উইমেন (সামাজিক,মানসিক,সুবিধা বঞ্চিত নারী)

অপদার্থ কোথাকার! একটা চাকরিও নিতে পারিস না!”

অপদার্থ কোথাকার! একটা চাকরিও নিতে পারিস না!”
আজকাল দেখা যাচ্ছে খোদ মা-বাবারাও তাদের মেয়েদেরকে চাকরি করতে চাপ দিচ্ছে। কারণ কি? দারিদ্রতা? পরিবারে অর্থের প্রয়োজন? না, সেটা নয়, বরং লোক দেখানো অহংকার! “পাশের বাড়ির মেয়েটি মাস না যেতেই এত টাকা কামাই করে, কোন আত্মীয়ের মেয়ে কতো বড় কর্মকর্তা-ইত্যাদি… অথচ আমাদের মেয়েদেরকে নিয়ে তো আমরা সেরকম কিছু গর্ব করতে পারছি না”। এ ক্ষেত্রে শুরুতেই বলবো- সন্তানরা যেমন আল্লাহ’র পক্ষ থেকে নিয়ামত, তেমনি মা-বাবার জন্য একটা পরীক্ষার বস্তু। কিন্তু অনেক অবিভাবকদের এ ক্ষেত্রে ব্যর্থ বলেই মনে হয়। সন্তানদের নিয়ে এই পরিমাণে সুনাম করতে থাকেন যে, সেটা অহংকারের পর্যায়েই পড়ে। আর আজকাল “আমার ছেলে ভালো বা আমার মেয়ে ভালো” এসব কথা মা-বাবারা মাথা উঁচু করে বলেন না, বরং তাদের মানসিকতাও হয়ে পড়েছে পুঁজিতান্ত্রিক, বস্তুবাদী। উনারা সমাজে সম্মান অর্জন বলতে বুঝেন- আমার সন্তান কত বেশি টাকা উপার্জন করে, আর কতো বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে!   যাই হোক, এবার নির্দিষ্ট করে যদি পরিবারের মেয়েদের নিয়ে বলি তাহলে বলবো- অবসর সময়কে কাজে লাগানোর জন্য অবশ্যই অনেক কিছু করা যায়, তবে মেয়েসহ তার পরিবারের বুঝা উচিত, পাশের বাড়ির মেয়ের সাথে হিংসা করে, প্রতিযোগিতা লাগিয়ে নিছক গর্ব করার জন্য যেমন চাকরি নেয়ার মানসিকতা ঠিক নয়; তেমনি ফেয়ার অ্যান্ড লাভলীর স্লোগানের মতো ‘বিয়ের আগেই প্রতিষ্ঠিত হতে হবে’-এমনও কোনো শর্ত নেই। ইচ্ছা থাকলে সুযোগ পেলে যেকোনো সময় প্রতিষ্ঠিত হওয়া যাবে। তবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার উদ্দেশ্য যাতে শুধু টাকা উপার্জন না হয়। কারণ, আসল সফলতা- কোন খাতে আমরা টাকা খরচ করছি সেটাই। এদিকে আর্থিক স্বাধীনতার কারণে একটা মেয়ে যেসব সুযোগ পেতে পারে- সেটা না মেয়েরা বুঝতে পারছে আর না তাদের পরিবার তাদেরকে বুঝাচ্ছে। আমি যদি প্রশ্ন করি- আমাদের সমাজে কয়টা ভালো মহিলা লেখক রয়েছে? কয়টা শক্তিশালী নারী সংগঠন রয়েছে? যেখানে বিদ্যমান অধিকাংশই সেক্যুলার? নারীদের যেখানে আর্থিক চিন্তা না করে সমূহ সুযোগ রয়েছে বিভিন্ন বিষয়ে অধ্যয়ন করার, বিদ্বান হওয়ার- সেখানে কয়টা নারী স্কলার হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে? আবার দেখু...- বিশ্বের অধিকাংশ আলেম পুরুষ, সেখানে কয়টা আলেমা তৈরি হতে পেরেছে? যেখানে নারীদের বিভিন্ন মাসলা-মাসায়েল জানতে পুরুষের লেখা বই পড়া লাগে! সুতরাং মেয়ে এবং তাদের পরিবার এভাবে চিন্তা করছে কি? এক বান্ধবীর দেয়া মেসেজের ভাবার্থ লিখে শেষ করছি- “সংসারের অধিকাংশ কাজ করি, বড় বোন আরামে বসে থাকে, অসুস্থ মায়ের সেবা করতে হয়- অথচ এসবের পৃথিবীতে কোনো মূল্যায়ন নেই! এদিকে মা-বাবা বলে- পড়াশোনা করে কি করলি? অপদার্থ কোথাকার! একটা চাকরিও নিতে পারিস না!”

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ
লেখকের অন্যান্য ব্লগ সবগুলো দেখুন