সাহিত্য

চিঠি গুলো

চিঠি গুলো
কেমন আছিস,বান্ধবী? জানি বলবি,এতো কঠিন প্রশ্নটা কি করে করলি?! এতো গুলো দিন পর,এ প্রশ্নের উত্তর কি করে ভাবি, যখন সময়ের সাথে সাথে বদলে গেছে সবই। তুই ও কি বদলে গিয়েছিস? প্রশ্নটা পড়ে,জানি ফেলবি দীর্ঘশ্বাস! লুকিয়ে ক্লান্তি,দেখাবি মৃদু উচ্ছ্বাস, বলবি,সবাই কি তোর মতো নাকি রে? বাহারী রঙের বাগানে লুকানো শুকনোপাতা! এখানে এসে কলমটা থামালাম,হাসি পাচ্ছে বড্ড! বান্ধবী,তুই ও কি হাসছিস?অনেক দিন পর,এই আমার মতো! খানিকটা হাসার পর,আবারো চলতে শুরু করলো কলম, ভরে উঠছে কাগজের পাতা। বল এবার বান্ধবী,তোর সংসারের গল্প সাথে টক-ঝাল-মিষ্টি মিলিয়ে দিস অল্প! আমার আর কি গল্প?আমি তো পার করে এসেছি অনেক গুলো পর্ব! গল্প তো হবে তোর,তোদের,আমি শুধু সেগুলো দেখবো! তোদের গল্প গুলো পানসে হবে না,অপূর্ণ রবে না দারুন আনন্দ আর সুখে হবে ভরপুর, যেনো আর ক'বছর পর, তোদের গল্প শুনিয়ে আমি কাটাতে পারি রাত-দুপুর! হাহ!শুরু হয়ে গেলো তোর আকাশ-কুসুম ভাবনা! দোহাই লাগে বান্ধবী,এভাবে এতো ভাবিস না! জীবন যে কোন মুভি-গল্প না, সুখ-আনন্দ তাই ছুঁয়েও ছুঁতে পারে না তবু দৌড়াচ্ছি,দৌড়াতে হয়,এখানে চাইলেও যে থামা যায় না। তবুও,আছিস তোরা যেমন দৌড়াচ্ছিস,ক্লান্ত হচ্ছিস,কখনো বা দুঃখ পাচ্ছিস কখনো আবার স্বপ্ন পূরনের হাসি হাসছিস, আমি তো পথ ছেড়ে এসেছি,পথে জড়ানো স্বপ্ন ভুলেছি ভাবনা-চিন্তার সময় ছেড়ে এসেছি, এই চার দেয়ালের বাইরে! আমার তো দিন-সময় কাটে,এই চার দেয়ালকে ঘিরে। হুম,বুঝেছি! নদীর ওপাড়ে তুই আর এপারে আমি কোথায় যে কতো সুখ,তা দু'জনেই জানি! যখন এখানে রাতের আঁধার,ওখানে দিনের আলো যখন এখানে আমি দুঃখী হই,ওখানে থাকিস তুই ভালো। দীর্ঘশ্বাস এখন আর আসে না বান্ধবী শ্বাস নেবার সময় কোথায় এটাই এখন ভাবি! কেউ ছুটছে টাকার পেছনে, আমিও ছুটছি তার সময়ের পেছনে ছুটা-ছুটির মাঝেই হয় পার,রাত আর দিন তোকেও যেমন ঘিরে আঁধার,তেমন এখানেও আসে না দিন! কলমটা আবারো থেমে গেলো আমার কি লিখবো খুঁজে পাচ্ছিনা আর! সব প্রশ্নেরই একই উত্তর ঘুরে ফিরে শুধু আসে বারবার, তবুও লিখছি... সে যে বছর পাঁচেক আগে,এক গোধূলি বেলা শেষে শহর ছেড়ে অচেনা গ্রামে গেলো বধুর বেশে, বর চলে গেলো দূর বিদেশে মেহেদি না শুঁকোতেই পথ পানে চেয়ে কাটাচ্ছে দিন শূন্য সময় ধরেই। এককালের সেই দুরন্ত কিশোরী আজ পুরোদুস্তর গৃহিনী বদলে যাওয়া সময়ের সে অসাধারন এক কাহিনী, বান্ধবী ছিলো সারা বেলার,সুখ-দুঃখের সাথী আজো তাই পাতা জুড়ে স্মৃতির মালাটাই গাঁথি। চিঠি তো কতোই লিখি তার জন্য পোষ্ট করা আর হয় না, শুনেছি এখন তার ওখানে কোন পোষ্ট অফিসও পাওয়া যায় না! বান্ধবী ভাবে ভুলে গেছি সব তাকে আর মনে পরে না! লেখা গুলো সব আড়ালেই রয় আলোর মুখ টা দেখে না, ইট-পাথরের এই শহরে হারানো সময় ফিরে আসে না, বান্ধবীকে লেখা সব চিঠি গুলোও পোষ্ট করা আর হয় না।

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
লেখকের অন্যান্য ব্লগ সবগুলো দেখুন