পরিবার ও আমি (বিয়ে ,দাম্পত্য,শিশু লালন পালন )

বিয়ের পরে ভালো হয়ে যাবে…

বিয়ের পরে ভালো হয়ে যাবে…
দেখা যায়- অনেক মা-বাবা তাদের ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দেয়ার সময় সত্যতা লুকায়। অথবা সত্য বলার তাদের সাহস থাকে না-মিথ্যার আশ্রয় নেয়। সেক্ষেত্রে কিছু সন্তানেরা মা-বাবার সাথে তাল মিলায় কিংবা নিরুপায় হয়ে নিরব থাকে। “ছেলেটা অনেক ভালো, স্বভাব-চরিত্র, টাকা-পয়সা- সবই ভালো- তাই নিজের মেয়ের জন্য সিলেক্ট করে নিলাম” (অথচ উনার মেয়ে যে এই ছেলেটার যোগ্য না-সেটাই বুঝেন না)। আবার বিপরীতভাবে “রূপবতী, গুণবতী, চটপটে মেয়ে দেখে নিজের ছেলের জন্য পছন্দ করে নিলাম, তবে আমার ছেলে যে বখাটে, সেই সাথে কিছু খাওয়ারও যে অভ্যাস আছে- সেটা যাতে কেউ না জানে। থাক না অসুবিধা কি? বিয়ের আগে ওরকম কিছু একটা থাকেই- বিয়ের পরে সব ঠিক হয়ে যাবে। বিয়েটা হয়ে যাক…”-- এমনই ধ্যান-ধারণা সমাজের অনেক মুরুব্বিদের। তবে আসলেই কি নষ্ট ছেলে-মেয়েরা বিয়ের পর ভালো হয় নাকি জীবনসঙ্গীর ওপর জুলুম হয়? ঘটনাটা আমাদের এলাকার। উভয়পক্ষের সম্মতিতে বিয়ে হয়ে গেলো। উল্লেখ্য, মেয়ের পড়াশুনা তখনও শেষ হয় নি। এদিকে মাঝে মধ্যে  স্বামীর কাছ থেকে  টাকা নিয়ে কোচিং এ যাচ্ছি বলে বের হয়। স্ত্রী কোথায় কোচিং করতে যায়- এটা দেখতে স্বামী একদিন বের হয়। গিয়ে দেখে কোচিং নয়- বরং আরেক ছেলের সাথে বসে আছে। স্বামী হতবাক, একি অবস্থা! মেয়ের মা-বাবা জানে? যদি জানে, তাহলে আমার সাথে বিয়ে দিলো কেনো? জানা যায়- মেয়েটার প্রেমের কথা তার মা-বাবা জানতো। কিন্তু মেয়ের পরিবার সেই ছেলেকে মেনে নিবে না। যেকারণে মা-বাবা ভেবেছে অনত্র বিয়ে দিলে হয়ত তার মেয়ে ভালো হয়ে যাবে। অথচ একসাথে তিনটা জীবন নষ্ট হয়েছে। এদিকে  মেয়েকে মোহরানার বাকি টাকা দিয়ে তালাক দিয়েছে তার স্বামী। পুনরায় সেই লোকটি বিয়ে করেছে কিনা জানা যায় নি। তাছাড়া,  সমাজে এমনও দেখা যায় বিয়ের পরে স্বামী ভালো না। নেশা করার খারাপ অভ্যাস আছে কিংবা আরেক নারীর প্রতি দূর্বল। সেক্ষেত্রে ফাঁদে পড়ে যায় স্ত্রী। মা-বাবা, শশুড়-শাশুড়ি সবার একই কথা- “স্বামীকে সঠিক রাস্তায় নিয়ে এসো”। কিন্তু আদৌ কি একটা মানুষকে সঠিক পথে আনা সহজসাধ্য?  যদি না- আগে কাউকে ভালো লাগলেও- সেটাকে ভুলে যায় কিংবা মাদকাসক্ত হলেও বদ অভ্যাস ছেড়ে দেয়। জীবনটা তো নাটক-সিনেমার মতো নয় যে কয়েক ঘন্টা কিংবা কয়েক পর্বের মধ্যে বাড়ির বউ চমৎকারিত্ব দেখাবে আর স্বামী ভালো হয়ে যাবে। বরং দেখা যায়- তালাকপ্রাপ্ত পুরুষের বিয়ে সহজ হলেও তালাকপ্রাপ্ত সতীসাব্ধি নারীর বিয়ে সমাজে সহজ নয়। যার কারণে কষ্ট সহ্য করে, স্বামীর কুকর্ম দেখেও শশুড় বাড়িতে থাকো তা নাহলে খোলা তালাক দিয়ে সারাজীবন বাপের বাড়িতে থাকো। এদিকে ভাইরা যাতে বোঝা মনে না  করে- মাসে মাসে তাদের হাতে টাকা তুলে দাও... ... যাই হোক- মানুষ বিয়ে করে শান্তির খোঁজে। তবে দুঃখের সাথে বলতে হয় সমাজের কিছু বড়দের নির্বুদ্ধিতা কারণে ( তথা বিয়ের পরে সব ঠিক হয়ে যাবে) কিছু পরিবারে অশান্তিই নেমে আসে……

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ
আমার ডিভাইস ভাবনা

আমার ডিভাইস ভাবনা

২২ জানুয়ারী ২০২৪

হৃদয়ে রক্তক্ষরণ

হৃদয়ে রক্তক্ষরণ

২৮ ডিসেম্বার ২০২৩

আমার বাচ্চা খায় না!!????

আমার বাচ্চা খায় না!!????

২৪ ডিসেম্বার ২০২৩

আক্রমনাত্মক দাওয়াহ!!!

আক্রমনাত্মক দাওয়াহ!!!

১৩ ডিসেম্বার ২০২৩

লেখকের অন্যান্য ব্লগ সবগুলো দেখুন