সাহিত্য

ফেলানী দিবস

ফেলানী দিবস
0 ফেলানী, তোমার মায়ের চোখের পানি কি শুকিয়ে গেছে? এখনো বোধহয় মাঝে মাঝে সে দীর্ঘশ্বাস ফেলে তাই না? যখন তোমার বয়সী কোন কিশোরীর হাসিমুখ দেখে কিংবা যখন ঐ কাঁটাতারের বেড়া ঘেঁষে মানুষ যায় বোধহয় তার বুকটা হু হু করে কেঁদে উঠে তোমার কন্ঠে 'মা' ডাক শোনার জন্য বুকের ভেতরটা আছড়ে পড়ে! মাঝরাতে বোধহয় তোমার মায়ের ঘুম ভেঙ্গে যায়,মনে হয় এই বুঝি 'পানি পানি' বলে কাঁদছে তার ফেলানীর প্রাণ এই বুঝি রক্তাক্ত শরীরটা তাকে বুকে জড়িয়ে ডাকছে! শান্ত দুপুরে কিংবা পড়ন্ত বিকেলে হয়তো খুব আনমনা যান তিনি মনে হয়,এই বুঝি কোন ক্লান্ত স্বরে তার কিশোরী মেয়েটি মা বলে ডাকতে ডাকতে বাড়ি ফিরে এলো! জানো ফেলানী? এখানে ঠিক এখানে এই মনুষ্য সমাজে রক্ত খুব লোভনীয় আর সহনীয় কিছু যতোই বয়ে যাক,যতোই ঝরে যাক আসে যায় না কিছু! রক্ত এখন উৎসবের রং,উল্লাসের প্রতীক যতো রক্ত,ততো আনন্দ হায়েনার প্রাণ বয়ে যায় এখানে প্রতি জনে একজন! ভেজা চোখে রোজ বাবারা সন্তানের রক্তাক্ত লাশ গোসল দেয় বুকে অসহনীয় জ্বালা চেপে মায়েরা বিদায় দেয় বুকের মানিক চলে যায়,কলিজার ধন চলে যায় হায়েনাদের বিজয় উল্লাসে জনপদ কেঁদে যায়! বছরের পর বছর ঘুরে,ফেলানী আজো আছে ঝুলে ঐ যে ঐ কাঁটাতারের বেড়ার অস্তিত্বের সাথে ঝুলন্ত মনুষত্বের প্রতীক হয়ে অন্ধ বিবেকের সহস্র উল্লাসে ফেলানী ঝুলে রয় নিথর দেহ হয়ে!

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
লেখকের অন্যান্য ব্লগ সবগুলো দেখুন