সাহিত্য

হাত খরচ

হাত খরচ

বারবার মুছতে থাকা সত্ত্বেও চোখ ভিজে উঠছে নিলুফা বেগমের। ঈদের দিন ফুরিয়ে গেলো এখনো কোন ভালো খবর পেলেন না,মেয়েটা না জানি কি করছে ঐ জালিম শ্বশুর বাড়ি তে! গত দুদিন ধরে না খেয়ে আছে নিলুফা বেগমের মেয়ে রিমি। স্বামীর সাথে রাগ! কিন্তু স্বামীর সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই,না খেয়ে মরুক কার কি? ছেলে-মেয়েরা বাপের সাথেই খাচ্ছে খেলছে ঘুমাচ্ছে,মা এর দিকে সেরকম মনোযোগ নেই,এই সংসারে আসলে কি অবস্থান রিমির? শ্বশুর শ্বাশুড়ি,দেবর-ননদ কেউ একটা বারের জন্যেও তাকাচ্ছেই না তার দিকে! অথচ তিনবেলা এদের রান্না থেকে শুরু করে এ সংসারের সব কাজ ই রিমি করছে কিন্তু সে যে খাচ্ছে না রাগ করে এ নিয়ে কারোও কিছুই আসে যায় না।


নিলুফা বেগম তার বারান্দা থেকে দেখলেন,তার বড় ছেলে রানার বউ, বাচ্চাদের নিয়ে বাপের বাড়ি থেকে ফিরেছে। বেশিক্ষন হয়নি,এই বিকেলেই গেলো আবার রাতের মধ্যেই ফিরেছে। একটা তীব্র নি:শ্বাস ফেললেন।
আজ ঈদের দিন ছিলো,রিমিটা না খেয়ে আছে অথচ রানার বউ ঠিকই বিকেলে বাপের ঘুরে আসলো,নতুন জামা পড়েছে বউটা,যদিও সেটা তার বাপের বাড়ি থেকেই দেয়া,রানা গত ২বছর যাবত বউ-বাচ্চাকে কিছুই কিনে দিতে পারছে না,বিশাল একটা লোন করতে হয়েছে রিমির জামাইকে দোকান কিনে দেবার জন্য। বউটা বাসায় সেলাইর কাজ করে অল্প কিছু আয় করে আর বাবার বাড়ি থেকে বিভিন্ন ভাবে সহোযোগিতা পায়।


কিন্তু এসব ছাপিয়ে নিলুফার মনে রিমির চিন্তা! কেন এই ঈদের সময়টাতেই ওর জামাইর সাথে ঝগড়া করতে হলো? ঈদের পরে বাপেরবড়ি আসতে দিবে এখন? যেই অমানুষ এরা! কি দেখে যে ওর বাপ বিয়ে দিয়েছিলো কে জানে!
শ্বাশুড়ির মুখ ভার,শ্বশুর ও কোন কথা সেভাবে বলছেন না,নিতু বুঝতে পারছে কি হচ্ছে! রানাকে কয়েকবার বলেছেও একবার রিমির সাথে কথা বলতে,বিকেলে ওদের বাসায় যেতে কিন্তু রানার সাফ কথা,দু'দিন পর পর সে এসব অশান্তি দেখতে ও বাসায় যাবে না। ওদিকে রিমির ও একই জেদ,তার বাপেরবাড়ি থেকে কেউ এসে বিচার না করলে সে না খেয়ে মরে যাবে,তবুও হার মানবে না। কি এক জ্বালা!


