উইমেন (সামাজিক,মানসিক,সুবিধা বঞ্চিত নারী)

বাইভোনেরা, কইঞ্চেন দেহী?

বাইভোনেরা, কইঞ্চেন দেহী?
গুস্তাখী মাপ, এই অধমের কয়টা কথা শুইনা যান। নিউজফিডে আপনেগরে প্রচারণায় ব্যকুল হইয়া আর থাক্তে পার্লামনা। ইউটিউব চালাইয়া বাইর কইরা ফেলাইলাম কয়টা ফেলাশ মব। ছি, পুলামিয়াগো কি অবস্থা! (একটু মুখের কাছে সইরা আসেন দেখি, হাসা কথা হইলো দ্যক্তে কিন্তু খারাপ লাগে নাই খুব একটা) অবক্ষয় অবক্ষয়! এই হল গিয়ে মুখবন্ধ। এইবার প্রমিত বাংলার গুগল ট্রান্সলেটর অন করে দিয়ে লিখছি। সকালেই বাসে সিটি কলেজের দুই উঠতি বালকের আলাপ শুনেছি। বাসায় এসেই সর্বোচ্চ আর সর্বনিম্ন ভিউ বেছে বেছে প্রায় পঁচিশটা দেখলাম। এইবার একটু ব্যখ্যা বিশ্লেষণ করি। আগেই বলি, এই বিশ্লেষণ পদ্ধতি একান্তই আমার। অতএব কোন জীবিত বা মৃত ... ... ... :p ফ্ল্যশমবের কয়েকটা দিক দেখে তুলনা করলাম, ‘ফ্ল্যশ-মব’ , প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব, মবের দর্শকদের মনস্তত্ত্ব, কোরিওগ্রাফী, মেয়েদের উপস্থিতি ইত্যাদী। শেষের পয়েন্টে আগে বলি, এই পয়েন্টটা মাথায় আসার কারণ আর কিছু না, হিট। পঁচিশটার মধ্যে যে একটি মাত্র মব আমার সবচেয়ে স্মার্ট এবং আকর্ষনীয় লেগেছে সেটার ভিউ সবচেয়ে কম, এবং কারণ হল সেটাতে কোন মেয়ে নাই!! কোন একটা মেরিন একাডেমীর ছেলেদের করা। যেহেতু মেরিন, ছেলেগুলোর ফিটনেস ঈর্ষা করার মত। তবু, বিধিবাম, তাদের প্রমীলা বন্ধুদের অভাবে এত্তো বড় প্রচেষ্টা মাঠে মারা গেলো। এইবার আসি একটা একটা করে অন্য পয়েন্টে। প্রতিষ্ঠানভিত্তিক উপস্থাপন হওয়ায় আমার কাছে একেকটা কাজকে এক একটা প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক প্রতিনিধি মনে হয়েছে। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলোর মব দেখে স্বীকার করতেই হয়, এখানকার মেয়েরা বেশ দুঃসাহসী, তাদের কাপড় এবং কাপড় পরার পেছনের দৃষ্টিভঙ্গী মোটামুটি হলিউডের সাথে তুলনাযোগ্য। এবং অনিবার্যভাবেই, আমার কোন ভুল না হলে, এ পর্যন্ত সবচে বেশী ভিউ হওয়া ভিডিওটি একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিরই। অন্য দিকে পাবলিক ভার্সিটির মবগুলো বেশিরভাগই নিজেদের ক্যম্পাসে বা খোলা জায়গায় বেশী জায়গা নিয়ে করা। বাস্তবতা এদের হয়ত বিশালতাই শিখায়, যেখানে প্রাইভেটের ছাত্রছাত্রীরা রাস্তায় করলেও অল্প জায়গা নিয়েই করেছে। অবচেতন মনেই কেন যেন আশা করছিলাম প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির কোরিওগ্রাফী তুলনামূলক ভালো হবে। সেরকম কোন প্যারামিটার ঠিক করতে পারি নাই শেষে। সব জায়গায়ই সব ধরণের পারফরমেন্স আছে। এবার আসি দর্শকরা কি বিচারে এগুলকে পছন্দ বা অপছন্দ করেছে সেই হিসেবে।