভেতরে মানুষ । আত্মীয়-প্রতিবেশি অনেক পরিচিত মুখ । আমাকে দেখে জরিয়ে ধরে মেঝ মামা । “সবি আল্লাহের ইচ্ছারে । শক্ত হতে হবে তোকে । তুইই এখন এই মানুষগুলোর একমাত্র ভরসা । “ একি গরম!!! কি হয়েছেটা কি???????? কাজল ভাই এগিয়ে এলেন ঃ নিজের মনকে শক্ত কর ভাই । জালিম্রা সব পারে । আমিঃআরে!!! তোমরা কি??? বলনা কি হয়েছে? “আজ মিছিল করেছে ছেলেরা । তখন অফিসের ছুটি শেষে তোর ভাই রাস্তায় ছিল । গুলি লেগেছে পুলিশের । “ আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম । “ভাইয়া!!!! কেন ভাইয়া? সে তো জীবনে কখন রাজনীতির ধারে কাছে যায় নি । কেন আমি হলাম না? খোদা একি গরম দিলে তা তুমিই জানো । এই একলা মানুষ । আমাকে বাচিয়ে রাখলে । যার উপর পুরো পরিবার দাড়িয়ে ছিল। তাকে সরিয়ে নিলে!!!! আমার কাঁধ শক্ত করে চেপে মামা বলল ঃ দুঃখ পাসনে । আল্লাহ নায়বিচারক । তার আদালতে কখনো কেও অবিচার পায়নি । আমরাও পাবনা । শুধু ধৈ্য্য ধরতে হবে । দেখিস আমাদের চোখের সামনেই আল্লাহ প্রতিটি অশ্রু বিন্দুর শোধ নিবেন । তখন সবার ঋণ পরিশোধ হয়ে যাবে ।“
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)