সাহিত্য

চিঠি

চিঠি
120712103749 ১, বুকে হাত রেখে নিজের হ্ণদস্পন্দন আনমনেই অনুভব করল ইরা। নিজের স্পন্দনও এত অদ্ভুত লাগতে পারে মানুষের কাছে!? আচ্ছা, সবই তো চলছে, শ্বাস নিচ্ছি, খাচ্ছি, ঘুমাচ্ছি..., তবু কেন মনে হয় আর বেঁচে নেই আমি? কেন মনে হয় যে, জীবনের মুখোমুখি হওয়া আর সম্ভব না? কেন মনে হয় যে, পালিয়ে যাওয়াটাই সমাধান? নিজের দু’হাটুকে নিজের সাথে আরো জোরে চেপে ধরল ইরা। কান্নার চেয়ে স্বস্তিদায়ক আর কিছুই মনে হয়না এখন। কাঁদতে কাঁদতেই দেয়ালের সাথে ঠেস দিয়ে একসময় ঘুমিয়ে পড়ল ইরা। ২, সমস্ত কাজ সেরে ক্লান্তি ঝাড়তে একমগ কফি বানিয়ে বারান্দায় পাতা চেয়ারটায় বসল তাহিয়া। রাত তখন একটা। নিস্তব্ধতা একসময় ভয় ধরিয়ে দিত, এখন চিন্তার অবকাশ বলে মনে হয়। তাই কফি শেষ হয়ে গেলেও চেয়ারে বসে পা দোলাতে দোলাতে রাজ্যের চিন্তা-ভাবনার ঝাপি খুলে বসল তাহিয়া। নতুন কিছু কাজ শুরু হবার পর থেকে খাটাখাটুনি বেড়েছে ভালই। হঠাৎ রাত্রির নিস্তব্ধতাকে খান খান করে দিয়ে চেচিয়ে উঠল মোবাইলটা। তাহিয়া চমকে উঠে দ্রুত পায়ে এগিয়ে গিয়ে সাইলেন্স বাটনে চাপ দিল। আনিসের কাঁচা ঘুম ভেঙ্গে গেলে কালকের অফিস ডে’টা খারাপ যাবে যে! খানিকটা ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে দেখল, নাহ, ভাঙ্গেনি তাঁর মধুর ঘুম। চার বছরের মুসাও খানিকটা নড়াচড়া করে স্থির হল। তাহিয়া স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। যাক বাবা, এ যাত্রায় রক্ষা। মোবাইলটা হাতের মুঠোয় তখনো কেপে চলেছে। তাহিয়া বারান্দায় এসে তাড়াতাড়ি ফোন রিসিভ করল। এত রাতে ছোটখালার ফোন পেয়ে বেশ অবাক। -আসসালামু আলাইকুম খালামনি, কেমন আছেন? ওপাশ থেকে কোনো জবাব জবাব এলোনা। উপরন্তু ফোপানোর আওয়াজ শুনে বেশ ভালরকম ভড়কে গেল তাহিয়া। কারো কিছু হয়নি তো! -হ্যালো ছোটখালা! শুনছো? কি হয়েছে খালামনি?? -তাহিয়া, তুই একবার ঢাকা আসতে পারবি? -কেন? কি হয়েছে?? সব ঠিক আছে তো? আমাকে সব খুলে বলো! -কিভাবে বলবো বুঝতে পারছিনারে... তোর কথা মনে হলো..., ফোন দিলাম... মিনু চুপ করে রইলেন। একটা শ্বাস নিয়ে নিচু কন্ঠে আবার বলতে শুরু করলেন। ইরা মাসখানেক আগে সুইসাইডের চেষ্টা করেছিল। পারেনি। হসপিটালে দুদিন থাকার পর ফিরে এসেছে। সবাইকে বলেছি ছোট-খাট এ্যাকসিডেন্ট। কিন্তু তারপর থেকে মেয়েটা কারো সাথে মেশেনা, কথা বলেনা, খায়না, ঘুমায় না...। আমরা কি করবো বুঝতে পারছিনা। এসব কথা কি কাউকে বলা যায়রে?! নিজেদেরকে কেমন যেন