মেয়েদের উপস্থিতি যদিও খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে হিট বাড়ানোর জন্য, তবুও কেন যেন মনে হয়েছে, এই মবের দর্শকরা মেয়েলী আউটফিট আর মেয়েলীপনা পছন্দ করছে না। কেন এটা মনে হল বলি, কোন কোনটাতে মেয়েরা শাড়ি – কামিজ পরে নাচার চেষ্টা করেছে, যার বেশীরভাগই ভেস্তে গেছে কাপড় সামলানোতে তাদের অনেক মনযোগ চলে যাওয়ায়। অন্যদিকে যে মেয়েরা ফ্ল্যশমবের উপযোগী কাপড় পরে নেমেছে তারা খুব সহজভাবে নড়াচড়া করতে পেরেছে। বলাই বাহুল্য, সেসব মবের হিটও বেশী। যা হোক, সবচে শেষে দুইটা কথা। যারা বলছেন যে ফ্ল্যশ মব এভাবে হয় না, আগে থেকে সাজিয়ে গুছিয়ে প্ল্যন করে, তাদেরকে বলছি ‘বিগেস্ট ফ্ল্যশ মব’ এই লিখে সার্চ দিলে ইউটিউব কতৃপক্ষ আপনাদের হতাশ করবে। আর আরেকটা কথা হল আমাদের সাংস্কৃতিক রুচি। খুব দ্রুত পালটে যাচ্ছে আমাদের রুচিবোধ, আমাদের পোশাকজ্ঞান, আমাদের শ্লীলতার সংজ্ঞাগুলো। বাংলাদেশের মানুষ স্বভাবজাত হুজুগে। রাস্তায় বাঁদরের খেলা দেখালেও কাজ ফেলে দেখে। সে হিসেবে ফ্ল্যাশমবগুলো অনেকগুণে আকর্ষণীয়। মানুষ ভিড় করে দেখেছে, হাত বাড়িয়ে ছবি তুলেছে, ভিডিও করেছে। কিন্তু যাদের ভিডিও করেছে তাদের অনুভূতিগুলো কেমন  ছিলো? আমি জানিনা। আমার জানতে ইচ্ছাও হয় না। কারণ সে চিন্তা থাকলে এই কাজে নামতো না তারা। নাচতে নেমেছে যে, তাকে জিগেস করা যায় না, তার মাথায় আগে ঘোমটা ছিলো কি না! শুধু নীলফামারীর প্রত্যন্ত গ্রামে একটিমাত্র ঘরে যে বিধবা মা মেয়েকে নিয়ে থাকতেন, তিনি যখন কড়িকাঠে ঝুলন্ত মেয়ের পা ধরে কেঁদে চলেন, কিংবা নরসিংদীর দরিদ্র স্কুলশিক্ষকের সহজ সরল মেয়েটির ফুলে ওঠা দেহ যখন ভেসে উঠে মেঘনার বাঁকে, কারণ তাদের ‘ভিড্যু বাইর’ হয়েছে, আর মহল্লার ছেলেদের হাতে হাতে শোভা পাচ্ছে সেসব ছবি, কিংবা, কোন এক মোনালিসার গলিত দেহ উদ্ধার হয় এই ঢাকারই এক ব্রীজের নিচ থেকে... আমার ফ্ল্যশমবের লাস্যময়ী বোনটির মাথায় হাত রেখে বলতে ইচ্ছা করে,আপুরে আমরা এই সমাজের পুরুষেরা খুব খারাপ। আমার ভেতরের যে আকর্ষণ আমাদের ভেতরে রোপণ করে দেয়া হয়েছে সে আদমের যুগ থেকে, যে আকর্ষণ আমার একান্ত প্রিয় মানুষটার জন্য উপহার, সে আকর্ষণেরই বন্য রুপ আমি দেখিয়ে ফেলি যখন তোমার প্রিয় মানুষের জন্য রক্ষণীয় সম্মান তুমি রাস্তায় পরিবেশন কর। কখনও কখনও আমি নিজেও জানিনা, আমি কখন পশু হয়ে যাই, হয়ে যাই তোমার সম্ভ্রম আর নমনীয়তার হন্তারক! তোমার যে নমনীয়তা আমার ভবিষ্যত বংশধরের জন্য দরকার, তাকে আমিই আবরণমুক্ত করছি আমার চোখের আরামের জন্য, আর তোমাকে দিচ্ছি কৃত্রিম মর্যাদার মুকুট। তুমি কি ওই মেয়েটির শেষ চিৎকার শুনতে পাও? কিংবা রাতে তার একলা ফোঁপানোর শব্দ তোমাকে তাড়া করে ফেরে? যার শেষ আশ্রয় ছিলো একটা কালো কাঁচের বৈয়ম বা একটা জলভরা কলস?

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