পরিবার ও আমি (বিয়ে ,দাম্পত্য,শিশু লালন পালন )

যখন অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে আপনার শিশুর ওজন

যখন অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে আপনার শিশুর ওজন
অর্ণবের বয়স নয় বছর। দিন দিন মোটা হয়ে যাচ্ছে। তার ওজন ৪৯ কেজি। ক্লাস ফোরে পড়ে। ক্লাসে সে সবার চেয়ে মোটা ও লম্বা, বাড়ন্ত শরীর। মাঝেমধ্যে এর জন্য বিব্রত হতে হয়। মা-বাবাও উদ্বিগ্ন। বুঝতে পারছেন না কী করবেন। এই যে বয়সের তুলনায় ওজন অনেক বেশি, এটাকে আমরা বলি ওবেসিটি বা স্থূলতা। শিশু ও কিশোরদের মধ্যে স্থূলতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সন্তানের অস্বাভাবিক স্থূলতা কমাতে দায়িত্ব আছে আপনারও। এ নিয়ে লিখেছেন সাজেদুল ইসলাম শুভ্র শিশুরা আজকাল খুব একটা খেলাধুলা ছোটাছুটির সুযোগ পায় না। বাড়িতে বসে ইন্টারনেট সার্ফ বা ভিডিও গেম খেলা বা টেলিভিশন দেখাটাই তাদের কাছে প্রধান আর্কষণ। এ রকম শারীরিক শ্রমহীন জীবনযাপনের জন্য বাচ্চার ওজন বাড়তে থাকে এবং ক্রমশ তারা ওবেসিটির দিকে এগোয়। টিভি দেখা বাচ্চাদের কাছে অ্যাডিকশনের মতো। খেলাধুলা ছেড়ে বাড়িতে বসে টিভি দেখতে বাচ্চারা বেশি পছন্দ করে। টিভি দেখতে দেখতে চিপস, চকলেট, পপকর্নের মতো মুখরোচক খাবার খাওয়া এখন রীতিমতো অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। baby-weaning একদিকে ক্যালরি গ্রহণ বৃদ্ধি, অন্যদিকে খেলাধুলোর প্রতি অনীহা, সব মিলিয়ে ওজন দ্রুতহারে বাড়তে থাকে। বাচ্চাদের যদি জিজ্ঞেস করা হয় তারা কী খেতে ভালোবাসে, বেশিরভাগ বাচ্চাই উত্তর দেবে—চকলেট, কোল্ড ড্রিংক, আইসক্রিম, রোল, কেক, পেস্ট্রি। এক কথায় জাঙ্ক ফুড। এসব খাবারের মধ্যে ক্যালরির পরিমাণ বেশি থাকে, যা ওজন বাড়িয়ে দেয়। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকে যদি শিশুর ঘুমের পরিমাণ কম হয় তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার ওজন বাড়তে পারে ও শরীরে চর্বির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পরিণতিতে শিশুটি স্থূলতায় আক্রান্ত হতে পারে। ছোটবেলায় শিশুর কম ঘুম স্থূলতা ও চর্বি বাড়ার একটি প্রধান কারণ। তিনি জানান, শিশুর ওজনের ওপর ঘুমের কী প্রভাব পড়ে সে বিষয়ে এখনো জানা যায়নি। তবে এটা নিশ্চিত, ঘুমের পরিমাণ কম হলে ছোটবেলায় তা শিশুদের ওপর খারাপ প্রভাবই ফেলে। এ ছাড়া, মাতৃদুগ্ধের চেয়ে কৌটার দুধে প্রোটিন অনেক বেশি থাকে। যেসব শিশুকে বোতলে করে কৌটার দুধ খাওয়ানো হয় তারা খুব দ্রুত বাড়তে থাকে। উদ্বেগের কারণ হচ্ছে, এসব শিশুর শরীরে মাত্রাতিরিক্ত মেদ জমতে থাকে এবং শৈশবেই তাদের স্থূলকায় হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। মায়ের দুধের গুরুত্বকেই ঊর্ধে তুলে ধরা হয় তাই। শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি বজায় রাখা এবং তাদের অস্বাভাবিক মুটিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি এড়াতে শিশুদের ফর্মুলা দুধে প্রোটিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। করণীয় বাচ্চাকে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে উত্সাহিত করুন। সুষম খাদ্যের ওপর নজর দিন। লক্ষ রাখবেন খাদ্যে যেন প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল পরিমাণমতো থাকে। কোনো কিছুরই আধিক্য যেন না থাকে, তা হলেই বাচ্চা ভালোভাবে বেড়ে উঠবে। টিভি দেখতে দেখতে বাচ্চার চিপস, সফট ড্রিংক খাওয়ার অভ্যাসকে প্রশ্রয় দেবেন না। আউটডোর গেমস খেলতে বাচ্চাকে উত্সাহ দিন। বাড়িতে জাঙ্কফুড খাওয়ার অভ্যাস কমান। Healthy-Baby-Snacks বাচ্চাকে বাড়ির খাবার সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে খেতে দিন, যাতে বাইরের খাবারের প্রতি আর্কষণ কমে যায় । একটু বড় হয়ে শিশুরা কিছু কাজ বাসায় করতে পারে; যেমন—নিজের বই-খাতা, ব্যাগ, কাপড় গুছিয়ে রাখা, ঘর পরিষ্কার করা, বাসায় অন্যান্য কাজে মা-বাবাকে সাহায্য করা। কিন্তু আজকের শিশুরা এসব কাজে কোনো আগ্রহ দেখায় না। এমনকি নিজের কাজেও অন্যের ওপর নির্ভরশীল থাকে। শিশুর ওজন বেড়ে গেলে পরবর্তী সময়ে অনেক জটিলতা দেখা দিতে পারে। এ ব্যাপারে অনেক মা-বাবাই সচেতন নন। সূত্র- ইত্তেফাক।

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ
আমার ডিভাইস ভাবনা

আমার ডিভাইস ভাবনা

২২ জানুয়ারী ২০২৪

হৃদয়ে রক্তক্ষরণ

হৃদয়ে রক্তক্ষরণ

২৮ ডিসেম্বার ২০২৩

আমার বাচ্চা খায় না!!????

আমার বাচ্চা খায় না!!????

২৪ ডিসেম্বার ২০২৩

আক্রমনাত্মক দাওয়াহ!!!

আক্রমনাত্মক দাওয়াহ!!!

১৩ ডিসেম্বার ২০২৩