পরিবার ও আমি (বিয়ে ,দাম্পত্য,শিশু লালন পালন )

আল্লাহ এখন রওশনের জীবনের কি হবে ?

আল্লাহ এখন রওশনের জীবনের কি হবে ?
551799_462181040468654_1816962404_n রওশনের বাবা অনেক কোটি কোটিপতির আদরের দুলাল। রওশনের নানার বাড়ির দিকটাও দাদার বাড়ির অবস্থ্যার চেয়ে কোন দিক থেকে কম না । বোনের বাসায় আসা যাওয়ার সুবাদে রওশনের মায়ের তার বাবার সাথে পরিচয়। পরিচয় থেকে শুভ পরিনয় । বিয়েতে দুই পক্ষের দেওনা নেওয়া প্রতিযোগীতা দিয়ে কেউ কারো থেকে পিছিয়ে ছিলনা। আমার প্রতিবেশি ও খুব অন্তরঙ্গ বান্ধুবী রওশানের নানী । তাই আমার ভাগেও টাটকা ইলিশ গোলদা চিংড়ি আর তাজা রসমলাই কম আসে নাই । দুনিয়ার আরাম আয়েশ আর মোহের খাচার মাঝে সুখ নামের সোনার হরিন্টা বেশিক্ষন বন্দি থাকলো না। ফুটফুটে রওশন বাবা মার কোল রওশনাইতে ভরে দিলেও তাদের হৃদয় আলোকিত করতে পারে নাই । অর্থই সকল অনর্থের মূল হয়ে দাড়াল। রওশনের বাবা, তার কোটিপতি দাদার ব্যবসার হাল ধরতে গিয়ে দাম্পত্য জীবনের ভালবাসার হালটা আর মজবুত ভাবে ধরে রাখতে পারে নাই। তার মা বাবার ৃদয়ে ভালবাসার সিক্ততা না থাকায় চৈত্রের খাখা করা ইরিধান খেতের মত বিশাল বিশাল ফাটল ধরল। যা দুই পক্ষের আত্নীয় স্বজনের ভালবাসার পানি হাজার কিলোলিটার দিয়ে বুঝায়েও আর সেই ফাটল জ়োড়া নিল না। শেষ আমরা স্বামী স্ত্রী কয়েক দপা কোরান সুন্নাহর আলোকে হাই পাওয়ারের সুপার গ্লু দিয়ে জোড়া দিতে গিয়ে বার বার মনে হচ্ছিলো লাগে লাগে কিন্তু ভিতরের তাপে আবার ফাটল আগের রুপধারন করে । এই রকম অনেক কেইস এর ফলাফল সুফল হয়ে এখন তারা সবাই আলহামদুলিল্লাহ অনেক সুখে আছে কিন্তু এইখানে াজ ব্যার্থ হলাম। মানে আজ রওশনের বাবা মার সম্পর্ক একেবারেই চিন্ন হল। রওশনের চেহারার আর মনের অবস্থ্যা দেখে বার বার কান্না আসছিলো । রওশন বয়স ৪। মাত্র নার্সারীতে উঠেছে। এর মাঝে নেমে এলো শিশুটির জীবনে কালবৈশাখীর ঝড়। এইটা তো সুনামীর চেয়েও ভয়ংকর প্রলয় সৃষ্টি হয়ে তার সুন্দর হাসিখুশি জীবনকে তছনছ করে দিল। ধরে রাখতে পারল না সে মাথা হেলিয়ে জান্নাতী ঘুম ঘুমানোর মত মা বাবার কোল। তার জীবন তৈরী সময়ের স্রোতে একে বেকে হেলে দুলে চলল এক অকূল পাথারের দিকে। জীবনের কোন খেয়ঘাটে গিয়ে ভিড়বে সেই তৈরী বা এর শেষ কোথায় সে নিজেও জানে না । আমি বার বার মনকে প্রশ্ন করছি , এই মাসুম বাচ্ছাটার কি অপরাধ ছিলো। এই বাচ্ছাটার দিকে চেয়ে এই মা বাবা কি ধৈর্য্য ধরে সেক্রিফাইজ আর কোম্প্রমাইজ এর মাধ্যমে এই ছেলেটার জীবনটা গড়ে তুলুতে পারতেন না ? মা তো সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে মায়ের জীবনের হাসি আনন্দ ভোগ বিলাস লোভ লালসা সব কিছুই ত্যাগ করে স্বামীর ংসারে পড়ে থাকে । সব স্বামী যে সব স্ত্রীর মনের মত হব তা তো কল্পনা না করাই উচিত। সব স্বামী চায় সারাদিনের ক্লান্ত পরিশ্রান্ত হৃদয়টা স্ত্রীর পর্বতসম হিয়ার মাঝের ভালবাসার ঝর্নায় স্নান সমার্পন করে নিজের প্রানটা শীতল করতে। তার পরিবর্তে যদি পান খরস্রোতা নদীর তীর ভাঙ্গা ঢেউ আর নীড় ভাঙ্গা ঝড় , তা হলে সেখানে আর ভালবাসার ঘর হয় না ,হয় তাসের ঘর । আপুরা একটু ৈর্য্য ধরে স্বামীর পাষান , বা নিরেট পাথরের ৃদয়ে তোমার ভালবাসা দিয়ে সিক্ত করে সেই পাথরে ফুল ফুটাও। ইনশাল্লাহ সেই ফুলের মালা তোমার