পরেরদিন নিতুর অনুরোধে শ্বশুর শ্বাশুড়ি গেলেন মেয়ের বাসায়। তারা বসার আগেই ও বাড়ির সবাই যেনো ঝাঁপিয়ে পড়লো, অভিযোগের লিস্ট বড়!! রিমি তার জামাইকে বলেছে,প্রতিমাসে ওকে হাত খরচ বাবদ টাকা দিতে হবে,এই সংসারে ওর আর বাচ্চাদের অবস্থান সবার আগে রাখতে হবে এরপর বাকিরা,কারণ এই সংসার চলে ওর স্বামীর টাকায়! সবার মুখে মুখে তর্ক করে,রান্না করে নিজের জন্য সবার আগে আলাদা করে বাটিতে খাবার নিয়ে রাখে,কথায় কথায় ওর জামাইর টাকা বলে কথা শোনায় সবাইকে ইত্যাদি।
নিলুফা বেগম বিরক্ত হয়ে গেলেন,তো ভুল কি বলেছে মেয়ে? ১১বছরের সংসার,মেয়েটার হাতে কখনোই জামাই একটা পয়সা দেয় না,কিছু চাইলেও সবার পরে আসে কেন? তার কি কোন মূল্য নেই? রান্না করে রাখে,যে যার মতো খেয়ে নেয়,কেউ আর খাবে কি না সে খেয়াল নেই,দুটো বাচ্চার মা সে। জামাইটা কোথায় নিজের বউ এর পক্ষে কিছু বলবে তা না,পরিবারের সাথে সেও তাল মেলাচ্ছে।
প্রায় ২ঘন্টার মতো আলোচনা,কান্নাকাটির পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলো,মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে ভাত খেলো। নিলুফা বেগম ও পাশে বসে চোখ মুছলেন। জামাইকে খুব করে অনুরোধ করলেন যেনো ওদের নিয়ে বাসায় যায় বেড়াতে,জামাই খুব আগ্রহ দেখালো না,যদি সুযোগ হয় যাবে বলে বিদায় দিলো তাদের কে৷ ভারাক্রান্ত মনে বাড়ি ফিরে আসলেন। এতো করেও এদের মনে একটু মায়া আসে না,অকৃতজ্ঞ সব।


বিকেলে রানা বাইরে যাচ্ছে বন্ধুদের সাথে দেখা করতে,নিতু ডায়নিং এ কাজ করছিলো,ওকে রেডি হতে দেখে বললো- আসার সময় মনে করে বাচ্চাদের এলার্জির ঔষধ টা নিয়ে এসো। এদিকে পাওয়া যায় না।
রানা বিরক্ত হয়ে বললো- তো সেদিন আব্বুর বাসায় গেলে নিয়ে আসলে না কেন?
নিতু- টাকা ছিলো না,তুমি তো কোন টাকা দাওনি আমাকে।
রানা- কেন তোমার কাছে কোন টাকা নাই?
নিতু ক্লান্ত গলায় বললো- নাহ। যখন যা টাকা আসে সবই তো কোন না কোন উসিলায় তুমি নাও,দাও না তো এক টাকাও।
রানা কিছুটা গলা চড়িয়ে বললো- যা লাগবে বলবে,আলাদা করে দিতে হবে কেন? নষ্ট করার জন্য? ঔষধের নাম ম্যাসেজ করে দিও,নিয়ে আসবোনে।
নিতু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে! এই সংসারে বউদের হাতে টাকা দেয়া নিষেধ, নিতুর শ্বশুর এর নিয়ম, রানাও মানে খুব আন্তরিকতার সাথে। ওদিকে কাজ করে নিতুর হাতে যা কিছু আসে রানা কায়দা করে সেটাও নিয়ে নেয়, কোনভাবেই বউয়ের হাতে টাকা রাখা যাবে না। তাদের ভাষায়,বউদের হাতে টাকা থাকা মানেই অপচয় করবে,সংসারের বরকত কমে যাবে। কিন্তু সংসার যে স্বামী স্ত্রী দুজন মিলেই হয়,সব রকমের প্রয়োজন,অপ্রয়োজন,
আনন্দ,কষ্টে দুজনের ই অবদান থাকে এটা না বুঝলে সংসার করা কি হয় আসলে?