ব্যর্থ মনে হয়...। হয়ত আমাদেরই কোন কমতি ছিল... হয়ত আমাদেরই কোন দোষে... মিনু কেঁদে ফেললেন আবারো। তাহিয়ার মাথায় ছোট-খাট বজ্রপাত হল। কথার খেই হারিয়ে ফেলল সে। ধাম ধাম করে হ্ণদপিন্ডটা বাড়ি খেতে লাগল সেই দশটা বছর আগের সেই দিনটার মত। -কেন খালামনি, ইরা কেন করল এটা? ঠান্ডা গলায় প্রশ্ন করল তাহিয়া। -জানিনা। আমরা কিচ্ছু জানিনা। তোকে তো পছন্দ করে অন্যদের তুলনায়। তুই একটু আয়। ব্যস্ত থাকলেও আয়... অনেকক্ষণ চুপ করে রইল তাহিয়া। তারপর বলল, আসবো। কিন্তু এখন না। সময় হলেই আসবো। তুমি আল্লাহর উপর ভরসা রাখো। ভেঙ্গে পড়োনা। এখন ঘুমিয়ে পড়ো, অনেক রাত হয়েছে...। -আচ্ছা... মিনু ফোন কেটে দিল। তাহিয়ার গন্ড বেয়ে কয়েকফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। কষ্টের নয়, কৃতজ্ঞতার। যে কৃতজ্ঞতার অশ্রু গত ক’বছর ধরে কেবল ঝরেই চলেছে। কফির কাপ হাতে রুম পেরুনোর সময় একটু থেমে তাকাল ঘুমন্ত আনিসের দিকে। ক্লান্ত চেহারাটায় কি আশ্চর্য শিশুসুলভ সারল্য! বন্ধ চোখের পাতা জোড়ায় কি অদ্ভুত পবিত্র মায়া! তাহিয়া বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারেনা। ঝাপসা হয়ে আসে সব। তাহিয়ার এমন বাড়াবাড়িরকম ছেলেমানুষি আবেগে আনিস অপ্রভিত হয়ে পড়ে প্রায়ই। বলেও ফেলে কখনো কখনো, “তোমাদের মেয়েদের ভেতরে যে এত ইমোশন কিভাবে থাকে! বুঝিনা...।” তাহিয়া কিছু বলেনা। কেবলই মুগ্ধ হয়। আল্লাহ্‌ তার মত এতটা অকৃতজ্ঞ একজনকে কেন এতটা ভালবাসবেন?! কেন এত আশ্চর্যরকম মমতার বন্ধনে বেধে দেবেন জ্বলে-পুড়ে যাওয়া হ্ণদয়টাকে?! তাহিয়া প্রাণভরে শ্বাস নেয়। আরো এককাপ কফি নিয়ে স্টাডি টেবিলটায় বসে বড়সড় একটা চিঠি লিখবে বলে। ৩, ইরা চোখ মেলে ঘড়ির দিকে তাকালো। ১১টার কিছু বেশি বাজে। অনেক আগেই ঘুম ভাংলেও চুপচাপ গুটিসুটি মেরে শুয়ে থাকে রোজই। উঠে বসে টেবিলে রাখা গ্লাসের পানি দিয়ে জানালা খুলে কুলি করল। তারপর আরো আধঘন্টা স্থির হয়ে বসে রইল। তারপর খেয়াল হল টেবিলের ওপর একটা ক্রীম রঙের খাম পড়ে আছে। কে কখন রেখে গেছে টেরই পায়নি! খামের উপরের লেখাগুলোয় চোখ বুলালো ইরা। তাহিয়াপু পাঠিয়েছে! তাও আবার চিঠি! এককোণে লেখা, “গোপনীয়। প্রাপক ছাড়া অন্য কেউ খোলা নিষেধ।” ইরা তাচ্ছিল্যের হাসি হাসল। প্রাপকের জায়গায় ইরার নাম লেখা রয়েছে। কারো সাথে গোপনীয় কিছু একটার সম্পর্ক আর রয়েছে বলে মনে হয়না ইরার। তাছাড়া তাহিয়াপুর সাথে তো দেখা নেই বহুদিন। জন্মদিন বা বিশেষ কোনো উপলক্ষ্যও মনে পড়েনা...। সাত-পাঁচ ভেবে খুলে ফেলল পেট মোটা খামটা। বেশ দামী কাগজে লেখা বিশাল এক চিঠি। তার উপরে পুরোনো হলদে একটা চিরকুঠ। বিস্ময় নিয়েই হলদে কাগজটা খুলল ইরা। দুটো লাইন নিয়ে একটা বাক্য লেখা রয়েছে তাতে, “যারা কুকুর-বিড়ালের মত বাঁচে, তারা কুকুর-বিড়ালের মতই মরে।” ইরা কাগজটা উল্টে-পালটে দেখল। