বই মেলায় কতোশত নতুন বইয়ের ভীড়ে,বইটার নামটা "কয়েকটি গল্প অতঃপর" কেমন একটা আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছিলো,টুুকে রেখেছিলাম ডায়েরীতে পড়ব বলে।কয়েকটি গল্প.. অতঃপর,পাঠকের মনের কোণে তোলপাড়, নিজের স্মৃতিময় অতীতকে হাতড়ে বেড়ানোর কোশেশ,প্রতিটা গল্পের শেষে,না বলা একটা সমাপ্তি,পাঠক হৃদয়কে আসলেই ভাবতে বাধ্য করে,অতঃপর কি হবে।কল্পনায় মিলাতে চায় মন,কখনো আঁতকে উঠেছি আনমনে,আবার নিজের সমৃদ্ধ শৈশবকে খুঁজে পেয়েছি।
"কয়েকটি গল্প অতঃপর" বইটিতে দশটি গল্পের সমাবেশ ঘটেছে।১ম গল্পটিতে বিশ্বাসী হৃদয়ের এক অনন্য সাধারণ উপস্থাপনা,মনে ভালোবাসার অনুরণন সৃষ্টি করেছে।ছোট্ট মনটাতে মনে হয়েছে,কি অপরিমেয় জঝবা থাকলে,অন্তহীন প্রতীক্ষা করা যায়,প্রিয়তমের জন্য।স্রষ্টা কি অনুপম সৌন্দর্যই না দিয়েছেন মানুষের মধ্যে।গল্পের শিরোনাম আসলেই সার্থক হয়েছে। হৃদয়ের গভীরে ছুঁয়ে যায়,সুরভি।
দ্বিতীয় গল্পটিতে,রীতিমতো শৈশবে নিয়ে গেছেন লেখিকা।কেমন যেন টান অনুভব করেছি,সেই হারিয়ে যাওয়া সময়গুলোর কথা ভেবে পুলকিত হয়েছি।প্রকৃতি, তার সাথে মানব হৃদয়ের সুগভীর অনুভূতি,তাঁর সাথে গৌরবময় একাত্তর, যেখানে সাহসের, তারুণ্যের খরা চলছে,সেখানে ঝড় বইয়ে দেবে।সত্যি বলতে,গল্পের আসরে যেন আমিও ছিলাম।
তারপর,"প্রতারণা" ও "অন্তরালে অন্ধকার" গল্পে সমাজের লুকিয়ে থাকা ছবি উঠে এসেছে।
আর,"মায়ায় ঘেরা" গল্পটিতে মোমিনুল ইসলামকে আজ বড়ো প্রয়োজন সমাজের।
বিভিন্ন বিশ্বাসের আবর্তে চলছে জীবন,মানুষের চরম অনুভূতিকে পুঁজি করে শাসকশ্রেণি, আজও অত্যাচার,নির্যাতন চালিয়ে যায় নিভৃতে।"বিশ্বাস" গল্পে তেমন এক অনিশ্চিত দীর্ঘশ্বাস।
"বিচ্ছুরিত আলোয়" গ্লানিমাখা সমাজের মানুষকে আলোয় নিয়ে আসে,আবার, বিশ্বাস করতে ইচ্ছা হয়,আশা করতে,স্বপ্ন দেখতে ইচ্ছা হয় নতুন করে বাঁচার।সজীবেরাই পারবে,সুন্দর একটা বসুন্ধরা গড়তে।
বইটিতে মানব মনের সৌন্দর্য,সম্পর্কগুলো এতো নিবিড়ভাবে এসেছে,"কাঙ্খিত" ও" ছায়াসঙ্গী"তে সেটির পরশ পাই।এতো ছোট্ট পরিসরেও এতো বিচিত্র সম্পর্ক,সমাজের আলো-অন্ধকার,সম্ভাবনা, ভালোবাসা,বিশ্বাসের অনুরন, বইটা আসলেই সুখপাঠ্য।বিশ্বাসের বলয় ঘিরে থাকা জমে থাকা,কাঙ্খিত স্বপ্নগুলো আসলেই ভাবায়।সামনের বইমেলায় দৃষ্টিনিবদ্ধ থাকলো...
২১-০৯-১৭,বুক রিভিউটি লিখেছিলাম অপটু হাতে,ব্লগে তুলে রাখা
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)