সাহিত্য

কাজেমা

কাজেমা
শীত প্রায় শেষের দিকে বলা যায় কিন্তু এলাকায় সাত সকালের কুয়াশা দেখলে বুঝা দায়! চারপাশ কেমন অন্ধকার অথচ বেলা বাজে ৯টা। সূর্যের আলো মনে হয় আর কিছুক্ষন পরেই ফুটে উঠবে কিন্তু ততোক্ষন কি আর বাড়ি বসে থাকা যাবে? সংসারের বেলা তো শুরু হয় সেই ভোর থেকে,সূর্যের আলোর সাথে এর সম্পর্ক খুব ভালো বলা যায় না। আলো যখনই ফুটুক ঘরের চূলা জ্বলে উঠা চাই সকাল সকাল।
বৃদ্ধা শ্বাশুড়ি আর জামাইর জন্য গরম ভাত,আলু ভর্তা করতে করতে এক বাটি মুড়ি খেয়ে নেন কাজেমা বেগম। মাটির চূলায় ভাত ফুটতে ফুটতে কল চেপে পানি এনে রান্না ঘরে রাখলেন। একমাত্র ছেলেটা রাতে বাড়ি ফেরেনি,আছে কোন বন্ধুর বাড়ি হয়তো তবুও তার জন্য আলাদা করে ভাত তুলে রাখলেন,যদি ফেরে তো খেয়ে নিবে। কাশতে কাশতে শ্বাশুড়ি যখন ঘর থেকে বের হলো,তাকে খাবারের ব্যাপারটা বুঝিয়ে দিয়ে তিনি ছুটলেন।
মাস্টার আপার বাড়ীতে চূলা জ্বলে সকাল ৭টা থেকে। উনারা জামাই অফিসে যায়,ছেলে মেয়ে কে নিয়ে উনি স্কুলে যান। কাজেমা দ্রুত কড়্রা নাড়লেন,আপার মেয়েটা দরজা খুলে দিল। কাজেমা কে দেখে আপা বললেন,
-খালা আসছেন? বাথরুমে গরম পানি মেশানো আছে বালতিতে,হাত পা ধুয়ে আসেন,আমি রুটি ভাজি করছি আপনি তরকারি কেটে দেন।
কাজেমা দ্রুত কাজে হাত লাগায়। আপার জামাই দুপুরে ভাত নিয়ে যায় অফিসে তাই এক পদের তরকারী রেঁধে দিতে হয় সকালে। ৯টার মধ্যে সবাই বের হয়ে যাওয়ার পর কাজেমা নাস্তা খেতে বসেন,এমন সময় কেউ দরজায় কড়া নাড়লো। গলার আওয়াজ শুনেই বুঝলেন কে,নাস্তা রেখে একটা নিশ্বাস ফেলে দরজা খুলে দিলেন,
- আয় ভিতরে আয়।
কুলসী একটা মোড়া টেনে নিয়ে মায়ের কাছে যেয়ে বসলো।
- কি দিয়া খাও আজকা? হুদা আলুভাজি?
কাজেমা মেয়ের দিকে খাবারের প্লেট এগিয়ে দিতে দিতে বললেন,
- ডিম থুইয়ে গেছে আফায় ভাজি নাই,এক পদেই চলে আমার। তুই খাবি? ভাজুম?
মাথা নাড়ে কুলসী। কাজেমা ডিম ভাজতে চলে যায়। কাজের ফাঁকে মেয়ের দিকে একবার ফিরে তাকালেন। কি হাল হয়েছে চেহারার! টকটকে ফর্সা মেয়েটার সারা মুখেই ছোপ ছোপ দাগ,মারের দাগ। বুকটা ভারী হয়ে আসে!
রোজ ই এই সময় মেয়েটা আসে তার কাছে, জামাইর বাড়ীর সবার রান্না খাওয়া গুছিয়ে দিয়ে,মায়ের সাথে দেখা করে খেয়ে যায়।
ও বাসায় সকালের রান্না করা খাবার কুলসীর জন্য না,জামাই সহ বাড়ীর সবাই খাবে কিন্তু কুলসীর খেতে হয় রাতের বাসী ভাত আর বেঁচে যাওয়া তরকারী। এই সময় ওগুলো মুখে রুচে না,তবুও খায় এরপর মায়ের কাছে এসে ভালো কিছু খেয়ে যায়। মেয়েকে ডিম ভেজে দিয়ে বললেন,
- জামাই কামে গেছে আইজ?
- নাহ ! শুইয়া আছে। ভাল্লাগেনা বলে। আব্বায় কই? সে গেছে কামে?
কাজেমা পানি খেয়ে বললেন,
- গেছে মুনে হয়। তোর দাদি রাইতে বকছে, সকালে যাইতে পারে কামে। বাদল বাড়ীত আসে নাই,কই আছিল কে জানে?