আজকাল রানা আর নিতুর মাঝে বনিবনা ভালো নেই,নিলুফা বেশ খেয়াল করছেন৷ কি যে হয় এদের! নিতু খুবই চাপা স্বভাবের এবং অভিমানী,অন্যদিকে রানা একরোখা আর সব কিছুতে নিজের বড়াই করা পছন্দ কিন্তু বউকে সে খুব ভালোবাসে। নিতুর অভিমানের কারণ না বুঝলেও নিতুর গম্ভীর মুখ সে সহ্য করতে পারে না।
নিলুফা গ্রামে চলে যাবার আগে একবার নিতুর সাথে কথা বলবেন ঠিক করেছেন,ধান উঠাবার সময় ঘনিয়ে আসছে তারা স্বামী স্ত্রী দুজনেই এই সময় গ্রামে চলে যান,২-৩ মাস পর আসেন আবার শহরে।
- বউমা,মনটা খুব ভার মনে হচ্ছে? কোন সমস্যা?
শ্বাশুড়ির প্রশ্ন শুনে নিতু মুখ তুলে তাকে দেখলো একবার,হাসি ফুটাবার চেষ্টা করে বললো,
- না মা তেমন কিছু না এমনি!
- মা গো,এই সংসারে মুখ ভার করে কেবল দিন ই যায় কেউ বুঝবে না,মনে কষ্ট পেলে বলে ফেলবে।
নিতু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
- তাতে কি লাভ মা? মানুষের দাম নেই তার আবার কষ্টের দাম!
- রানা কিছু বলছে? কি করছে আবার?
নিতু কিছু না বলে চুপ করে শাকের পাতা ছিঁড়ে ঝুড়িতে রাখতে লাগলো। খানিক বাদে বললো,
- মা,আপনার ছেলের কেন মনে হয়,ঘরের বউ এর সিদ্ধান্ত নেবার কিছু নাই,তার পছন্দ অপছন্দ থাকার কিছু নাই, তার হাতে টাকা থাকতে নাই?
নিলুফা সাথে সাথে বললেন,
- সে তো যা দেখেছে তাই শিখেছে ভালো মন্দের যাচাই নেই। ওর বাপ যা করেছে তাই করে!
- কিন্তু সে তো অনেক বিষয়েই আব্বার সাথে একমত হয় না,এই বিষয়ে কেন এতো মিল?
নিলুফা বেগম একটা নি:শ্বাস ফেলে বললেন,
- আমি মা অতো তো বলতে পারিনা তবে আশা করছিলাম রানা অন্তত শিক্ষিত ছেলে হিসেবে বউ কে ঠিক মতো মূল্য দিবে,সারা জীবনে আমার কষ্ট ও বুঝেনি এখন বউয়ের বেলায় ও বুঝে না,কি আর বলবো সবই কপাল।


নিতু আর কথা বাড়ালো না। 'সবই কপাল' হলেও রিমি এই বাসায় এলে সূক্ষভাবে তদন্ত করে সংসারে কোন জিনিস কিভাবে হচ্ছে সেখানে ভাবির অবস্থা কেমন? ভাই কি ভাবিকে বেশি গুরুত্ব দেয়? আলাদা করে হাত খরচ দেয়? তখন নিলুফা বেগম মেয়েকে পালটা কিছু না বলে কি হচ্ছে সবই রিপোর্ট করেন। সব দিকেই ব্যালেন্স রাখা আর কি! মেয়ে-বউ কারো কাছেই তিনি শক্রু হতে চান না,ভালো মন্দের হিসেব পরে।
নিতুর মাঝে মাঝে ক্লান্তি লাগে,একই বিষয় নিয়ে নিত্য নতুন কষ্ট পেতে। রানা ওর সাথে যুক্তিতে পারেও না কিন্তু গোড়ামি ছাড়বে না৷  এই ১০ বছরে এমন অসংখ্য সময় এসেছে যখন নিতুর খুব দরকার কিন্তু রানার কাছ থেকে এক পয়সাও পায়নি আবার সংসারের কঠিন প্রয়োজনে নিতুর জমানো টাকার উসিলায় সমস্যার সমাধান হয়েছে কিন্তু কখনো চাইলেও নিজের জন্য সামান্য কিছু টাকা রানা দিতে নারাজ! হাজারো প্রশ্ন কৈফিয়ত দিতে দিতে বিরক্ত হয়ে যায় নিতু শেষমেষ চরম ঘেন্না লাগে নিজেকে,এভাবে নিজের স্বামীর কাছ থেকে টাকা নিতে হবে?


