ইন্টারন্যাশনাল উইমেন

"তাহাররুশ জামাই":ধর্ষকের কোন ধর্ম নেই

"তাহাররুশ জামাই":ধর্ষকের কোন ধর্ম নেই

"তাহাররুশ জামাই" এর আদলে জার্মানির কোলন শহরে ভিড়ের মাঝে নারীদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে। এটা অ্যারাবিয়ান একটি খেলার নাম হলেও এটা আসলে ইংরেজি collective harrasment এর আরবি প্রতিশব্দ। জার্মানীর কোলনের ঘটনায় রিফিউজি আরবরা অনেক নারীকে বাঁচিয়েছেন, এমন তথ্যেরও খবর থাকলেও হাইলাইট হয়েছে তাই যা হাইলাইট করলে লাভ পশ্চিমা মিডিয়ার। 
অনেক পত্রিকার ভাষ্যমতে- বাংলাদেশের পহেলা বৈশাখে টি এস সি তে বস্ত্র হনন ও এই অ্যারাবিয়ান খেলার অনুকরণ। 
বেশীরভাগ সুশীলই অ্যারাবিয়ান কালচার আর ইসলামিক কালচারের মধ্যে গুলিয়ে ফেলেন। অথচ ইসলাম কোন ভূখণ্ডের বা কোন ভূখণ্ডের বিশেষ অধিবাসীদের পৈতৃক সম্পত্তি নয়।আরবে তো এক সময় কন্যা সন্তান জীবন্ত পুতে ফেলা হতো, মানুষ মদ খেত, হেন কোন খারাপ কাজ নেই যা তারা করতো না!
ইসলাম এসে সেইসব অজ্ঞতার শিরচ্ছেদ করেছে। তারপরেও কেন যে এক শ্রেণীর মানুষ আরব আর ইসলামকে এক করে ফেলে বুঝিনা। হয়তো তারা বুঝেও বুঝে না, শুনে ও শুনে না।
তাহাররুশ জামাই আরবের একটি খেলার নাম। যা মূলত গ্যাং হ্যারেস্মেন্ট বা গ্যাং রেইপেরই আরেক নাম। গ্যাং রেইপ দিয়ে সার্চ দিলে পৃথিবীর এমন কোন দেশ নেই যার নাম আসবে না। খোদ আমেরিকায় ২০% এর বেশী রেইপ দলীয়ভাবে সম্পন্ন হয়। 
তারমানে নারীর প্রতি সহিংসতা এক শ্রেণীর মানুষের জন্য স্থান কাল পাত্র ভেদে একই। কী আরব কী অনারব কী পশ্চিমা কী প্রাচ্য!
একটি ইংলিশ পত্রিকায় দেখলাম, এই জিনিষটাকে বংশগতভাবে ধারণ করার দিকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। যেহেতু এটা আরবদের খেলা সেহেতু রিফিউজিদের মধ্যেও এই প্রবণতা বংশগতভাবে থাকবেই বলে পত্রিকাটির দাবী। 
আমার ধারণা এবং RTquestion নামে একটি আন্তর্জাতিক পত্রিকার ও মতামত যে এটা পূর্ব পরিকল্পিত ঘটনা। গ্যাং রেইপের একটা আরব্য নাম আছে বিধায় এটাকে আরব রিফিউজিদের কালচার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার একটি ঘৃণ্য তথ্য সন্ত্রাসে রুপান্তর করাটা তুলনামূলক সহজ কাজ। 
২০১১ সালে মোবারক সরকারের পতনের সময় তাহরির স্কয়ারে ৪ দিনে ৪০ এর উপরে নারী লাঞ্ছিত হয়েছে এই ধরণের ঘটনায়। 
শুধু তাই নয়, লারা লোগান নামক একজন নারী সংবাদকর্মী ও ধ...ের শিকার হন সেখানে। 
এবং এতে লাভের খাতাটা কাদের ভারী হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। এতো জনাকীর্ণ যায়গায় কোন বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার টাকা খেয়ে নারীকে লাঞ্ছিত করাটা কী খুব অবাক হবার মতো বিষয়? নারীদের তাহরির স্কয়ার থেকে সরিয়ে দিলে লাভ কার ছিল, বুঝিয়ে বলতে হবে কী? 
অনেক লেখায়ই ধ...কারীদের জোব্বা পরিহিতা আরব বলে গালাগাল করা হয়েছে। যদিও আমি কোন ছবিতে এমনটি দেখিনি। আমার মনে হয় এগুলো খুব সূক্ষ্ম কোন ষড়যন্ত্র রিফিউজিদের বিরুদ্ধে। এক ধরণের আই ওয়াশ। জার্মান সরকার রিফিউজিদের জন্য হাত বারিয়েছে। অনেক ইউরোপের দেশ ও বারিয়েছে। এটা কোন পক্ষের সইছে না। এখন একমাত্র উপায় এদের খারাপ সাজানো। সন্দেহের তালিকায় ফেলা। আর এই অদৃশ্য শক্তির দাবার গুটিতে পরিণত হয়েছে নারী। 
একজন ধর্ষকের কোন ধর্ম থাকতে পারেনা। অন্তত আমাদের নবীর হাদিস তাই বলে যে কোন ব্যক্তিই ঈমানদার অবস্থায় ব্যভিচার করেনা, ব্যভিচার করার সময় তার ভেতর থেকে ঈমান বের হয়ে যায়। 
শুধু তাই নয়। প্রকৃত ইসলামের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পারি ব্যভিচারকে শিরক ও হ...র পরে বৃহত্তম পাপ হিসেবে বলা হয়েছে। সেই ইসলামকে যারা ধারণ করবে তাদের দ্বারা আর যাই হোক, তাহাররুশ জামাই খেলা তো সম্ভব নয়। 
ইংলিশ পত্রিকায় একজন পশ্চিমার মন্তব্য পড়লাম- যিনি লেখেছেন " উপরের একজন কমেন্ট করলো যে এটা ইরানে সম্ভব নয়। কিন্তু ইউরোপে এটা সম্ভব হয়েছে। তাহলে কী ইরান ইসলামিক কালচারের বাহিরে? 
তাহাররুশ জামাই খেলা হয়েছে ইতিহাসের খুব নাজুক সময়ে। মোবারকের পতন কিংবা রিফিউজিদের বরণ, দুটি অবস্থাই তৎকালীন মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য খুব সঙ্গিন ছিল। যারা এই ধরণের কাজ করেছে তারা আর যাই হোক, এই দুই শ্রেণীর কি স্টেক হোল্ডারদের মধ্যে কেউ ছিল না। হয়তো তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে অন্য কেউ সুবিধাভোগী হয়েছে। হয়তো পশ্চিমা তথ্য সন্ত্রাসের বলি হয়েছে নারীর সম্ভ্রম । গ্রুপ সে... আর পর্ণোগ্রাফির কালচার কাদের প্রোডাক্ট? নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন কোন সভ্যতার দান? নারীকে ঘিরে পুঁজিবাদ, নারীর শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের প্রকাশ্য প্রদর্শন এর জনক কোন সেই সুশীল সভ্য রাষ্ট্রগুলো? কোথায় গ্যাং রেইপ রেট সবচেয়ে বেশী? এইসব তথ্য যারা জানে তাদের চোখে বোধহয় এটা খুব পরিষ্কার হয়ে ধরা পড়বে যে এটা তথ্য সন্ত্রাসেরই আরেক অস্ত্র। যার পাটা আর পুতার মাঝে মরিচ বাঁটা হচ্ছে নারীর সম্ভ্রম।


আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)