বিবিধ

আমাদের পারস্পেক্টিভের ব্যপারে আমার পারস্পেকটিভ

আমাদের পারস্পেক্টিভের ব্যপারে আমার পারস্পেকটিভ
ইন্ডিয়ার সাথে খেলা নিয়ে আমরা যখন মাতামাতি করি তখন কোথাও কোথাও শুনতে হয় ফেলানী, টিপাইমুখ বাঁধ, ফারাক্কা, সীমান্তে মানুষ হ... এসব নিয়ে নাকি আমাদের কোন মাথাব্যথা নাই/ দেখাতে পারি না, আর কোথাকার দেশপ্রেমিক আসছি খেলা নিয়ে কান্নাকাটি করতে। এ ব্যপারে আমার কথা হলো, খেলা একটা ভার্চুয়াল জিনিস। খেলার দর্শকরা ভার্চুয়ালিই মাতামাতি করার কথা। খেলায় ফেয়ারনেস, ইনজাস্টিস কী হলো না হলো তা নিয়ে ভার্চুয়ালি সুখ দুঃখ সচেতনতা ইত্যাদি প্রকাশে আমি কোন অযৌক্তিকতা দেখি না। মওকা মওকা না কি কি যেন সেগুলা নিয়ে ফেসবুক টুইটারে লিখালিখি, ভিডিও পালটা ভিডিও - হওয়ারই কথা। খেলার জন্যই এগুলো, এগুলোর জন্যই খেলা। খেলায় চোরামি করে জিতে গেলে পরাজিত দল কেবল বড়জোর ভার্চুয়ালিই মরতে পারে, রিয়েল লাইফে না। রিয়েল লাইফে কাজ কাম বন্ধ করে বিজয় মিছিল বের করতে আসা এটুকুকেও ক্ষেত্রবিশেষে একটু অতিরিক্ত মনে হয়।  . সীমান্তে কাঁটাতারে ফেলানী ঝুলে থাকে, আমরা আমাদের পানির ন্যয্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি, বাংলাদেশ ভারতের জন্য উন্মুক্ত মার্কেট হয়ে গেছে – এগুলো রিয়েল লাইফের জিনিস। এগুলো নিয়ে রিয়েল লাইফে মাতামাতি হওয়ার কথা। আমি সারাদিন সামাজিক মাধ্যমে লেখালিখি করে যা করতে পারবো না তা আমি ২ ঘন্টার একটা মানববন্ধনে হয়তো করতে পারবো। অথচ রিয়েল লাইফের ঘটনাগুলো নিয়ে ভার্চুয়াল উপদেশদাতারা শুধু ফেবু টুইটারেই সীমাবদ্ধ থাকবেন। কোন রাজনৈতিক দল কী করলো, কার কী ভূমিকা হওয়া উচিত ছিল এসব নিয়ে বিষদ গবেষনা হয়ে যাবে, একজন বিশ্লেষক আরেকজনের থিওরির ত্রুটি বিচ্যুতি বের করবেন। আমাদের উচিত অনুচিত এর লিস্ট বিশাল লম্বা হবে এবং দিনশেষে আরেকটা ফেলানীর লাশ পাওয়া গেছে বলে শোনা যাবে।  . আমি মনে করি নিজ দেশের খেলা নিয়ে ক্রেজ থাকলেই কেউ জাতীয় ইস্যু নিয়ে উদাসীন হয়ে গেল, অথবা জাতীয় ইস্যু নিয়ে অনেক লেখালেখি করে বলেই সে বিশাল কোন অবদান রেখে ফেললো / দেশপ্রেমিক হয়ে গেল – এই টাইপ উপসংহার আমাদের মধ্যে কমন এবং এটা খুবই লেইম স্বভাব আমাদের।  . আর বাংলাদেশ হারলো বলে সারাদিন মন খারাপ থাকবে আরেক দল পাবলিকের, তাদের জন্য যেটা বলা্‌... বাংলাদেশের হারজিত নিয়ে ভালো-খারাপ লাগাটা আমি সত্যিই এপ্রেশিয়েট করি, কিন্তু নিজ দেশ হেরে গেলো বলে সারাদিন মন খারাপ করে আর কোন কাজই করতে না পারা – এতে করে কখনোই দেশের সম্মান বৃদ্ধি পেল না, বরং ভার্চুয়াল একটা লসের হাত ধরে রিয়েল লাইফের একটা অপূরণীয় ক্ষতি হয়তো হয়ে গেল যা একজন দেশবাসী হিসেবে আমাদের জন্য আরো বেশি অকাম্য। সোজা কথা ভার্চুয়াল লাইফে এটাক কাউন্টারএটাক, রিয়েল লাইফে একশন ইনএকশন এগুলার মধ্যে বিস্তর ফারাক আছে।  এইটা অনুভূতিতেই থাকে না কেন জানি আমাদের, বুঝি না। [অনেকক্ষণ লাগায় আউলা ঝাউলা লেখাটা পড়ার জন্য থ্যাঙ্কস।]

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