উইমেন (সামাজিক,মানসিক,সুবিধা বঞ্চিত নারী)

প্রাপ্য অধিকার বনাম সম অধিকার

প্রাপ্য অধিকার বনাম সম অধিকার
নারী অধিকার নিয়ে যত্রতত্র নানা সমালোচনার ঝড়। কখনো চায়ের দোকানে, কখনো বা বাসের ভীড়ের কোন এক প্রান্ত থেকে, আবার কখনো বা বিতর্ক প্রতিযোগীতায়। একটা ঘটনা দিয়ে শুরু করছি। একদিন, বাসে ওঠার পর দেখি কোনরকম তিল ধারণের জায়গা নেই যেন, তবুও আমাকে যেতেই হবে, সময়ের সাথে পাল্লা দিতে এভাবে ওঠা। দেখলাম সামনের মহিলা প্রতিবন্ধি আর শিশুদের জন্য বরাদ্দকৃত সিটগুলোর একটিতে একজন পুরুষ বসা। আমি কিছু বলার আগেই পুরুষটির পাশে বসে থাকা একজন মহিলা বললো,  মহিলা সিট ছেড়ে দেন। লোকটির কোন উদ্যোগ নেই, অন্য একজন রেগে যেন আগুন, মহিলাটি মধ্যবয়সী হবেন, লোকটিকে যেন ধমকে উঠলেন, বললেন, "এই ছেলে চোখে দ্যাখোনা নাকী? ওঠো! লোকটি উঠলেন ঠিকই আমি বসতেও পারলাম, কিন্তু তার কথা শুনে সবাই চুপ হয়ে গেলো, সে যা যা বলেছে আমি নারী হয়ে তাতে একমত, বললো, -আপনারা নারীরা তো সম অধিকারের জন্য আন্দোলন করেন, এখন আবার এক্সট্রা সূযোগও চান, সম অধিকারের এরকম এক্সট্রা কোন কিছুরই সূযোগ নাই! আপনারা সব ধরণের কাজ করতে পারবেননা, অথচ বেতন ঠিকই সমান সমান চাইবেন! চাকুরীর ক্ষেত্রে আপনাদের অগ্রাধিকার বেশী, তাহলে আমরা পুরুষরা কি আঙ্গুল চুষবো! ঘরের বউ হয়ে আসলে আপনাদের সমস্ত দায় আমাদের উপরে বর্তায়, আবার নিজেরা াকুরী করলে ো সারা জীবন খোটা দিতে থাকেন............ আরো অনেক কিছু! আমি শুধু একটা কথা বলতে চেয়ে থেমে গিয়েছিলাম, যে যারা প্রাপ্য অধিকারটুকু পেতে চায় তাদের ক্ষেত্রে আপনি কী বলবেন? আমি বলতে পারিনি কারণ আমি জানতাম তার উত্তর কী হবে? এর উত্তর হবে, সমঅধিকার যারা চায় তাদের সংখ্যায় বেশী। আসলেই তাই! এক্ষেত্রে আমরা যারা প্রাপ্য অধিকারের পক্ষে তারা বিপদে পড়ে যাই,  জীবন যুদ্ধে যাদের আজ পর্যন্ত প্রাপ্য অধিকারই পাওয়া হলোনা তারা সম অধিকার চেয়ে নিজেদেরকে সমাজের চোখে কলঙ্কিত নাইবা করলাম! সৃষ্টিগত কারণেই নারী শারীরিক ভাবে পুরুষদের চেয়ে দুর্বল! এজন্য ইসলাম  তাদেরকে বাইরের চেয়ে ঘরের কাজেই  বেশী উৎসাহিত করেছে, তবে কেউ বাইরে করতে চাইলে নির্দিষ্ট নিয়মমতো সেটাও করতে পারবে। নারীকে ইসলাম  সবচেয়ে বেশী সম্মানিত করেছে মা হিসেবে । যেটার পরিপ্রেক্ষিতে সন্তান লালন পালনে মা এতটকুও বিচলিত হননা। তবে এবার কথা হলো যারা সম অধিকারের বিরুদ্ধে কথা বলছে তাদের এতটুকু খেয়াল রাখতে হবে, ঘরের বউটাকে যেন কাজের মেয়ে না মনে করি, তার ইচছা অনিচ্ছার কেয়ারতো পুরুষদেরই করা উচিত! আমি সারাদিন বাইরে কষ্ট করে আসি বলে একটু এদিক সেদিক হলেই তার উপর মানসিকভাবে, শারিরীক ভাবে চাপ প্রয়োগ করবো! জৈবিক প্রয়োজন মেটাতে স্ত্রীর ইচ্ছের তোয়াক্কা না করেই তা পূরণ করবো। শুধু দাম্পত্য জীবনেই কেন! আজও কোন না কোন ঘরে কণ্যা সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য মাকে কটুক্তি করা হয়!  আজও  কন্যা সন্তানকে ইউনিভার্সিটিতে পড়ানোর ক্ষেত্রে বাবা মা পরিবার পরিজনদের মানসিক দুশ্চিন্তার শেষ নেই!  যে বাবা মা কণ্যা সন্তান পেয়ে খুশি থাকেন, তারাও এক্ষেত্রে দুশ্চিন্তা করেন!  কারণ কী? কারণ একটাই নারী প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত, কারন নারীকে মানুষ নয় ভোগ্য বস্তু হিসেবে মনে করা হয়! এখনও বিয়ের ক্ষেত্রে পুরুষরা নারীর সৌন্দর্যকেই বেশী প্রাধান্য দেয়! এটাও কী ঠিক সেই কারণেই নয়? আজ কোন নারী যদি বিয়ের ক্ষেত্রে একজন সুন্দর পুরুষকে প্রাধাণ্য দেয়  তবে সেটা নাকী অহেতুক বোকামী, তকে বলা হয় ছেলে অমুক বড় কোম্পানীর মালিক, অমুক বড় চাকুরী করে ............ ব্লা ব্লা ব্লা। আমি জানি লেখাটা হয়তো অনেকটা অগোছালো! তবুও সবশেষে আমি এই ব্লগের মাধ্যমে সব্বাইকে বলতে চাই নারীকে মানুষ মনে করুন! আমরা সম অধিকার চাইনা আমরা আমাদের প্রাপ্য অধিকারটুকু পেতে চাই!

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ
লেখকের অন্যান্য ব্লগ সবগুলো দেখুন