ধর্ম ও গবেষনা

অন্যের দোষ গোপন রাখা

অন্যের দোষ গোপন রাখা
রাসুল(সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দোষ ঢেকে রাখবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ ঢেকে রাখবেন।” (বুখারি, ২৪৪২)
তিনি আরও বলেছেন, “যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের গোপন (অপরাধের) বিষয় গোপন রাখবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার গুপ্ত (অপরাধের) বিষয় গোপন রাখবেন। আর যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের গোপন বিষয় ফাঁস করে দিবে, আল্লাহ তার গোপন বিষয় ফাঁস করে দিবেন, এমনকি এই কারণে তাকে তার ঘরে পর্যন্ত অপদস্থ করবেন।” (ইবনে মাজাহ, ২৫৪৬)
একবার মাইজ নামের এক বেক্তি ব্যাভিচার করে বসেন। অনুতপ্ত হয়ে সে তার বন্ধু হাজ্জালকে বিষয়টি বলেন। তখন হাজ্জাল তাকে নবী(সঃ) এর কাছে গিয়ে বিষয়টি জানাতে বললেন। মাইজ নবী(সাঃ) এর কাছে গেলেন এবং নবী(সঃ) বিষয়টির ফয়সালা করলেন। পরে নবী(সাঃ) হাজ্জালকে বলেছিলেন, “ও হাজ্জাল! যদি তুমি তোমার কাপড় দিয়ে তাকে আড়াল করতে তবে সেটা তোমার জন্য আরও ভালো হতো।(অর্থাৎ মাইজকে নবী(সাঃ) এর কাছে না পাঠিয়ে তার দোষটা গোপন রাখলে উত্তম হতো।” (মুয়াত্তা মালিক, ৪১:৩)
আর আমরা কি করি? আমরা কারো স্কেন্ডাল এর খবর পেলে তা জানার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ি। এসব শেয়ার করে পৈচাশিক আনন্দ পাই। নেটে আপলোড করে টাকা কামাই। বন্ধুমহলে আড্ডার খোরাক জোগাই কে কি আকাম করছে তার ফিরিস্তি দিয়ে।
আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই এসব থেকে।
আর যারা নিজেরাই নিজেদের খারাপ কাজের পাবলিসিটি করে, তাদের ব্যাপারে নবী(সাঃ) বলেছেন, “আমার উম্মাতের সকলের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে, তবে তারা ব্যাতিত যারা নিজেদের অপরাধ জনসম্মুখে প্রকাশ করে। নিজদের অপরাধ প্রকাশ করার মানে হচ্ছে এই যে, কেউ রাতে কোন অপরাধ করে, অতঃপর যখন সকাল হয় সে নিজেই তা মানুষকে বলে বেড়ায় যে গতরাতে আমি এই এই কাজ করেছি। অথচ রাতে তাঁর প্রতিপালক উহাকে গোপন রেখেছেন এবং অবিরত তাঁর প্রতিপালক তা গোপন রাখছিলেন। এবং সে দিনের বেলায় কোনো গুনাহ এর কাজ করে, আর যখন রাত হয় সে তা মানুষকে বলে বেড়ায়, যদিও আল্লাহ তা গোপন রেখেছিলেন।” (মুসলিম, ২৯৯০)
এটা হারাম ও কবিরা গুনাহ। ভুল করে কোনো গুনাহ হয়ে গেলে তা অবশ্যাই গোপন রাখাতে হবে আর তওবা করতে হবে। অবশ্য যারা নিজেদের অনৈতিক কাজ ভিডিও করে, ছবি তোলে রাখে মানুষদের দেখাবার জন্য তারা হালাল-হারাম-তওবা এসবের তোয়াক্কা করে কিনা সন্দেহ। তোয়াক্কা করুক, না করুক তাদের ব্যাপার, কিন্তু তাদের এই নির্লজ্জতায় বারোটা বাজে সমাজের কারন অনেকেই এসব দেখে প্রভাবিত, প্রলোভিত হয়। আল-কুদ্দুস, মহাপবিত্র আল্লাহ আমাদের সবাইকে এ সকল নিকৃষ্ট কাজ থেকে হেফাজতে রাখুক।

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)