- নাসির ভাই গো বাড়িত আছিল। সারা রাইত তাস খেলছে সবডী,তোমাগো জামাইও আছিল ঐহানে। ভোরে আইছে।
- ভালোই ! বাড়ির বেডারা রাইতভর মওজ কইরা আসে,কামে যায় না আর বেডিরা ভোরে উইঠা কামে বাইর হই,মাইনষের বাড়ী খাই,পয়সা নিয়া ঘর ভাড়া নেই,তাগো খাওনের খরচ দেই!
কুলসী খাওয়া শেষে গা টা এলিয়ে দেয় দেয়ালের সাথে,
- তাও তো আমরা ভালা না! মাইর খাই ভাত-কাপড় নাই। খালারা নতুন চাদ্দর কিনছে নাকি?
বিছানার চাদরের দিকে তাকিয়ে মা কে জিজ্ঞেস করে কুলসী,আসলে প্রসংগ পাল্টাতে চাচ্ছে, ভালো লাগে না এসব নিয়ে কথা বলতে।
- হ, ঐদিন আদুরীর খালায় আনছিল আফায় কিনলো,৬০০/- দাম।
কুলসী বের হয়ে গেলে কাজেমা বাড়ির অন্য কাজ শুরু করেন। আজকাল এতো কাজের ধাক্কা আর ভালো লাগেনা,বয়স হচ্ছে কিন্তু কি করবেন? সংসার তো চালাতে হবে।
১১বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিলো কাজেমার, সেই মাদারীপুর বাড়ী ছিলো তখন, ক’মাস বাদে জামাইর সাথে শহরে আসলেন,থাকতেন সাভার। একটা ঘিঞ্জি ঘরে তাকে রেখে সপ্তাহখানেক বাদে জামাই হাওয়া, কোথায় আছে কি খবর কিছুই জানেন না! একা শহরে সেই কিশোরী মেয়েটা কি করবেন? পাশের ঘরের খালা তাকে নিয়ে কাজ দিলেন এলাকার এক বাড়ীতে। সেই থেকে শুরু হলো মানুষের বাড়ী কাজ করার এই জীবন।
মাসখানেক পর স্বামী সাহেব ফিরে এলেন,এমন ভাব কিছুই হয়নি। ততোদিনে আশপাশ থেকে কাজেমা জানতে পেরেছেন,এই লোকের আরো কয়েক জায়গায় বউ সংসার আছে, ক’দিন এখানে তো ক’দিন ওখানে থাকে। কাজেমার বাপ ও দুই বিয়ে করা মানুষ ছিলেন,একগাদা ভাই বোন নিয়ে মা হিমশিম খেতেন। কাজেমা খুব একটা অবাক হলেন না,মানিয়ে নিলেন নিজেকে।
এরপর কেটে গেলো অনেক বছর, ৬বার মা হয়েছেন,৩ বাচ্চা মরে গেছে ৩জন আছে,একজন কে পালক দিয়ে এসেছেন সাভারের এক সাহেবের বাড়ি। কুলসী আর বাদল কে নিয়ে চলে এসেছেন নারায়নগঞ্জের একদম শেষ দিকের এই মফস্বল শহরে। একটা ঠাঁই মিলেছে মাথা গুঁজার কুড়ে ঘরে,বছর কয়েক আগে স্বামী তার বৃদ্ধা শ্বাশুড়িকে নিয়ে এসেছেন। দিনের পর দিন কাজেমা খেটে যাচ্ছেন। আগে এখানে ধান এর মৌসুমের কাজ ছিলো বেশি এখন শহুরে লোকজন এদিকে আসায় বাসা বাড়ির কাজ পাওয়া যায়। যা ক’পয়সা হাতে আসে সবই জামাই ছেলে নিয়ে যায়।
একমাত্র মেয়ে কুলসী ১৫ বছর বয়সে পালিয়ে বিয়ে করেছে এলাকার নেশাখোর জামাইল্যা কে,বাপের বাড়ি আছে ছেলের এই যা। কি প্রেম করেছিল এরা কে জানে! এখন শ্বশুড় বাড়ী গাধার খাটুনি খাটে,জামাইর মাইর খায়,পেটে বাচ্চাও এসেছে।
যোহরের আজানের পর পর ই আপার ছেলে-মেয়েরা বাসায় ফিরে আসে,ওদের মা আসবে ২টার পর। ওদের হাত-মুখ ধুইয়ে খেতে দিলেন কাজেমা। ছেলেটা খেলনা নিয়ে বসে গেলো,মেয়েটা তাকে শোনাচ্ছে আজ স্কুলে কি কি করেছে-
- জানেন নানি, আমার ক্লাসে একটা ইয়া বড় মেয়ে আছে আছিয়া নাম,ও আজকে আমার বাংলা বইয়ে দাগ দিয়েছে!
