সাহিত্য

কোনো এক বিপ্লবীকে...

কোনো এক বিপ্লবীকে...
  তারপর কি অদ্ভুত নিরবতা ছেয়ে গেল আমাদের মাঝে!   আমরা আর কেউ কাউকে পরিচিত সূরে জিজ্ঞাসা করিনা কুশল,   চলতি পথে দেখা হয়ে গেলে সন্তর্পণে পাশ কাটাই একে অন্যের।   আমরা কেউ কাউকে বলিনি কি ব্যাপার,   তবু দুজনেই কেমন ভীত হয়ে রই   অপাংক্তেয় অনুভূতিদের ভয়ে!       বর্ষার প্রথম কদম ফুল ছুয়ে দেখার আগেই   স্বর্ণলতার মত তোমার শরীর বেয়ে উঠল সালতানাতের বিপ্লব।   মানবীয় যে মোহের আবরণ ক্রমেই হয়ে উঠছিল গাঢ়তর কুয়াশা,   সেপাহিসুলভ দৃঢ়তায় তা ছেদ করে তুমি ছুটে গেলে ময়দানে।   তোমার সহযাত্রীর রক্তে ভিজে গেছে সিজদার স্থানটুকুও।   তুমি কি আর বন্দি থাকতে পারো হ্ণদয়াবেগের খুশবুতে!!   দেয়ালে দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হয়ে তোমার বুকে এসে বিধেছে যে   সন্তানহারার আর্তনাদ,   তোমার কাছে তার তীব্রতা ছিল যৌবনের প্রথম প্রেমের চেয়েও বেশি!       আমি জানি, গৃহের চৌকাঠে পা রাখার চেয়ে   মৃত্যু পথযাত্রীর শিওর তোমার বেশি প্রিয়।   জানি, কোন আমোঘ সত্যের ভয়ে   তোমার বলে যাওয়া হয়নি শেষ কথা...   সংকোচে আমারও বলা হয়নি- নকীব,   পৌরুষ তো তোমার মুষ্টিবদ্ধ সেই পবিত্র হাতদুটিতে,   মিছিলের সম্মুখে দৃঢ়তার সাথে যারা উর্ধ্বগামী হয় দৃপ্ত শ্লোগানে।   পৌরুষ তো তোমার ভরাট কন্ঠে,   যার হুংকারে সহগামীদের রক্তে আসে উষ্ণতা।   পৌরুষ তো রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে যাওয়া   তোমার গোটা অবয়বে নকীব!   প্রিয়দর্শীনীর লাবণ্যে মোহগ্রস্থ হয়ে থাকলে   তা কিছুতেই পৌরুষ হতো না।       তাই একটা মুক্ত তাকবীরের তৃষ্ণায় তোমার যে প্রস্থান,   তাতে হ্ণদয় ভাঙ্গেনা আমার।   বিপ্লবী; জানি, শাহাদাৎ তোমার বড় কাংখিত আলেখ্য।   জানি, বড্ড অনিশ্চিত তোমার ফিরে আসা।   তবু, কেবল অপেক্ষার অনুমতি দিও!     1003557_559916604087010_605254173_n

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)