আজ বাজারে অনেকদিন পর সবুজ ভাইয়ের সাথে রানার দেখা হলো,স্কুল জীবনে খুব পছন্দের একজন বড় ভাই ছিলেন,ক্লাসে ভালো ছাত্র বিধায় আব্বাও তার উদাহরণ দিতেন খুব। চা খেতে খেতে অনেক গল্প এক পর্যায়ে জিনিসপত্রের এই চড়া দামের বাজারে সংসার চালানোর প্রসঙ্গ এলো। রানার তো অলরেডি বড় অংকের লোন আছেই কথায় কথায় কথায় সেটা বললে, সবুজ ভাই বললেন
- তোর জন্য তো তবু ভালো সাপোর্ট হিসেবে বউ আছেরে,চাচা-চাচিও যথেষ্ট করেন। আমার তো পুরো সংসার একা টানতে হয়,কি যে অবস্থা!  পাগল হয়ে যাচ্ছি!
রানা হাল্কা হেসে বললো,
- হ্যাঁ তা বটে। তবে আব্বা-মার তো আরো ৩জন ছেলে মেয়ে আছেন,কতো আর করবে!
- কেন তোর বউ তো শুনেছি এলাকার বেশ ভালো দর্জির কাজ করে, যা ইনকাম করে সবই সংসারে দেয়। এটুকু যে কতো বড় সাহায্য জানিস? না থাকলে বুঝতি!
রানা এবার মিইয়ে যায় কিছুটা!
- হ্যাঁ তা করে বটে।
সবুজ ভাই আপনমনে বলতে থাকেন,
- সংসারে বউ যদি সাহায্য করে তাহলেই উন্নতি আসে,আর এই সময় দুটো পয়সা কে কাকে দেয় এমনি? বউভাগ্য বটে তোর!
রানা কোনরকমে কথা কাটিয়ে সেদিন চলে আসে। তার বউ কে নিয়ে তাহলে পাড়ার ভাবিরাও বেশ আলোচনা করে এভাবে!


বাসায় ঢুকেই রিমির গরম গলার শব্দে রানার আতংক লাগলো। দু'দিন হলো এসেছে,আব্বা বাড়িতে মা আছেন আর নিতু সকালে ওর মায়ের বাসায় গেলো,বিকেলেই ফিরবে বলেছে। রানা ধিরে ধিরে দরজা খুলে নিজের রুমে গেলো। রিমি মায়ের সাথে বেশ চড়া গলায় চেঁচাচ্ছে,
- এই বাড়িতে আমি কে? দুটো পয়সা কামাই করে বলে তোমার ছেলের বউ ই এখন মাতব্বর!
নিলুফা বেগম কিছু বললেন না। রিমি একাই বকে যাচ্ছে,
- আমার স্বামী তার বোনকে দাম দেয় আমার চেয়ে বেশি কেন? তার বোন চাকরি করে তাই! এখানে আমার বাপ-ভাই ও ভাবিকে দাম দেয় বেশি কেন? সে কামাই করে তাই! পয়সা ছাড়া কিছু চেনো তোমরা? তো আমাকেও পয়সা দাও,কলেজ পাশ করার আগেই ধরে বিয়ে দিলে,কোনদিন বাড়ির বাইরে যেতে দাওনি খালি বিয়েই সব,তো এখন কেন আমার এতো অশান্তি? সংসারে এত কাজ করেও আমার নাম নাই,কেউ গুণেও না,অল্প শিক্ষিত রানতে জানা বউ,কিছুইই বুঝিনা আরো কতো দোষ!
রানা বিছানায় শুয়ে মোবাইল ঘাটছে আর বোনের কথা শুনছে। এদিকে নিতু বলে তার নাকি রানার কাছে কোন মূল্য নেই ওদিকে রিমিও একই অভিযোগ স্বামীকে নিয়ে অথচ মানুষ হিসেবে দু'জনের,তাদের সংসারের কতো পার্থক্য! সমস্যাটা আসলে কোথায়? বা এর শেষ কোথায়?