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারলোনা। শুধু এককোণে সালটা লেখা রয়েছে। যেটার হিসেবে কাগজটা প্রায় বছর দশেক আগের। এবার অন্য চিঠিটা খুলল ইরা। “আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছিস ইরামনি? চিঠি দেখে অবাক হচ্ছিস? তোর সাথে গল্প করতে আসতে পারছিনা। কিন্তু তোকে যে অন্‌নেক অনেক কিছু বলার ছিল...! ছোট্ট চিরকুঠটা নিশ্চয়ই পড়েছিস! হুম, সেটা আর এক হতাশাগ্রস্থ অষ্টাদশীর গল্প বলতেই এই বিশালায়তন চিঠির অবতারণা। আমিই লিখেছিলাম সে চিরকুঠটা। ওটা ছিল আমার সুইসাইড নোট।  তুই হয়তো অবাক হচ্ছিস আমার মত পজেটিভ থিংকার এবং আল্লাহতে আস্থা রাখা একজন মানুষও কিভাবে এমন একটা কাজ করার কথা ভাবতে পারে! দশবছর আগের আমি আর আজকের আমিতে যে অনেক তফাৎ! আজকের আমিই আঠারো বছর বয়েসে ছিলাম পৃথিবীর সবচেয়ে হতাশ মানুষদের একজন। আমি নিজেকে বুঝতে ব্যর্থ ছিলাম। আমি ভুলে গিয়েছিলাম এ বয়সটা বড় হবার। স্বপ্ন দেখার, সে স্বপ্নকে বাস্তবায়নের পথে দৃঢ় পদে পা ফেলবার। ঘরের কোণে নিজেকে গুটিয়ে নেবার নয়। আমি ভুলে গিয়েছিলাম আমি শুধু একজন মানুষ নই।  আমি আল্লাহর সেরা সৃষ্টি, আশরাফুল মাখলুকাত। একজন মেয়ে। একটা ভবিষ্যত জাতির স্রষ্টা। আমি আশাহত ছিলাম। নিজের ব্যর্থতাকে মেনে নিয়েছিলাম অকপটে। অথচ এতটা অথর্ব আমি ছিলাম না। ছোট থেকেই যথেষ্ট দৃঢ় মানসিকতার, আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন ও রক্ষনশীল মনোভাবের ছিলাম। এরপরও একজন ব্যক্তি বিশেষের প্রতি দূর্বলতা ছিল। প্রচন্ড ইগোর কারণে যে বিষয়ে কখনো কারো সাথে আলোচনা করতে পারিনি। মানুষ হিসেবে আমি অতি মাত্রায় কল্পনাপ্রবণ। কৈশোরে তৈরী হওয়া ভাললাগার ডালপালা যাকে ঘিরে বিস্তৃত হতে হতে মহীরুহে পরিণত হল, তার সম্ভবত এ সম্পর্কে কোনো ধারণাই ছিলোনা। তাই তাঁর হঠাৎ সরে যাওয়াকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহন করতে পারিনি। তাঁর প্রস্থানকে আমি নিজের যোগ্যতার ঘাটতি বলে ধরে নিয়েছলাম এবং নিজের ব্যাপারে ছিলাম প্রচন্ড হতাশ। আমি সমাজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে ফেলেছিলাম