পরিবার ও আমি (বিয়ে ,দাম্পত্য,শিশু লালন পালন )

আমাদের সন্তান কী আমাদের কাছ থেকে নিরাপদ?

আমাদের সন্তান কী আমাদের কাছ থেকে নিরাপদ?

সন্তান লালন-পালনে প্রত্যেকেরই আলাদা নিজস্ব কিছু কৌশল থাকে। কিন্তু অনেক সময়ই আমরা খেয়াল করি না লালন পালনের কৌশলের নামে আমরা সন্তানের উপর অত্যাচার করে ফেলছি কিনা। সেরকম ভাবেই আমরা অনেক সময় বাচ্চাদের শারীরিক ভাবে আঘাত করি। তারপর সুষ্ঠুভাবে লালন-পালনের নামে এ আঘাতের বৈধতা প্রতিষ্ঠা করি। আমাদের সন্তানরা যদি আমাদের কাছ থেকেই নিরাপদ না হয় তাহলে সমাজের অন্যান্য অন্যায়ের থেকে কিভাবে তাকে নিরাপত্তা দিব জানি না!

 

একটু ভেবে দেখু..., কাউকে শারীরিকভাবে আঘাত করা মানসিক অসুস্থতা ছাড়া আর কিছুই না। পিচ্চি হোটেল বয় একটা বেয়াদবী করলো আর আপনি দিলেন একটা থাপ্পর। কেনো ভাই! আপনার ক্ষমতা আছে তাই? আপনার ভুলের কারণে যদি অফিসে আপনার বস আপনাকে থাপ্পর দিতে আসে পারবেন মেনে নিতে? নাকি বলবেন বেয়াদবী করলেতো থাপ্পর খাবোই। কয়েকদিন আগে দেখলাম এক রিকশার সম্ভবত একটা বাইকের সাথে ধাক্কা লেগেছে কিংবা অন্য কিছু। আমি যেহেতু ব্যাপারটা দেখি নাই তাই কার ভুল হলো সেইদিকে না যাই। আমি যা দেখেছি তা হলো সুটেড বুটেড বাইক ড্রাইভার হঠাৎ অনন্ত জলীল স্টাইলে বাইক থেকে নেমে রিকশা ড্রাইভারকে তার বুট জুতা দিয়ে ইয়াড্ডিশা উপর দিয়ে ফিট ফাট ভেতর দিয়ে সদরঘাট হলে যা হয়।

 

আমরা করি কি- বাচ্চা খেতে চাচ্ছে ন? একটা থাবড়া মারি আর খাওয়া মুখে ঢুকাই। প্রতি লোকমায় একটা থাবড়া। বাচ্চা ঘুমায় না! থাবড়া থেরাপি। বাচ্চা দুষ্টামি করে? থাবড়া থেরাপিতো আছেই। ছাত্র কথা শুনে না? শিক্ষক দেয় একটা থাবড়া। একটা ছোট বাচ্চার সাথেও আমরা শক্তি দেখাই। কতটা মানসিক অসুস্থতা আর ধৈর্যহীনতা থাকলে আমাদের দ্বারা এরকম আচরণ করা সম্ভব! পরে বাচ্চা যখন কাউকে শারীরিক ভাবে আঘাত করে শক্তির জোর দেখিয়ে পৈশাচিক আনন্দ লাভ করে; তখন আমরাই বলি- ও আল্লাহ!এত সুন্দর করে মানুষ করলাম আর এখন এগুলা কী করে!

আমরা কীসের ঝাল মেটানোর জন্য এরকম হিংস্র আচরণ করি? গায়ের জোরে শাসন করলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনাইতো বেশী। নিজেরা এত বড় হয়েও কত ভুল করি। বাচ্চারাতো করবেই! বুদ্ধি করে সুন্দর ভাষায় বুঝিয়ে বললেই হয়! আর মানুষতো নিজের ভুল বুঝতে চায় না তখন সহিষ্ণুতা ও ধীরস্থিরতার সাথে একটু শাসনও করতে হবে। তাই বলে রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে শারীরিক আঘাত!

 

আমদের কোন কাজের প্রতিক্রিয়ায় আমা্দের সন্তান এই আচরণ করছে আমরা খুঁজতে বের হই না। সমাজ থেকে ভুল কিছু শিখলেও সমাজের দোষ দিয়ে বসে থাকলেতো কোন ফায়দা হবে না। সমাজ আমাদেরকে ভালো ভালো যা কিছু শিখিয়েছে তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ থাকবো, সে অনুযায়ী সন্তান প্রতিপালনের চেষ্টাও করবো। কিন্তু সমাজের ভুলগুলোর চর্চা করবো না।

 

 তবে হ্যা;  ধুমধাম থাবড়া না দিয়ে ধৈর্য ধরে সন্তানের সংশোধনের চেষ্টা করাটাও এত সোজা না। সকল ধৈর্যশীল বাবা মাকে স্যালুট! যারা প্রতিক্ষণে সন্তানের নৈতিক আচরণ, ভালো-মন্দ ইত্যাদি নিয়ে চিন্তা করতে করতে আদর্শ বাবা-মা হওয়ার ইচ্ছায় সর্বক্ষণ আত্ম-উন্নয়নের চেষ্টায় আছেন। তাদের জন্য অনেক দুয়া রইলো যেন তারা সফলতার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারেন

 


আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ
আমার ডিভাইস ভাবনা

আমার ডিভাইস ভাবনা

২২ জানুয়ারী ২০২৪

হৃদয়ে রক্তক্ষরণ

হৃদয়ে রক্তক্ষরণ

২৮ ডিসেম্বার ২০২৩

আমার বাচ্চা খায় না!!????

আমার বাচ্চা খায় না!!????

২৪ ডিসেম্বার ২০২৩

আক্রমনাত্মক দাওয়াহ!!!

আক্রমনাত্মক দাওয়াহ!!!

১৩ ডিসেম্বার ২০২৩