নিতু বেশ ক'দিন ধরে অস্বস্তিতে ভুগছে! রানা আজকাল সেভাবে ওর হাতের টাকার হিসেব নেয় না,খুব একটা চায় ও না। ঘটনা কি? এক পর্যায়ে বলেই ফেললো,
-তুমি কি কোন কারণে রেগে আছো আমার উপর?
- নাহ।
স্বাভাবিক কন্ঠেই বললো রানা। নিতু আরোও চিন্তায় পরে গেলো।
-ইদানীং তুমি আমাকে টাকা পয়সা নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করো না,নাও না মানে কিছু কি হয়েছে?
রানা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো,
-আমি চাই তোমার কষ্টের উপার্জনের টাকা তোমার কাছেই থাকুক,যখন প্রয়োজন হবে আমি নিবো কিন্তু তোমার হাতেও কিছু থাকুক।
নিতু অবাক হয়ে তাকালো,বলে কি লোকটা!
রানা একটু হেসে বললো,
-আমার ইনকামটা আরেকটু বাড়লে ইনশাআল্লাহ তোমাকে কিছু অল্প হলেও দিব প্রতিমাসে৷ আসলে তোমার হাতে টাকা তো আমার ই দেয়ার কথা কিন্তু আমার অবস্থা ভালো না,চেষ্টা করবো এখন থেকে অভ্যাস করার।
নিতুর বুকের ভেতর উথাল-পাথাল করছে,চোখ ছাপিয়ে কান্না আসছে! এমন সময় কোন দিন আসবে ভাবেনি। স্বামীর হাতে হাত রেখে কাঁধে মাথা এলিয়ে দিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো।
-আমি তোমাকে রাগ করে অনেক কথা বলেছি,আমাকে মাফ করে দিও। আসলে টাকা আমাকে দাও বা না দাও ওসব নিয়ে রাগ হইনি,তুমি আমাকে যে গুরুত্ব দিচ্ছ না,আমার মতামত চাও না সেজন্য মনে হতো,তুমি আমাকে ভালোবাসো না।
রানা অবাক কন্ঠে বললো,
-তোমাকে ভালোবাসিনা কে বললো? ধুর। আসলে আমি তোমার প্রয়োজন পূরণ করতে পারি না,সে অক্ষমতার জন্য নিজের রাগ তোমার উপরে ঝারি! আমি যে পারছিনা সব করতে সেজন্য তুমি মনে হয় আমাকে সম্মান করো না,ভালোবাস না। এটাই সারাক্ষণ মনের মধ্যে আতংক লাগে!
শক্ত করে নিতুর হাত চেপে ধরে রাখে রানা। নিতুর খুব অপরাধী লাগে নিজেকে! মানুষ টা কে সব সময় ওর শ্বশুর এর মতো কেউ ভেবেছে,ননদের কথা শোনে ভেবেছে,আদতে সে ভিন্ন! ও সেটা আবিস্কার করতে পারেনি। সেদিন পারুল খালাও বলেছিলো,
-তুই আর রানা একজন আরেকজন কে মনে হয় বুঝিস কম,ভাবিস বেশি। তুই তাকে সম্মান দিবি সে তোকে ভালোবাসবে এটাই তো হবার কথা,দুজনেই শুধু তুলনা আর হিসেব করিস,অন্যদের খারাপটা দেখে আতংকে ভুগিস৷ এটা ভুল নিতু,তুই বুঝদার মেয়ে এগুলো ঠিক করে ফেল।
এর মাঝে চলে গেছে দশ বছর। কতো তিক্ততা আর খারাপ স্মৃতি কিন্তু ওভাবে ভাবা হয়নি এতো বছরেও। কখনো খোলামেলা কথাও হয়নি দুজনের। মাঝে চলে গেছে অনেক বছর,আর স্মৃতিতে জমেছে হাজারো কষ্টের অভিজ্ঞতা!


আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
লেখকের অন্যান্য ব্লগ সবগুলো দেখুন