পুরোপুরি। একসময় আমার দায়িত্বহীনতা, নির্বিকার চাহুনি অন্যদের বিরক্তির কারণ হয়ে ওঠে। শান দেওয়া ছুরিও ফেলে রাখলে যেমন মরচে পড়ে যায়, ব্যক্তি আমার সমগ্র সত্তায় পড়েছিল বিষন্নতা নামক ব্যাধির আবরণ। আমি নিজের হাতেই নিজের পৃথিবীটাকে করে নিয়েছিলাম ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর। অন্যদের অনুভূতি ছিল আমার কাছে মূল্যহীন। স্বেচ্ছা নির্বাসন কঠিন একটা জিনিস। একাকিত্ব হতাশাকে আরো বহু বহু গুণ বাড়ায়। নিজের সীমাবদ্ধতা, ক্ষুদ্রতা, দৈন্যতা আরো প্রকট হয়ে সামনে আসে। সে মুহূর্তে চতুর্দিক থেকে রুদ্ধ হয়ে পড়া আমার কাছে আত্মহ...কে মনে হয়েছিল মুক্তির পথ। সবকিছু থেকে রক্ষা পাবার শক্তিশালী বিকল্প। আমার কাপুরুষতা আমাকে করে তুলেছিল আরো বেশি নিষ্ঠুর। যে তার সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে ব্যর্থ হলে আত্মহ...কে বিকল্প পথ ভাবে, সেতো কাপুরুষই, তাইনা!   কিন্তু জানিস, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমি চেয়েছিলাম আমার হাত ধরে কেউ বলুক,  “তাহিয়া, তোর প্রয়োজন এখনো শেষ হয়নি।” যখন আমি নিজেকে পৃথিবির সবচেয়ে হতাশ মানুষটা ভাবতাম, তখনও আমি চাইতাম কেউ আমাকে অনুভব করুক। কেউ অন্তত এতটুকু আশ্বাস দিক যে, আমি পারবো। আমাকে পারতে হবে। একবার, কেউ একবার আমাকে হতাশার অতল গহ্বর থেকে টেনে তুলুক।   কিন্তু আমার পৃথিবীতে আমি ছিলাম একা। বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত। আমি আত্মহ...য় ব্যর্থ হই, এবং আমার হতাশা আরো বহুগুণ প্রকট হয়। সবচেয়ে বড় কথা, আমি নিজেকে আর সম্মান করতে পারছিলাম না। এবং এভাবেই একটা বছর আমার জীবন থেকে হারিয়ে যায়।  না, কোনো মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া ঘটনা আমার জীবনে ঘটেনি। একসময় আমি বাস্তবতা মেনে নিয়ে চলতে শিখে যাই। আমি বুঝতে পারি আমাকে বেঁচে থাকতে হবে আর পালন করতে হবে আমার উপর অর্পিত সমস্ত দায়িত্ব। দীর্ঘদিন পর যখন মানসিক শক্তি অর্জন করে বাইরের জগতে পা ফেলার সিদ্ধান্ত নিলাম, সর্বপ্রথম মাথা ঝুকিয়ে দিলাম সিজদায়। আমি উপলব্ধি করেছিলাম আমার অক্ষমতা, অকৃতজ্ঞতা। এই ভেবে প্রচন্ড সংকুচিত ছিলাম, আমি দিনের পর দিন দিন, রাতের পর পর রাত আল্লাহ্‌র অবাধ্যতায় কাটিয়ে দিয়েছি। অথচ আল্লাহ্‌ আমাকে ক্ষণিকের জন্যও ভুলে যাননি। আমার কৃতকর্মের শাস্তি তাৎক্ষণিক দিয়ে দেননি। আমার মনে হচ্ছিল আমার উপর এখনও যদি কারো এতটুকু আস্থা বাকী থাকে, তবে তিনি হলেন আল্লাহ্‌। যিনি