গলায় মানিক মুক্তা হিরা জহরতের চেয়েও মুল্যবান হয়ে তোমার শোভা বর্ধন করবে। কোটিপতি বাবার গরম বা উচ্চ শিক্ষার কারনে যদি নিজের স্বামীর সাথে ব্যবহার খারাপ করি তা হলে আল্লাহর পাকড়াও থেকে ক্ষমা পাবনা । স্বামীর ংসারে ভিক্ষা করে খেলেও রাজরানী আর রাজা বাবার রাজপ্রাসাদে থাকলেও সন্মান থাকে ভিক্ষারীনির মত। আর আপুরা একটু সময় দেন একটা ছেলে কে নিজের পায়ে দাড়ানোর জন্য । ের পর আপনার সংসার আপনারই থাকবে ইশাল্লাহ । বাবাদের উচিত সব ভালবাসা তার স্ত্রীকে উজাড় করে দিয়ে একটা মেয়ের নরম কাদামাটির মনটাকে দিয়ে নিজের মনের মত পোশাক বানিয়ে তা দিয়ে নিজের সন্মান বৃদ্ধি করা। আপনার স্ত্রীর হাতে আপনার সন্মানের পাত্রী । তাই সেই মাটির পাত্রী কে অসচেতন বা অবেহেলা করলে তা অসাবধানতা বসে ভঙ্গে গেলে আপনার স্ত্রীর চেয়েও আপনার সন্মানের উপর আঘাত আসবে বশি । যেই পুরুষদের ইসলাম বানিয়ে দেশের শাসন কর্তা । সেই পুরুষ যদি ইসলামের আলোকে একটা সংসারের শাসনভার চালাতে না পারেন এটা সেই পুরুষের জীবনের অনেক বড় গ্লানি বয়ে আনবে। অনেক পুরুষ আছেন এমন স্বামী হন, স্ত্রীকে দাসদাসীর সম মর্যাদা দিতেও তাদের মর্যাদার ক্ষতি হন। স্ত্রী মানে হলো হুকুমের গোলাম । ইসলাম আপনাকে স্বামী হিসেবে মর্যাদা একধাপ বেশি দিয়েছেন তাই বলে আপনাকে যা ইচ্ছে তাই করার অধিকার দেন নাই। আমি পুরান ঢাকায় যেখানে ছিলাম সেখানে এক পাগলা চাচা ছিলেন । উনার স্ত্রীর জীবনে একবার শখ হল গুলিস্থান হলে গিয়ে সিনেমা দেখবে। সাথে আরো দুই বান্ধবীকে নিয়ে গেলেন । পাগলা চাচাঘরে ডুকে শুনেন উনার স্ত্রী ৩/৪ ঘন্টা পরে সিনেমা শেষ হলে আসবে । চাচা সাথে হুলুদ আর মরিচ কিনে শীল পাঠা মাথায় করে নিয়ে গুলিসথান সিনেমা হলের ভিতরে দিয়ে আসে বউ কে। বউ ভয়ে লজ্জায় সিনেমা দেখা ফেলে বাসায় আবার ঐ গুলো নিয়ে চলে আসে । আমরা এই রকম পাগলা চাচা আর দেখতে চাই না । কারন আপনার স্ত্রীর শখ বা মন বলতে একটা কিছু আছেন । সে মানুষ তা ভুলে গেলে চলবে না। আমি কাউকে উদ্দেশ্য করে লিখিনি । আমার মতে দুনিয়ার জান্নাত স্বামী স্ত্রীর ভালবাসার মাঝে । এই সুখ থেকে কেউ কাউকে বঞ্চিত করবেন না । এর সুফল আপনার সন্তান সহ আপনরা ভোগ করবে। আর এর কুফলে আপনার সন্তান বাবা মায়ের আদর ভালবাসাথেকে বঞ্চিত হবে। আর রওশনের মত অনিশ্চিত জীবন যাপনে বড় হয়ে এক সময় সে কুসন্তান হিসাবে সমাজের অনেক বড় ভাইরাস হয়ে বিস্তার লাভ করবে। কারন মা বাবা হারা সন্তান আর লাগাম ছাড়া পশু একই রকম । আমি বার বার ভাবছি ! আল্লাহ এখন রওশনের জীবনের কি হবে ? ঘুম আসছে না । শুধু অর নিস্পাপ মুখটা চোখে ভাছে। তাকে কি বাবা নিবে না মা নিবে ? যার কাছে যাক সে ত আড়েক জ়নের অভাবে বেড়ে উঠবে । কারন বাবা কি মায়ের আদর দিতে পারবে ? আর মা কি বাবার শুন্যসথান পুরন করতে পারবে ? আর রওশনের মত জীবন যেন কোণ শিশুর না হয় সেই কামনা রইল।তাই আর বিচ্ছেদ নয় । চাই সুখি দাম্পত্য জীবন ।

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ
আমার ডিভাইস ভাবনা

আমার ডিভাইস ভাবনা

২২ জানুয়ারী ২০২৪

হৃদয়ে রক্তক্ষরণ

হৃদয়ে রক্তক্ষরণ

২৮ ডিসেম্বার ২০২৩

আমার বাচ্চা খায় না!!????

আমার বাচ্চা খায় না!!????

২৪ ডিসেম্বার ২০২৩

আক্রমনাত্মক দাওয়াহ!!!

আক্রমনাত্মক দাওয়াহ!!!

১৩ ডিসেম্বার ২০২৩