বিবিধ

অসংগতি

অসংগতি
আমার জন্মভূমি! আমার দেশ! আবেগের শব্দদ্বয়, অথচ ইদানিং কোন আবেগই তৈরী হয়না এই শব্দদ্বয়কে কেন্দ্র করে। জীবনে বেশ খানিকটা সময় পেরিয়ে এসেছি, প্রতিটা বছর পূর্ণ হচ্ছে আর আমার জীবন থেকে একটা করে বছর কমে যাচ্ছে! আমি অনুতপ্ত হই, আবার আকাংখিত হই, এটাই হয়তো মানব চাহিদার রীতি। দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের টানে বেশ কিছুদিন আগেও ছুটতে ইচ্ছে করতো, ইচ্ছে করতো এ দেশের প্রতিটি ইঞ্চি আমার নখদর্পনে রেখে দেবো! কিন্তু ইদানিং আতংকে আমি আর সেসব ইচ্ছাকে অন্তরে পোষণ করিনা। মনে হয় যদি আবারো দেখতে হয় বিশ্বজিতের খু...! এবার যদি দর্শকদের সারিতে আমি থেকে যাই! হয়তো কোনক্রমে আমি সম্মুখীন হলাম অজস্র লাশের সামনে! তখন কী করবো? ভয়ে আমার কন্ঠনালী স্তব্ধ হয়ে যায়। এ দেশের চারেদিকে বিদআতের আখড়া। পাশের মসজিদটিতে আজানের আগে একবার দরুদ শুনি আজানের পরে একবার দরুদ, বুঝিবা আল্লাহ না চাইলেই রাসুল (সঃ) তাদেরকে এই দরুদের ওছিলায় শাফায়াত করবেন সেই আশায় আল্লাহর নাম নেয়ার আগেই রাসুলের নাম। শবে বরাতের মূল্যায়ণ করা হয় শবে কদর কেন্দ্রীক আয়াতগুলো দিয়ে। হিন্দুরা যেমন কী একটা পূজায় আতশবাজী পটকা এসব ফুটায়, এদেশের জনগণ এই শবে বরাতে আতশবাজী ফুটায়। ভালোতো ভালোনা! আর সেই আতশবাজীর কারণে বিহারীদেরকে পুড়তে হয়, কী বলবো আর! রাতভর নিজেের ভাগ্য গড়ার জন্য আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে, ফজরের নামাজের কোন তোয়াক্কায় নাই। এমন মানুষ আমার সামনে ছিলো যে আমাকে বলছিলো মসজিদে যাবার আগে (শবে বরাতের রাত মসজিদে কাটাবে বলে) দেখিতো এবার এমন ভাবে তোমার জন্য আল্লাহর কাছে কাঁদবো, আমার সাথেই তোমার বিয়ে হবে! আমিতো ভেবেই নিয়েছিলাম যাহ! এবার বুঝি সবই গেলো! বিদআত! রাতের বেলা পটকার শব্দ শুনে চমকে জেগে যেতে হয়! এমনই মুসলিম দেশে বাস করি যেখানে প্রধানমন্ত্রী ফসলের ভালো ফলনের জন্য দূর্গাদেবীর প্রশংসা করেন, যে দেশের তথ্যমন্ত্রী সুন্দরী নায়িকাদের দিকে আঁড়চোখে তাকিয়ে থাকে অনেকটা সময়, আর সেরা নাচিয়ে প্রোগ্রামটিতে এসে ধেই ধেই করে অসভ্যের মতো নাচতে থাকে। নেতা! যদি এদের মতো হয় তবে দেশের অলিতে গলিতে, খু..., ধ..., বেহায়াপনা, পাশ্চাত্য ষ্টাইলে মেয়েরা গেন্জি পরে আর ছেলেরা হাফপ্যান্ট পরে সাইকেল চালাবে! এ আর বিচিত্র কী? গতকাল একদল যুবক হাফপ্যান্ট পরে সাইকেল চালিয়ে আমাদের রিকশার সামনে দিয়ে চলছিলো, আর ইচ্ছেমতো গলা ছেড়ে ফাহেশা কথাবার্তা বলছিলো। এমনও ঘটনা নিজে চোখে দেখতে হয়েছিলো, কয়েকজন কলেজ লেবেলের ছেলে রাস্তায় দাড়িয়ে প্রাকৃতিক (ছোট) কাজ সেরে নিচ্ছে আর অন্যজন সেটার ছবি তুলছে, বলছে ফেবুতে দিলে যা হবেনা!! থাক আর না লিখি অনেক লিখলাম! এতো লিখেই বা কী, সব যেমন তেমনইতো রয়ে যায়, শুধু মানবতা হারিয়ে যায় ক্রমাগত! হায়রে মানবতা! আজ তোমায় খুঁজতে গিয়ে বড্ড ক্লান্ত!

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