আমাকে এখনো তার রহমতের গন্ডি থেকে ছুড়ে ফেলে দেননি। আমি লজ্জিত ছিলাম। তাই সে অনুতপ্ত পোড় খাওয়া হ্ণদয়ের মজবুতি ছিল আগের অনেক বেশি। আমি এবার যখন নতুন করে পথচলা শুরু করি, আল্লাহ্‌ আশাতীত রহমতের বারিতে সিক্ত করে দিলেন আমাকে। আমি প্রতিটি পদক্ষেপে আল্লাহ্‌র সাহায্য টের পেতাম। আর এটাই আমাকে আরো বেশি আল্লাহ্‌র প্রতি ঝুকিয়ে দিয়েছিল। আমি বিশ্বাস করেছিলাম আল্লাহ্‌কে, আর বিশ্বাস করতাম যে, তিনি বিশ্বাস করেন আমাকে। এ আত্মিক সম্পর্কের ভীত আমাকে সাহস যোগায় যখন আমি কোন নতুন সিদ্ধান্ত নিই। আমি নির্ভর করি তাঁর উপর এই ভেবে যে, আমার যেকোনো হক্‌ সিদ্ধান্তে তিনি আমাকে সাহায করবেন, যেভাবে করেছেন আগেও। আর কাঠিন্য তো জীবনেরই অংশ! আমি বারংবার আল্লাহ্‌ সালাতে, তিলাওয়াতে, যিকিরে যে আশ্বাস দিচ্ছি, তা কি তিনি একবারও যাচাই করে দেখবেন না!? তার তিনি যাচাই করতে গেলেই যদি আমি তার রহমত থেকে নিরাশ হয়ে পড়ি, তাহলে আমার কথায় আর কাজে কি মিল থাকলো? ইরা, আমি জানি তুই অনেক ম্যাচিউর আর খুবই লক্ষী একটা মেয়ে। তুই নিশ্চয়ই বুঝেছিস আমি কেন এত কিছু বললাম? হ্যা, ছোটখালার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ইরা, তুই যেটা করে ফেলেছিস তার জন্যে আমি তোকে কোনো দোষ দিচ্ছিনা। হয়ত এর পেছনে অনেক বড় কোনো কারণ ছিল। হয়ত তুইও অনেক বিকল্প খুঁজেছিস প্রাণপনে। কিন্তু তবুও, পালিয়ে যাওয়া কখনো কোনো সমাধান নয়...। যদি তোর কোনো ভুল থেকে থাকে যার কারণে আত্মপীড়ায় ভুগেছিস তুই, তাহলে বলি, কখনো কখনো মাথা নিচু করে ভুল স্বীকার করে নিতে পারাটাই অনেক বড় বীরত্ব। কখনো কখনো ছোট হওয়াটাই বড়ত্ব। ভুল করা মানুষেরই সাজে। আর ভুল থেকেই আমরা আমাদের জীবনের সেরা আধ্যায়গুলো শিক্ষা পাই। আর যদি তোর ভুল না হয়, আল্লাহর উপর আস্থা রাখ। বিশ্বাস কর, তাঁর চেয়ে বেশি তোকে আর কেউ ভালবাসে না!     আজকে যখন মুসার দিকে তাকাই, আমার বুক কেঁপে ওঠে। এই ছোট্ট একরত্তি মানুষটার জন্যে আমি আরো হাজার বছর বাঁচতে চাই। আর আনিসের মত ভুলোমনা একজন মানুষ, যাকে দেখলে আমি এই ভেবে অবাক হয়ে যাই যে, আমি না থাকলে তার একটা দিন কিভাবে চলবে, তার জন্যেও আমি আরো অনেক দিন হায়াত প্রার্থনা করি...। একসময় খুব কাঁদতাম। কারণ আমি প্রচন্ড হতাশ ছিলাম। আর এখনো কাঁদি, আমি পথ খুঁজে পেয়েছি বলে...। ইরা, বিকশিত হবার আগে শেষ হয়ে যাস না।   তাহিয়া”

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
লেখকের অন্যান্য ব্লগ সবগুলো দেখুন