- কেন?? তুমি কিছু কও নাই?
- কি বলবো? ও তো অনেক বড় আমার চেয়ে সবাই তাকে আপু ডাকে।
- এতো বড় মাইয়া কেলাস থ্রি তে পড়ে? তাও তুমি কইবা যে,আপনে আমার বই এ দাগাইবেন না,বই দাগান ভালা না।
- আম্মুকে বলবো আসলে হু।
কাজেমা ওদের কে গোসলে দিয়ে ভাত বসালেন। ওরা খেয়ে ঘুমালে ওদের মা আসবে এরপর খেয়ে কাজেমা বাড়ী যাবেন। আপা মানুষটা ভালো,যাওয়ার সময় কিছু তরকারী দিয়ে দিবেন তার শ্বাশুড়ির জন্য।
কুলসী নাস্তা খেতে খেতে বললো,
- মা পেটের বাচ্চাটা ফালায় দিলে কেমন হয়?
কাজেমা একটু চমকে উঠেন!
- কি কস? ফালাবি কেন?
- দুনিয়ায়্ আইলে কি করুম? বাপের কোন গতি নাই,দাদি ফুপুর লাত্থি খাইব এরচেয়ে না আসুক!
বলতে বলতে কন্ঠ ধরে আসে কুলসীর। কাজেমা সব বুঝেও আগের মতোই বললেন,
- বাচ্চাটা আইলে জামাইল্যারে লইয়া আলাদা হইয়া যা,এরপর তুই কাম করা শুরু কর,এই যে শিউলী করতাছে না গার্মেন্সে (গার্মেন্টস) কাম,এরুম ওর লগে যাইয়া করবি। বাচ্চা ফালান ভালা না,গুনা (গুনাহ) হইবো।
- হো,তুমার মতোন আমিও জীবনডা কাম কইরা মরি,বাদাইম্যা জামাই আর পোলাপাইন পালি !
- তো আর কি করবি?
কুলসী আর কিছু বলতে পারে না। কিছু বলার নেই ও। নিম্নবিত্ত সমাজের মেয়েদের এটাই বাস্তবতা, এরা খেটেই যায় মার খায় তবুও এরা ভালো না। তবু জামালের সাথে প্রেমের সময় কুলসী ভেবেছিল হয়তো ওর অবস্থা মায়ের মতো হবে না,জামাল তাকে সুখে রাখবে কিন্তু নাহ!
আজকাল জামালের মার খুব লাগে,শরীর দুর্বল থাকে এরমধ্যে এতো মার সহ্য হয় না। মনে চায় লোকটাকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলা যেত! শ্বাশুড়ী ননদের অত্যাচার তো সাথে আছেই। মায়ের কাছে আসে কিন্তু বাড়ি যেতে পারে না। বাপ একজন আরেক অমানুষ,দাদি কথা শোনায়, বড় ভাইটা কিছুই করেনা, এলাকার নেতা নাসির ভাইয়ের পিছনে ঘুরে দিন কাটায়।
এই আপার বাসায় প্রথম কাজ শুরু করেছিলো ও নিজেই। আপার ছেলে তখন স্কুলে যায় না,ওকে রাখতো আর বাসার কাজ করতো। কোন ভূতে যে পেলো এর মধ্যে প্রেম শুরু হলো ঐ জামালের সাথে। এক সাথে নাসির ভাইদের ক্লাবে সিনেমা দেখতো,বিশ্বরোডে ঘুরতে যেতো। এরপর একদিন পালিয়ে বিয়ে। এলাকায় ওর বান্ধবীরাও কম বেশি তাই করেছে।এখানে সবাই দিন আনে দিন খায়,ছেলে-মেয়ে বিয়ে শাদি দেয়ার অতো সময় নেই যে যার মতো করে নেয়।
তবুও কুলসীর আজকাল কষ্ট হয়। মানুষ তো বদলাতে পারে তাই না? এ যে সিনেমায় যেমন বদলায় বিয়ের পর নায়ক-নায়িকারা! ও তো তেমন ই ভেবেছিলো কিন্তু কিছুই বদলায়নি। আজকাল খুব বাচ্চাটা ফেলে দিতে মনে চায় কুলসীর! যদি ছেলে হয় তাহলে বাদলের মতো হয় যদি? ওর শ্বাশুড়ি তো অনেকবার বলেছে,’’ফালায় দে,এসব আপদ! রাইখা লাভ কি? পালতে পারবি? আমার ঘরে আর বাড়তি মানুষের জায়গা নাই কইলাম।‘’
বাড়ী ফিরে দেখে জামাল মাত্র ঘুম থেকে উঠেছে,চোখ দুটো লাল টকটকে। ওকে দেখে দুটো গালি দিয়ে খাবার দিতে বললো।
