বিবিধ

উৎসব হোক অসাম্প্রদায়িক

উৎসব হোক অসাম্প্রদায়িক
বাঙ্গালি নাম দিয়ে যদি সার্বজনীনতাই বুঝাতো তাহলে তো দুই বাংলা একই হয়ে যেতো। তা…… সমস্যা নাই। আমরা চোখ রাখি টিভি’র পর্দায়, ওদের কায়দায় এক হওয়ার প্রসেসিং চলছে। তাই, কখনো আমরা বাঙ্গালি, কখনো বলিউডি! বরাবরের মতো এবারও নববর্ষ উপলক্ষ্যে ছেলেদের সাদা ফতুয়া আর লাল ধুতি বিক্রি হচ্ছে। যদিও প্রশ্ন হলো-এদেশের কয়টা পুরুষ ধুতি পরে? তার চেয়ে বরং গেঞ্জি আর লুঙ্গি’র ফ্যাশন হলে তো এদেশের সংস্কৃতির সাথে মানানসই হতো। তবে না, এ সংস্কৃতির ফোকাস হচ্ছে না, হচ্ছে ধুতি উৎসবের প্রচার। এসব কিসের ইশারায়? আহা! এতো ইশারা বুঝার জ্ঞান কি আমাদের আছে? আমরা তো উদার জাতি! তাতে নিজের জাত ভুলে গেলেই বা কি? ক্যামেরা যখন আমাদের খুঁজবে, আমরাও নিজেদের দেখানোর জন্য যা যা করা লাগে করবো, তাই না? কে কার কি পুজি করে ব্যবসায় করছে তা ভাবার সময় কই? নিজের ঝুলিতে ‘সেরা বৈশাখী সাজের খেতাব’ আর পুরুষ্কার আসলেই হলো। কার সামনে সাজবো, কাকে দেখাবো, কে দেখতে পারবে, কে অধিকার রাখে, কোথায় দেখালে বিপদ হবে—এত কিছু ভাবে কয় জন? ওমুক চ্যানেলের ক্যামেরা আসছে একটু চেহারা দেখায়া আসি…। আমরা  প্রচারমুখী, নীতিবিমুখ! এদিকে সম্পূর্ণ সাম্প্রদায়িক একটা উৎসব যাকে সার্বজনীন নাম দিয়ে নববর্ষের মূল আকর্ষণ হিসাবে প্রচার করা হয় তাহলো ‘মঙ্গলযাত্রা’। আচ্ছা, এটা সার্বজনীন কিভাবে হয়? যেখানে কিছু প্রাণীর মূর্তি, মুখোশকে সমৃদ্ধি ও মঙ্গলের প্রতীক বলা হয়? একটা মুসলমান কখনো কোনো প্রাণী কিংবা ঋতুকে মঙ্গলের বার্তা বাহক হিসাবে ভাবতে পারে না। তাহলে তো সে শিরকই করে বসলো! আমরা আমাদের সমৃদ্ধি, মঙ্গলের জন্য আল্লাহ’র কাছে দোয়া করতে পারি আর এর জন্য কোনো ঋতুর অপেক্ষা কিংবা শুভ-অশুভ ক্ষণ বলে কিছু নেই, বরং বান্দা যখন ডাকে আল্লাহ তার ডাক শুনেন। অথচ আজ আমাদের মুসলমান ভাই-বোনেরা সংস্কৃতি ও প্রচারণার ফাঁদে পড়ে ধর্মীয় বিশ্বাসের মূলে আঘাত হানছেন। এখন কেউ যদি বলে- ‘আমি তো সেই নিয়তে যাই না’- তাহলে বলবো-যেখানে ইসলাম বিরোধী কাজের ক্ষেত্র সৃষ্টি করা হয়েছে, মুসলমানদের হাত দিয়ে সেই কাজটি করানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে আর আপনি কিনা সেই কাজে সহায়তা করবেন? যেটা আল্লাহ অপছন্দ করেন সেই কাজটিতে উৎসাহ দিবেন? আজ আমাদের নীতিহীন প্রচারমুখীতা আর তা পুঁজি করে মিডিয়ার ষড়যন্ত্র আমাদের বিশ্বাসকে দূর্বল করে দিচ্ছে। সুতরাং সার্বজনীন উৎসব সার্বজনীন কায়দায় হওয়া উচিত। যাতে কারো ধর্মে আঘাত না লাগে। বিদ্যমান মিডিয়ার কথা বাদ, তারা সবাই বিক্রি হয়ে গেছে। এখন আমরাই এক একটি মিডিয়া। তাই আমার মতে-এ দিনকে ঘিরে নৌকাবাইচ, রিক্সা রেসিং, গ্রামীণ জীবনের প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী, হস্ত শিল্প, বই মেলা, গৃহসজ্জা, মাটির তৈজসপত্রের মেলা-ইত্যাদি যেগুলোতে সবাই অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে সেভাবে উদযাপন করলে ভালো হয়।    

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ
লেখকের অন্যান্য ব্লগ সবগুলো দেখুন