বিবিধ

এই আবহাওয়া কিসের ইঙ্গিত?

এই আবহাওয়া কিসের ইঙ্গিত?

প্রচন্ড গরমে হাসফাস করছি সবাই, অনেকেই বলছে এমন গরম আগে দেখে নি। আর আবহাওয়ার অদ্ভুদ আচরন, ঋতু অনুযায়ী তাপমাত্রা, বৃষ্টি, হাওয়ার গতি কিছুই যেন ঠিক আগের মত নেই। বাংলার ষড়ঋতুর সৌন্দর্য এখন কেবল বইয়ের পাতায়। কেন এমন হচ্ছে? চারিদিক খেয়াল করে দেখি এর জন্য আমরাই দায়ী। এখনতো ঘরে ঘরে ফ্রিজ, না রেখেও উপায় নেই, এছাড়া ঘরে বাইরে গনহারে এয়ার কন্ডিশনারের ব্যাবহারও বাড়ছে। এদিকে কয়লা, গ্যাস, তেল ব্যাবহার করে বিদ্যুৎ উপাদন হচ্ছে, কল-কারখানা-যানবাহন চলছে। এই সকল উৎস থেকে নির্গত গ্রিনহাউজ গ্যাস পৃথিবীটাকে দিন দিন উষ্ণ থেকে উষ্ণতর করে দিচ্ছে। বিশ্বের মোড়লরা ঘোষনা দিয়েছে গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরন কমানোর, চুক্তিও হয়েছে ২০০টি দেশের সম্মতিতে। কিন্তু ওই সব গ্যাস নিঃসরন বন্ধ করা রাতারাতি সম্ভব নয় কারন তার উপযুক্ত বিকল্প এখনও আবিস্কার হয় নি। গ্লোবাল ওয়ার্মিং ও ওজন স্তরে ফুটোর জন্য দায়ী CFC-11 এবং  CFC-12 গ্যাসের ব্যবহার কমেছে, তার পরিবর্তে HFC ও PFC গ্যাস ব্যবহৃত হয়; যদিও এরা ওজন স্তরের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করে না, কিন্তু উষ্ণতা বৃদ্ধিতে এদের প্রভাব কার্বন-ডাই-অক্সাইডের চেয়ে হাজারগুন বেশী। তাই দিন দিন এই গ্যাসেরও ব্যাবহার কমিয়ে আনা হচ্ছে। এর পরিবর্তে বর্তমানে HFO গ্যাস ব্যাবহার করছে উন্নত বিশ্ব, কিন্তু এই গ্যাসেরও ক্ষতির পরিমান কার্বন-ডাই-অক্সাইডের প্রায় সমান। অর্থাৎ, এখনও এমন কিছু আবিস্কৃত হয়নি যা পরিবেশের ক্ষতি না করেই আমাদের শীতলতা দিতে পারে। তাই আমাদের উচিত যতটা পারা যায় এসব শীতাতপ যন্ত্র ব্যাবহার না করে থাকার চেষ্টা করা। এদিকে জীবাশ্ম জ্বালানীর বিকল্প, যেমন সৌর, পারমানু, জল, বাতাস ইত্যাদি প্রাকৃতিক ও নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যাবহার বাড়াতে হবে। সাথে সাথে গবেষকদের সহায়তা করতে হবে যেন তারা এই সকল নবায়নযোগ্য শক্তিকে আরও বেশী সাশ্রয়ী ও কার্যকরী করতে পারে। আমরা যদি এখনই এ বিষয়গুলো নিয়ে সচেতন না হই তবে ভবিষ্যতে আমাদের কপালে যে কি আছে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। বিরুপ আবহাওয়া যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ডেকে আনতে পারে। আর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ঝুঁকি তো আছেই, তা হলে বাংলাদেশের অনেক এলাকাই বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে।


আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