কুলসী খাবার দিলো,এদিকে শ্বশুড় ঘরে বসে পান খেতে খেতে ছেলেকে বকে যাচ্ছে। মনে মনে আল্লাহ কে ডাকে কুলসী! শ্বশুড়ের সাথে রেগে যেয়ে না জানি ওকে মারা শুরু করে আবার। মিনিট দশেকের মধ্যেই শুরু হলো বাপছেলের চিৎকার। শ্বাশুড়ি চুপচাপ পাশের ঘরে সিরিয়াল দেখছেন,ননদ স্কুলে। এক পর্যায়ে জামাল খাবারের প্লেট ছুড়ে ফেলে দিল,কুলসী সে প্লেটের খাবার কুড়াতে লাগলো,ভালো কয়টা তুলতে পারলে পরিস্কার করে ও খেতে পারবে পরে কিন্তু দানবটা এগিয়ে আসলো ওর দিকে, ‘’ তুই খাওন তুলস কেন? আমারে বকতাসে তোর কানে যায়না? তুই খাওনের চিন্তা করস ফ……” শুরু হলো লাত্থি-কিল। একসময় কুলসীর মনে হলো দুনিয়াটা অন্ধকার হয়ে আসছে,কোনমতে উঠে দাঁড়াতে চেষ্টা করলো,তখনই মাথা ঘুরে পড়ে গেলো। কুলসী চোখ দু’টো বন্ধ করতে করতে মনে হলো দেখছে,চারপাশে রক্ত……
কাজেমা চুল আঁচড়ে দিচ্ছিলো আপার মেয়ে নিশাতের। গোসল করে চুল শুকিয়েছে,ছোট মানুষ চুল বাঁধার খুব শখ আজকাল। শিউলির মা দৌড়ে আসলো আপার বাসায়,
- ঐ কুলসীর মা,জলদি চলো ।তোমার কুলসী মনে হয় বাঁচবো না!
গলা শুকিয়ে আসে কাজেমার! কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করেন,
- কি অইছে?
- জামাইল্যায় এমুন মারছে,সমানে রক্ত বাইর হইতাছে মনে হয় বাইচ্চাটা গেছে গা! সাইদুর ডা আইতাছে,তুমি চলো।
কাজেমা চোখ দুটো নিশাতের চুলের দিকে ফিরিয়ে নেয়।
- তুমি যাও আমি আইতাছি। ওগো মা আসুক,একলা রাইখা কই যামু এহন?
শিউলীর মা কথা না বাড়িয়ে চলে গেলেন। কাজেমা নিশাতের চুল বাঁধা শেষ করে ঘুমাতে বলে ঘর মুছতে চলে গেলেন।
নিশাত বিছানায় শুয়ে কমিকসের বই পড়তে পড়তে তাকিয়ে দেখে,কাজেমা নানি কাঁদছেন আবার খুব যত্ন করে ঘর মুছে যাচ্ছেন। ৭বছরের নিশাতের ভেতরটা খুব খারাপ লাগে কিন্তু উনি কেন কাঁদছেন? কুলসী আন্টির রক্ত বের হচ্ছে তাই?
বাইরের ঝলমলে রোদের আকাশটা হটাত কালো হয়ে আসে হয়তো অসময়ে বৃষ্টি হতে পারে। কাজেমা দ্রুত হাটছেন,হাতে খাবারের বাটি আর কিছু টাকা দিয়েছেন আপা কুলসীর জন্য। তিন রাস্তার মোড়ে এসে কাজেমা হাটার গতি কমিয়ে দেন,ডানে গেলে কুলসীর শ্বশুড়বাড়ি আর বাম দিকে নিজের। যদি এখন কুলসীর শ্বশুরবাড়ি যান খুব সম্ভাবনা আছে ওরা কুলসীকে তার সাথে বাড়ি পাঠিয়ে দিবেন,আর ফেরত নিবে না। কি করবেন এখন?
সংসারে তার ঘাড়ে তিন জন আছে,আবার মেয়েক নিয়ে আসবেন? স্বামী ছাড়া এই মেয়েকে নিয়ে কি করবেন? হাজারো চিন্তা ঘিরে ধরলো তাকে। অনেকদিন পর এগারো বছরের সেই ছোট্ট অসহায় মেয়ে মনে হলো নিজেকে! কি করবেন? কোথায় যাবেন?
আকাশে মেঘ ডেকে উঠলো,ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি শুরু হচ্ছে। কাজেমা ঘোমটা টা বড় করে টেনে দৌড় দিলেন, বাম দিকে।

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)